৯০ বছরের ঠাকুমা পুটলি ব্যাগ বানিয়ে করছেন ব্যাবসা, ওমান-জার্মানি থেকেও আসছে অর্ডার

এক ব্যক্তির জীবনের 90 বছর বয়স এমন একটা সময় যা পুরোপুরি ভাবে অলস হয়ে পড়ে । এই বয়সে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তির কোন ইচ্ছা শক্তি থাকে না নতুন ভাবে কিছু করার। তবে একটা কথা মানতে হবে , কোন ব্যক্তির ইচ্ছাশক্তি যদি প্রবল হয়ে থাকে তাহলে স্বপ্ন পূরণের জন্য বয়সের উপর কোনো প্রভাব পড়ে না। যেকোনো বয়সে দাঁড়িয়ে তার স্বপ্নকে পূরণ করতে পারে। এই কথা , প্রমাণ করেছে আসাম নিবাসী ললিতা চক্রবর্তী।

Bag business

হ্যা, এই ব্যাক্তি 90 বছর বয়সী বৃদ্ধা মহিলা, লতিকা চক্রবর্তী, আসামের দুবরি থেকে এসেছেন। যেখানে এক ব্যাক্তি এই বয়সে তার দম শেষ করে দেয় , ঠিক ওই বয়সে দাঁড়িয়ে ওই মহিলা যেন জীবনের নতুন মোড় নেয় । যিনি তার ব্যবসার কারণে খবরে শিরোনামে ৷ লতিকা চক্রবর্তী একটি অনেক পুরোনো মেশিন দিয়ে নিজের হাতে ব্যাগ তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করেন। তার তৈরি ব্যাগ শুধু ভারতেই নয় বিশ্বের অনেক দেশেই পছন্দ করে থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তার এই ব্যবসা (Business) মাত্র 2 বছর আগে শুরু করেছে।

তার কাছ থেকে জানা যায়, প্রথম থেকেই তিনি সেলাইয়ের কাজ খুব পছন্দ করতেন। ছেলেমেয়েরা যখন ছোট ছিল, তখন তিনি নিজের হাতে তাদের জন্য কাপড় সেলাই করতেন। এমনকি তার ছেলেমেয়েরা তার হাতের সেলাই করা ড্রেস পরে পড়াশুনা ও স্কুল জীবন কাটিয়েছে। তাদের ছেলেমেয়েরা যখন বড় হয়, তখন তারা কাপড়ের ব্যাগ ও পুতুল তৈরি করতে থাকে।

ললিতা নিজে জানান তার এই ব্যাগ তৈরির পরামর্শ তার গৃহবধূ দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই তিনি ব্যাগ তৈরি শুরু করে। সে তার ব্যাগ তৈরির জন্য কাপড় ব্যাবহার করতো বিভিন্ন দেশের নামিদামি কাপড়। অবশ্য এই কাপড়ের আমদানি তার স্বামীর কর্মসূচি থেকে আসে। তার স্বামী ছিলেন পেশায় একজন সার্ভ ইঞ্জিনিয়ার। যার কারণে তাকে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে যেতে হতো ও বিভিন্ন দেশের নানান রকমের কাপড় আমদানি করেছিল।

Business

ললিতার তৈরী ব্যাগের কাপড় যেমন ছিল ভালো কোয়ালিটি, তেমন ব্যাগ গুলো ছিল ডিজাইন যুক্ত। তার এই ব্যাগ গুলির উচ্চ কোয়ালিটির সাথে সাথে ডিজাইন ভালো থাকার কারণে মানুষের কাছে হয়ে উঠেছিল পছন্দের। তিনি জানান, তার একটি ব্যাগ তৈরি করতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগে যায়। যার ফলে তার এই ব্যাগের দামও ছিল বেশি । তার একপিস ব্যাগের দাম ছিল বিদেশি বাজার মূল্যে প্রায় 10 ডলার। অবশ্য , ব্যাগ ক্রেতাদের মতে ডিজাইন ও কোয়ালিটির সাথে ব্যাগের দাম সমতুল্য।

তার মতে , একটি ব্যাগ সম্পন্ন করতে বেশ ভালো সময় লাগতো, তার ব্যাগ তৈরির কাজে তার সাথে তার গৃহবধূ সাহায্য করতো। তার ব্যাগের কোয়ালিটি মানুষের কাছে ছিল খুব পছন্দের । ললিতা যেমন এক একটি ব্যাগ নিজে হাতে তৈরি করতেন তেমন প্রয়োজন ছিল ওই ব্যাগ গুলি একটি একটি বাজারে পৌঁছে দেয়ার। অবশ্য তার তৈরি এই ব্যাগ গুলি বাজারে পৌঁছে দিতে তার ছেলে সাহায্য করেছিল।

ললিতা চক্রবর্তী ছেলে টেকনিক্যাল প্রযুক্তির মাধ্যমে তার মায়ের তৈরি ব্যাগ সকলের আয়তাই এনে দেয়ার ব্যবস্থা করে। এক ওয়েবসাইট-এর মাধ্যমে ব্যাগ পৌঁছে দেয় দেশ ও দেশের বাইরেও। তার তৈরি ব্যাগের এতটাই চাহিদা বেড়ে গেছে মানুষের কাছে , আজ যদি বলি শুধু দেশেই নয় , দেশের বাইরেও যেমন, জার্মানি , ওমান ও নিউজিল্যান্ডের মতো দেশে চলছে এই ব্যাগ। ক্রেতাদের কাছে এই ব্যাগ ডিজাইন ও ফিনিশিং এর জন্য খুবই পছন্দের ।