২২ বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফল তাজমহল, জানুন তাজমহলের সাথে যুক্ত এই ১০ টি আশ্চর্যজনক তথ্য
পৃথিবীর বিস্ময়কর স্থাপত্যগুলির তালিকায় রয়েছে তাজমহল(Tajmahal)। এটি বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য (World 8 Wonders)। যেটি আগ্রায় অবস্থিত একটি রাজকীয় সমাধিস্থল। বহু মানুষ বছরের বিভিন্ন সময় দেশের এই স্থানে ভিড় জমায়। শুধু দেশ থেকে নয় বিদেশ থেকে অনেক মানুষ এই স্থানে ঘুরতে আসেন। তবে চোখ ধাঁধানো এত সুন্দর স্থাপত্যটি একদিনে গড়ে ওঠেনি। এটি তৈরি করতে দীর্ঘদিন সময় লেগেছে। তবে জানেন কি কত বছর ধরে এটি তৈরি হয়েছিল? আগামী ২৭শে সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস(World Tourism Day)। আর এই উপলক্ষে আজকের প্রতিবেদনে তাজমহল তৈরির সেই ইতিহাস আপনাদের জানাবো।
মুঘল সম্রাট শাহজাহান (Mughal Emperor Shah Jahan) শুধু একজন শাসক ছিলেন তাই নয়, পাশাপাশি তিনি প্রেমিকও ছিলেন। স্ত্রী মমতাজকে(Mumtaz) তিনি খুবই ভালোবাসতেন। আর তাই স্ত্রীয়ের মৃত্যুর পর তিনি মমতাজ মহল বা তাজমহলের নির্মাণ শুরু করেন। স্ত্রীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে এটি তৈরি করা হয়েছে, যে মহলে কবরে শুয়ে রয়েছেন ঘুমন্ত মমতাজ। সমাধিটি তাজমহলের কেন্দ্রীয় গম্বুজের ঠিক নীচে রয়েছে। সম্রাটের মৃত্যুর পর, তাঁকেও স্ত্রীর পাশে কবর দেওয়া হয়। তাজমহলের সৌন্দর্য পর্যটকের মন কাড়ে ও মুগ্ধ করে।
বহু স্থাপত্যরীতির সংমিশ্রনে তৈরি হয়েছে তাজমহল। মমতাজ মহলে পারস্য,অটোমান, ভারতীয় এবং ইসলামিক স্থাপত্যশৈলীর (Architectural style) ছোঁয়া রয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে এর নির্মাণ শুরু হয়েছিল এবং মহল নির্মাণের কাজ শেষ হয় ১৬৫৩ সালে। দীর্ঘ ২২ বছর সময় লেগেছিল বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্যটি নির্মাণ করতে।
তাজমহলটি নির্মাণ করতে সারা দেশ সহ এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন সামিগ্ৰী আনা হয়েছিল।
শ্রীলঙ্কা, চীন সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যগুলি থেকে বহুমূল্যবান রত্ন আনা হয়েছিল। শ্রীলঙ্কা থেকে এসেছিল পান্না, তিব্বত থেকে এসেছিল নীল রত্ন এবং চীন থেকে আনা হয়েছিল স্ফটিক। অন্যদিকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য যেমন রাজস্থান থেকে এসেছিল তাজমহলে ব্যাবহৃত সাদা মার্বেল (White Marbel)। এছাড়া পাঞ্জাব থেকে আনা হয়েছিল জ্যাসপার। এটি নির্মাণ কার্যে প্রায় ২২ হাজার শ্রমিক অংশ নিয়েছিল। শুধু শ্রমিক নয়, নির্মাণ কাজে সহায়তা করার জন্য প্রায় ১,০০০টি হাতি (Elephant) আনা হয়েছিল। সমগ্র স্থাপত্যটি নির্মাণ করতে সে সময়ের হিসাবে ৩.২ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ করা এই সমাধি আজও ভালোবাসার নিদর্শন(Signs Of Love) রূপে দাঁড়িয়ে রয়েছে।