তাজমহল ছাড়াও এই ৫টি ঐতিহাসিক ভবন নির্মাণ করেছিলেন শাহজাহান, দশবার দেখলেও নাম জানেন না

ভারতে (India) এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে সারা বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ ভ্রমণ করতে আসেন। এর মধ্যে বিশেষ একটি হল তাজমহল (Tajmahal)। তাজমহল সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। এটি বিশ্বের সাতটি আশ্চর্যের একটি। এটি মুঘল সম্রাট শাহজাহান (Shahjahan) তার স্ত্রী মমতাজের স্মরণে নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু জানেন কি শাহজাহান (Shahjahan) তার শাসনামলে শুধু তাজমহল নয় অনেক স্থাপনা নির্মাণ করেছিলেন।

img 20230528 182033

শাহজাহান (Shahjahan) ছিলেন পঞ্চম তম মুঘল সম্রাট যিনি তার নির্মমতা, স্থাপত্য এবং কবিতার জন্য পরিচিত ছিলেন। মুঘল সম্রাট হওয়ার পর, তিনি ৩০ বছর দেশ শাসন করেন, এবং তাজমহল সহ অনেক ঐতিহাসিক ভবন নির্মাণ করেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক শাহজাহানের নির্মিত ৫টি স্মৃতিস্তম্ভ সম্পর্কে।

লালকেল্লা (Lalkella)

img 20230528 182046

ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত দুর্গটি শাহজাহান নির্মাণ করেছিলেন। যেহেতু তিনি স্থাপত্যের প্রতি অনুরাগী ছিলেন, তাই তিনি শুধু আগ্রাতেই নয়, দেশের অনেক জায়গায় ঐতিহাসিক ভবন নির্মাণ করেছিলেন। দিল্লির লাল কেল্লা এমন একটি অনন্য ভবন, যার নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৬৩৯ সালে এবং শেষ হয়েছিল ১৬৪৮ সালে। দুর্গটি লাল বেলেপাথর দিয়ে তৈরি, তাই একে লাল দুর্গ বলা হয়। এই ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটটি শাহজাহান তার সমস্ত হৃদয় এবং আত্মা দিয়ে তৈরি করেছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, রাজা নিজেও এই রাজপ্রাসাদে থাকার সুযোগ পাননি।

নির্মাণের ৩ বছর পরেই তাকে দুর্গ থেকে সরে যেতে হয়েছিল। স্বাধীনতা দিবস হোক বা প্রজাতন্ত্র দিবস, দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতিবছর লাল কেল্লা থেকেই পতাকা উত্তোলন করেন।

আগ্রা ফোর্ট (Agra Port)

img 20230528 183418

তাজমহলের পরে এটি আগ্রার দ্বিতীয় সর্বাধিক দর্শনীয় স্মৃতিস্তম্ভ। বলতে গেলে আকবরের শাসনামলে আগ্রার দুর্গ নির্মিত হলেও এর বর্তমান কাঠামোর কৃতিত্ব শাহজাহানের কাছে যায়। এটি একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, যা দিল্লির বিখ্যাত লাল কেল্লা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিল। এই দুর্গের অভ্যন্তরে জাহাঙ্গীর মহল, জাহাঙ্গীর প্রাসাদ, আকবরী মহল, খাস মহল, আঙ্গুরী বাগ, শীষ মহল, মুসাম্মান বুর্জ, দিওয়ান-ই-খাস, যমুনা গেট, মাছী ভবন, দিওয়ান-ই-আম, জন রাসেলের মতো অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে।

মতি মসজিদ (Moti Mosjid)

img 20230528 182110

মতি মসজিদ আগ্রা ফোর্টের ভিতরে অবস্থিত আরেকটি সুন্দর মার্বেল কাঠামো। এটি তাজমহল ছাড়াও শাহজাহানের নির্মিত সুন্দর স্মৃতিস্তম্ভগুলির মধ্যে একটি। শাহজাহান ১৬৪৭ সালে তার শাসনামলে এটি নির্মাণ করেন এবং ১৬৫৪ সালে এই মসজিদটি সম্পূর্ণ হয়। এটি নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে তিন লাখ টাকা। মতি মসজিদ এর আদিম দীপ্তির কারণে ‘মুক্তা মসজিদ’ নামটি পেয়েছে। এই আশ্চর্যজনক স্মৃতিস্তম্ভটি আমাদের স্থাপত্যের প্রতি শাহজাহানের আবেগ এবং ভালবাসা প্রমান করে।

জামে মসজিদ (Jame Mosjid)

img 20230528 182131

দিল্লির জামে মসজিদ মুঘল স্থাপত্যের একটি চমৎকার নিদর্শন। এই মসজিদটি তার জাঁকজমক ও সৌন্দর্যের জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত। আজও অনেকেই জানেন না যে জামে মসজিদটি শাহজাহান নির্মাণ করেছিলেন। জামে মসজিদ হল পুরানো দিল্লির প্রাণকেন্দ্র, লাল কেল্লা থেকে মাত্র ১ কিমি দূরে অবস্থিত, এবং এটি ভারতের বৃহত্তম মসজিদ। এটি তৈরি করতে মোট ৬ বছর সময় লেগেছে, এবং এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা। প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে এখানে ব্যাপক ভিড় দেখা যায়।

তাজমহল (Tajmahal)

img 20230528 183438

 

সবশেষে, আমরা ভারত এবং বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত স্মৃতিস্তম্ভ, তাজমহল সম্পর্কে কথা বলব। ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত এই ভবনটি তার সৌন্দর্যের জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত। যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত তাজমহল, শাহজাহান তার বেগম মমতাজের ভালোবাসার স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মাণ করেছিলেন। পুরো সমাধিটি মার্বেল দিয়ে তৈরি। এই ভবনটি, যা ভারতের সমৃদ্ধির প্রতিফলন করে। এটি ১৯৮৩ সাল থেকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।