ভারতের এমন এক জায়গা যেখানে বাজারে বিক্রি হয় বর, গত ৭০০ বছর ধরে চলে আসছে এই অনন্য ঐতিহ্য
ভারতের উত্তরপ্রদেশ ও বিহার রাজ্যে সবচেয়ে বেশি যৌতুক লেনদেন হয়ে থাকে।ভারতে এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে বড় বিক্রির বাজার রয়েছে।
বিবাহ বন্ধনকে (Marriage) খুব পবিত্র একটি বন্ধন মানা হয়। আর নিজের বিয়ে (marriage) নিয়ে প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা স্বপ্ন থাকে। ছেলে হোক বা মেয়ে প্রতিটি মানুষেরই ইচ্ছা থাকে নিজের পছন্দের সঙ্গীর সঙ্গে বিয়ে করার। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় কোনো কারণে কোনো ব্যক্তির বিয়ে হয় না। কেউ নিজের পছন্দ মতো সঙ্গী খুঁজে পায় না বা কেউ যৌতুকের কারণে বিয়ে করতে পারেনা।
যদিও যৌতুককে (Dowry)কুপ্রথা মানা হয় তবে এই প্রথা এখনো লোকে পালন করে এটা জানা সত্ত্বেও যে ভারতে যৌতুক (Dowry)লেনদেন করা আইনি রূপে অপরাধ। তবে কিছু ব্যক্তি রয়েছে যারা নিজের লোভকে সামলাতে না পেরে যৌতুক প্রথাকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রায়দিন যৌতুক লেনদেনের অনেক মামলা সামনে আসতে থাকে। ভারতের উত্তরপ্রদেশ ও বিহার (Bihar and Uttar Pradesh) রাজ্যে সবচেয়ে বেশি যৌতুক লেনদেন হয়ে থাকে।
এই দুটি রাজ্যে যৌতুক লেনদেনের কাজ লুকোচুরি করে নয় বরং খোলাখুলি ভাবে বুক পিটিয়ে করা হয়। এই দুই রাজ্যে যৌতুকের পরিমান নির্ধারণ করা হয় ছেলের প্রোফাইল অনুযায়ী। অর্থাৎ ছেলে যত কোয়ালিফাইড বা ভালো চাকরি করে সেই অনুযায়ী মেয়ের পক্ষকে যৌতুক দিতে হয়।
বড় বিক্রির বাজার
আপনি জেনে অবাক হবেন যে ভারতে এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে বড় বিক্রির বাজার (groom selling market) রয়েছে। হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনছেন। বিহারের মধুপুরের এই বড় বিক্রির বাজারকে (groom selling market) সৌরথ সভা বলা হয়। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম বিবাহ সাইটগুলির মধ্যে একটি বলে মনে করা হয়৷ বিহারের এই বরের বাজারে প্রায় ১০০-এর বেশি বর বিক্রি হওয়ার জন্য বসে। এখানে প্রতিটি বর্ণ, ধর্মের বর উপস্থিত থেকে এবং মেয়েরা তাদের পছন্দ মত বর বাছাই করে।
কথাবার্তা বলে পরিবারের লোকেরা
এখানে যে ছেলের পেশা যত বেশি ভালো সেই ছেলে সেই অনুযায়ী যৌতুক পায়। এইখানে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজও করা হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে এইভাবে বিয়ের প্রচলন খুবই কম হচ্ছে। এখানে বসবাসকারী মানুষরা জানিয়েছে যে আগেকার দিনে রাজ্য জুড়ে বাস চলত লোকদের এই সভায় আনার জন্য। “আল জাজিরা” এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, লোকেরা বলে যে মিডিয়া সমাবেশকে একটি বাজার হিসাবে উপস্থাপন করেছিল, যেখানে পুরুষদের গরুর মতো বিক্রি করা হয়েছিল।
৭০০ বছর ধরে চলছে এই প্রথা
প্রতি বছর এখানে বরের হাট বসে। এই ঐতিহ্য ৭০০ বছর ধরে চলে আসছে। এই অনন্য ঐতিহ্যে, বর-কনে (bride and groom) জনসাধারণের প্রদর্শনীতে দাঁড়ায় এবং মেয়েদের পুরুষ অভিভাবক (বাবা বা ভাই) বরের নির্বাচন করে। উন্নত বর নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় তার যোগ্যতা, পরিবার, আচরণ এবং জন্মপত্রিকা দেখা হয়। সব কিছু যাচাই-বাছাই করে ছেলে পছন্দ হলে মেয়ে পক্ষ বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলে। তবে সাধারণত এই পুরো প্রক্রিয়ায় কোনের মত শোনা হয় না।