গরুর দুধে কী পড়বে লম্পি ভাইরাসের কোনো প্রভাব? জেনে নিন কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

লম্পি ভাইরাস আসলে কী, কিভাবে পশুর শরীরে ক্ষতি করে? আক্রমণে কী করা উচিত জানুন বিস্তারিত

লম্পি ভাইরাসের (Lampi virus) সংক্রমণ গরুর জীবনের ক্ষেত্রে খুব খারাপ। এই ভাইরাস ত্বকে (Lampi Skin Virus) লক্ষণীয় হয়। এছাড়া এটির প্রভাব গরুর দুধ, গোবর ও গোমূত্রে দেখা যায়। গবেষক অরবিন্দু কুমার ভর্মা এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, লম্পি ভাইরাসের প্রভাব গরুর দুধ, গরুর মূত্র ও গরুর গোবরে বেশি দেখা যায়।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রভাব বেড়ে চলেছে। তার মধ্যে উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। প্রত্যক্ষ ভাবে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে গরুর দুধ ও দুধ উৎপাদনে। এখনো পযন্ত এই ভাইরাসের প্রকোপ উত্তরপ্রদেশের ২৫ টি জেলায় পড়েছে। যার মধ্যে সাহারানপুর, মুজাফফরনগর, আলিগড় এই জায়গা গুলিতে সক্রমণ বেশি। প্রায় রাজ্য জুড়ে ১৫ লক্ষেরও বেশি গবাদি পশু আক্রান্ত।

Lampi skin virus

এই ভাইরাসের কবলে গরুর দুধ কী করবেন?

কোনো গবাদি পশু এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে, বিশেষজ্ঞরা ভাইরাস নির্মূল করার পরামর্শ দিয়েছে। যদি এই গরুর দুধ মানুষে খেতে চান তাহলে বেশ খানিকক্ষণ ফুটিয়ে নিতে হবে বেশি তাপমাত্রায়। যদি ভাইরাস থেকে থাকে তাহলে ওই তাপমাত্রায় তারা নষ্ট হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে দুধ সেবন করলে কোনো ক্ষতি হবে না। তবে এই দুধ গরুর বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এক্ষেত্রে গরুর বাচ্ছা যাতে গরুর বাঁটে মুখ দিয়ে দুধ খেতে না পারে সেজন্য বাচ্চাকে আলাদা রাখতে হবে।

এই ভাইরাস গরুর জরায়ুতেও আক্রমন করে :-

লম্পি ভাইরাস আক্রমণে গবাদি পশু মারা না গেলেও এটি পশুর জীবনে খুব ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। এটি সরাসরি দুধ উৎপাদন ও জরায়ুকে আক্রমণ করে। যার ফলে গরুর দুধ উৎপাদন ক্ষমতা ৫০% কমিয়ে দেয়। এছাড়া জরায়ুতে আক্রমণ করলে পশু গর্ভধারনের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এই রোগ আক্রমণে মাত্র ১-২% পশু গরু মারা যায়।

সংক্রমন গরুর লালা ও রক্ত মানুষকে ক্ষতি করে :-

সাধারণত এই ভাইরাস গরুর গোবর ও গোমূত্রে লক্ষ্য করা যায় না। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গোবর ও গোমূত্র থেকে কোনো প্রভাব নাই। যারা এগুলির উপর কাজ করেন তাঁদের কোনো ক্ষতিকর প্রভাব নাই। তবে গরুর লালা ও রক্ত এই ভাইরাসের বাহক। তাই সংক্রমিত কোনো গরুর লালা ও রক্ত মানুষের শরীরে লাগে সেগুলি যেন অন্য পশুর শরীরে বিস্তার না করে।

Lampi virus

এই রোগের নিরাময় :-

লম্পি ভাইরাস মূলত পশুর লালা ও মশা-মাছির কামড়ে এক পশু থেকে অন্য পশুতে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই রোগ নিরাময়েরও উপায় বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই রোগ নিরাময়ের উপায় হলো, নিম বা হলুদ এবং ঘি পেস্ট দিয়ে মাখাতে থাকলে ৭-১০ দিনের মধ্যে নিরাময় হবে। তবে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, এই জন্য ‘লম্পি ভাইরাস টিকা’ (Lampi Virus Vaccine) নিয়ে নেওয়া। যা সঠিক পরামর্শ ও দ্রুত নিরাময় সম্ভব হবে।

এর বিস্তার কমানোর উপায় :-

লম্পি ভাইরাস যেহেতু মশা-মাছি দ্বারাও বিস্তার করতে করতে পারে তাই এর প্রকোপ তাড়াতাড়ি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তাই এর বিস্তার কমানোর ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংক্রমণ পশুকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে হবে, সম্ভব হলে মশারি মধ্যে রাখলে ভালো হয়। এই রোগ দ্রুত বৃদ্ধি পেলেও পশু মারা যায় না।