গোটা বাংলার গর্ব আজ অজগাঁয়ের ছেলে নীলাদ্রি, চন্দ্রযান-৩ অভিযানের সাফল্যের নেপথ্যে এই বঙ্গপুত্র

গত ১৪ই জুলাই এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থেকেছেন ভারতের কোটি কোটি নাগরিক। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যম সর্বত্র তোলপাড় করেছে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3) এর উৎক্ষেপণের দৃশ‌্য। সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রেটি প্রত্যেকেই গর্বিত ইসরোর কার্যকলাপে। বিশেষ করে গোটা বাংলার কাছে আজ গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার (North 24 Parganas district) এই ‘বঙ্গসন্তান’। ছোটবেলা থেকেই বৈজ্ঞানিক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলা এই ভূমিপুত্র বাংলা সহ গোটা ভারতের মুখ আজ উজ্জ্বল করেছে।

ইসরোর (ISRO) এই বৃহত্তম গবেষণা চন্দ্রযান-৩-(Chandrayaan-3) তে, প্রত‌্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার (North 24 Parganas) মছলন্দপুরে’র- নকপুল (Machhalandapur-Nakpul) নামক গ্রামের ছেলে “নীলাদ্রি মৈত্র” (Niladri Moitra)। ইসরোর টিমের এই অন‌্যতম সৈনিকের জন্য গর্বিত তার পরিবার-এলাকাবাসী সহ গোটা বাংলা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণের পর থেকেই খবরের শিরোনামে রয়েছেন ৩১ বছর বয়সের এই তরুণ।

নকপুল ‘স্বামীজি সেবা সংঘ’ বাংলা মিডিয়াম স্কুল থেকে ২০০৮ সালে মাধ্যমিক পাস করেন এই মেধাবী ছাত্র। এরপর মছলন্দপুরের নিকটবর্তী ‘রাজবল্লভপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে’ (Rajballavpur High School) ভর্তি হন উচ্চ-মাধ্যমিক সম্পন্ন করার জন্য। ২০১০ সালে অসাধারণ রেজাল্ট করে উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হন নীলাদ্রি। সেই বছরই জয়েন্ট পরীক্ষায় ভালো রেঙ্ক পেয়ে খড়গপুর এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।

একইসঙ্গে, ইসরোতেও পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পান বিজ্ঞানী হওয়ার। এমনকি নীলাদ্রি NASA– তেও সুযোগ পেয়েছিলেন বলে জানা যায়। তবে, এই তরুনের দেশের প্রতি প্রেমটা একটু বেশিই ছিল। সে তার নিজের দেশের জন্য কিছু করে দেখাতে চেয়েছিল বলেই ইসরোতে তার প্রশিক্ষণ শুরু করেন। দীর্ঘ ৫ বছরের প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করে চাকরিতে যোগ দেন নীলাদ্রি (Niladri)। কর্মসূত্রে এই বাংলার ছেলে তার বাবা ও মা’কে নিয়ে কেরলের তিরুবনন্তপুরমে থাকেন।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, চন্দ্রযান (Chandrayaan) তৈরি থেকে উৎক্ষেপণে ISRO এর অন্যতম সৈনিক নীলাদ্রি মূলত টেকনিক‌্যাল বিষয়ে দায়িত্ব পালন করতেন। স্বপ্ন পূরণের এই বৃহৎ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিগত কয়েক বছরে তিনি তার জন্মস্থান মছলন্দপুরের (Machhalandapur) মাটিতে পা রাখতে পারেননি।নীলাদ্রির মা কৃষ্ণা মৈত্র (Krishna Moitra) জানান, ‘ছোট থেকেই নীলাদ্রির মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। চন্দ্রযান ৩-(Chandrayaan-3) এর বডি, ক্যামেরা-সহ টেকনিক‌্যাল দিকের দায়িত্ব ছিল ছেলের উপর। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে অনেক দিন পর ছেলে কেরলে ফিরেছে’।