পরের বছর ভারতে চালু হবে এমন ট্রেন, যা শুধুমাত্র চলে জার্মানিতেই
ভারতে পুরো দমে চালু হতে চলেছে হাইড্রোজেন ট্রেন
ভারতীয় রেলওয়ে (Indian railways) ভারতে (India) যাতায়াতের একটি প্রধান মাধ্যম। ট্রেনের কারণেই ভারত খুব দ্রুত উন্নতি করেছে। ট্রেনের কারণেই অনেক মানুষ একসঙ্গে অনেক দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। ট্রেনে করে ভ্রমণ করা সুবিধাজনক এবং আরামদায়ক হয়। বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা রেল লাইনের উপর দিয়ে চলা ট্রেন ভারত ও ভারতের মানুষদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ভারতীয় রেল (Indian railways)বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেলওয়ে নেটওয়ার্ক। ভারতে ১৯ শতকে প্রথম ট্রেনটি চালু হয়েছিল। অর্থাৎ ব্রিটিশ আমলের সময় থেকে। আজ ১৮৬ তম বর্ষ পূর্ণ হলো ভারতীয় রেলের। ভারতীয় রেলের এই নেটওয়ার্কটি প্রায় ১,১৫,০০০ কিমি এরিয়া জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে এবং এই রেলওয়ে নেটওয়ার্কে প্রায় ৭৩৪৯ টি সেটেশন রয়েছে। এই স্টেশন গুলি থেকে প্রায় ২০০০০ এর বেশি যাত্রীবাহী ট্রেন ও ৭০০০ এর বেশি পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করে।
IRCTC বা ভারতীয় রেলওয়ে যাত্রীদের সুবিধার জন্য অনেক নতুন নিয়ম ও ব্যবস্থা লঞ্চ করতে থাকে। তবে আমরা অনেকেই এই সব নতুন নিয়ম বা ব্যবস্থার সম্পর্কে জানিনা। যেমন আপনি কি জানেন যে ভারতের রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ভারতীয় রেলওয়ের জন্য কোন বড় সংবাদের কথা জানিয়েছেন? কি জানেন না তো? তবে আসুন এই আর্টিকেলের মধ্যে জেনেনিন রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini vaishnaw) ভারতীয় রেলওয়ের জন্য কোন বড় সংবাদের কথা জানিয়েছেন।
রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini vaishnaw) জানিয়ে দিয়েছে যে এখন হাইড্রেনজেন দ্বারা চালিত ট্রেন (Hydrogen train) তৈরি হচ্ছে খুব শীঘ্রই অর্থাৎ এই ট্রেন তৈরি হয়ে যাবে ২০২৩ সালের মধ্যে। ওড়িশার ভুবনেশ্বরের SOA বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষ্ণব জানিয়েছেন যে ভারতীয় রেল গতিশক্তি টার্মিনাল নীতির অধীনে রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দূরবর্তী অঞ্চলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এই কাজ দ্রুতগতিতে করা হচ্ছে। রেল মন্ত্রী বলেছেন যে ‘স্বদেশী টেকনোলজির মাধ্যমে ভারতে হাইস্পিডবন্দে ভারত ট্রেনগুলির নির্মাণ করা হয়েছে ও এই ট্রেনগুলি গত ২ বছর ধরে কোনো বড় মাত্রায় খারাপ না হয়েই দিব্যি চলাচল করছে। এছাড়া আইসিএফ-এ এরকম আরো অনেক বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানান রেল মন্ত্রী। আর সঙ্গে তিনি এটিও জানান যে খুব শীঘ্রই এই ট্রেন গুলি চালু করা হবে এবং এই ট্রেন গুলি রেলওয়ে সেফটি কমিশনার থেকে গ্রিন সিগনালও প্রাপ্ত করেছে।
এখনো পর্যন্ত শুধু মাত্র জার্মানি এই হাইড্রোজেন দ্বারা চালিত ট্রেনের নির্মাণ করেছিল। এই বছর জার্মানি হাইড্রোজেন দ্বারা চালিত প্যাসেঞ্জার ট্রেনের (Hydrogen train) প্রথম ব্যাচ চালু করেছে। ফ্রেঞ্চ কোম্পানি আলস্টম ৯২মিলিয়ন ডলারের খরচে ১৪ টি ট্রেন নির্মাণ করেছে। এছাড়া এর আগে ট্রেন ও ট্র্যাক ম্যানেজমেন্টের বিষয় রেল মন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে ‘আমাদের ফোকাস শুধুমাত্র ট্রেন তৈরির দিকে নেই। আমরা ট্র্যাক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের দিকেও নজর দিচ্ছি যাতে সেমি স্পিড ট্রেন চালানো যেতে পারে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ট্রায়াল রানে আমরা দেখিয়েছিলসম যে ১৮০কিমি/ঘন্টা বেগে চলাচল করা ট্রেনে জল ভর্তি গ্লাস রাখা হয়েছিল কিন্তু গ্লাসটা ট্রেন চলার সময় একটুও নড়েনি ও গ্লাস থেকে জন বাইরে পর্যন্ত পড়েনি। এই দৃশ্য দেখে সবাই অবাক হয়ে গেছিল।
বৈষ্ণব আরও জানিয়েছেন যে বন্দে ভারত-এর সফল ট্রায়াল রানের পর বাকি ৭২টি ট্রেনের উৎপাদন শুরু হবে।তিনি জানিয়েছেন যে “তৃতীয় বন্দে ভারত ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার।” এটি ৫২ সেকেন্ডে ০-১০০ kmph গতিবেগ ধরবে। যেখানে বুলেট ট্রেন এই গতি ৫৫ সেকেন্ডে ধরে। প্রথম প্রজন্মের বন্দে ভারত ট্রেনগুলি ৫৪.৬ সেকেন্ডের মধ্যে 0-১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতি তুলতে পারে এবং ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে চলতে পারে। বর্তমানে ভারতে দুটি বন্দে ভারত ট্রেন চলাচল করে যারমধ্যে একটি নতুন দিল্লি থেকে বারাণসী এবং অন্যটি নতুন দিল্লি থেকে বৈষ্ণো দেবী পর্যন্ত চলাচল করে।