একসময় শ্যামল বর্ণের রঙের কারনে আয়না সামনে কেঁদেছিলেন ঘন্টার পর ঘন্টা, আজ টেলিভিশন জগতের জনপ্রিয় সেক্সি অভিনেত্রী

গায়ের রং কালো হওয়ার কারণে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি অভিনেত্রী নিয়া শর্মাকে হতে হয়েছিল রিজেকশনের সম্মুখীন

কথায় রয়েছে যে মানুষের মন পরিষ্কার হওয়া উচিত। মানুষের শরীর বা গায়ের রং যেমনি হোক তাতে কিছু জায়ে আসেনা। তবে এই কথাটি শুধু মুখেই লোকে বলে কিন্তু আসল জীবনে এই কথাটি সত্যিকারের মেনে কেউই চলে না। বিশেষ করে ভারতে তো কোনো মানুষের গায়ের রং যদি কালো বা শ্যামলা (Black skin colour) হয় তবে সেই ব্যক্তিকে অনেক বিদ্রুপের স্বীকার হতে হয়। বিশেষ করে মেয়েদের এই বিদ্রুপ অনেক বেশি মাত্রায় সহ্য করতে হয়। আর এই বিদ্রুপের পরিমান অনেক মাত্রায় বেড়ে যায় যদি আপনি ফিল্ম বা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির হয়ে থাকেন। প্রথমত ফিল্ম বা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে সুন্দর অভিনেতা-অভিনেত্রীরা বেশি সুযোগ পায়।

Nia Sharma

কিন্তু কালো রঙের মেয়েকে যেহেতু কুৎসিত মানা হয় সেহেতু ফিল্ম বা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে (Television industry) কালো গায়ের রঙের মেয়েরা সুযোগ পায় না বললেই চলে। তবে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির টপ অভিনেত্রী নিয়া শর্মা (Nia Sharma) শ্যামলা গায়ের রঙ হওয়া সত্ত্বেও ও শত বিদ্রুপ সহ্য করার পরও হার মানেননি ও নিজেকে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির (television industry)সবচেয়ে হাইপেড ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আজ তিনি নিজের কাজ বা অভিনয়ের পাশাপাশি নিজের লুকস ও ফ্যাশনের কারণেও বেশ আলোচনার মধ্যে থাকেন। আসুন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে নিয়া শর্মার সফলতা ও সফলতা পাওয়ার আগে কি কি কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল ও শ্যামলা রঙের (black skin colour) কারণে কি কি মুশকিলের সম্মুখীন হতে হয়েছিল সেই বিষয় জেনেনি।

Nia Sharma

গত ২ দিন আগে নিয়া শর্মার জন্মদিন ছিল এবং তিনি তার ৩২তম জন্মদিন অনেক বড় করে পালন করেছেন। একবার নিয়া শর্মা (Nia Sharma)  তার সফলতার আগের কঠিন পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে ইন্টারভিউতে জানিয়েছিলেন যে সফলতা পাওয়ার আগে তাকে দেখতে অনেক কুৎসিত লাগতো। আর কুৎসিত হওয়ার দুঃখে তিনি একটা সময় রোজ ঘন্টার পর ঘন্টা বসে শুধু কেঁদেই যেতেন। কিন্তু পরে নিয়া নিজের মনকে শক্ত করে নিজের মধ্যে অনেক পরিবর্তন ঘটান। আর আজ নিয়া শর্মা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির টপ হিরোইন। ইনি তার কেরিয়ারের শুরু করেছিলেন কালি নামক সিরিয়ালের মাধ্যমে। এরপর ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পেতে থাকেন নিয়া এবং ‘এক হাজারো মে মেরি বেহেনা হে’, ‘জামাই রাজা’, ‘নাগিন’ ও অন্যান্য অনেক হিট শো আর হিট রিয়্যালিটি শো-তে কাজ করেছেন নিয়া। আজ এই ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন ১২ বছর সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। আপনি যদি কখনো নিয়া শর্মার এখন ও আগের ছবি দেখেন তবে এখনের সাথে আগের লুকের কোনো মিল খুঁজে পাবেন না।

Nia Sharma

নিয়া শর্মা আগে একজন সাধারণ ও সাধা-সিধে মেয়ে ছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে পরিবর্তন ও উন্নত করে তুলেছেন। অর্থাৎ মেকআপ করা শিখেছেন ও নিজের গ্রূমিং করেছেন। তবে বরাবর তিনি নিজের রঙের জন্য বিদ্রুপের স্বীকার হয়ে এসেছেন এবং এখনো হন। তবে তিনি এই বিদ্রুপকে কখনো পাত্তা দেননি ও নিজের জীবনে উন্নতি ঘটিয়ে গেছেন। নিয়া শর্মা জানিয়েছেন যে তিনি গর্বিত অনুভব করেন নিজের উপর কারণ তিনি নিজের রুপ বা রঙের জন্য কখনো কোনো ডাক্তারের সাহায্য নেননি এবং ডাক্তারকে গিয়ে বললেননি যে সার্জারির মাধ্যমে আমাকে সুন্দর বানিয়ে দিন। নিয়া জানিয়েছেন যে তাকে তার শ্যামলা রঙের জন্য অনেকবার রিজেকশনের সম্মুখীনও হতে হয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সালে ব্রিটিশ বেসড ইস্টার্ন আই সংবাদপত্রের শীর্ষ ৫০ জন সেক্সি এশীয়ান নারীদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিলেন নিয়া। তারপর ২০১৭ সালে তিনি এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন। এছাড়া নিয়া টিভি ২০২০-তে টাইমস মোস্ট ডিজায়ারেবল ওমেনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন।

Nia Sharma

এছাড়া নিয়ার বিবাদ বা বিতর্কের সাথেও অনেক ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। যেমন একবার নিজের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তিনি পুরুষের প্রাইভেট পার্টের মতো দেখতে একটি কেক কেটেছিলেন এবং সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করায় খুব বাজে ভাবে ট্রোল হয়ে হয়েছিল তাকে। এছাড়া দুটি আলাদা আলাদা ওয়েব সিরিজে কিসিং সিন ও বোল্ড সিং করায়ও ট্রোলের স্বীকার হতে হয়েছিল তাকে। তবে এতো কিছুর পরও তিনি জনগণের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। সম্প্রতি তাকে ‘ঝলক দিখলাযা’ শো-তে দেখা যাচ্ছে এবং এই শো-এর সেটেই তিনি ২ দিন আগে তার জন্মদিন পালন করেছিলেন।