পৃথিবীর সবচেয়ে নির্জন এবং রহস্যময় স্থান! যেখানে পৌঁছাতে পারেনি কেউই
পৃথিবীতে (Earth) এমন বহু রহস্যময়ী স্থান (mysterious place) রয়েছে যা আজও মানব সমাজকে অবাক করে। জনসংখ্যা থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে প্রশান্ত মহাসাগর (Pacific Ocean) বেষ্টিত একটি জায়গা আছে, যার নাম ‘পয়েন্ট নিমো’ (Nemo Point)। বিজ্ঞানীরা এই স্থান আবিষ্কার করলেও, সেখানে যাওয়ার সাধ্য তাঁদের এখনও হয়নি। এই স্থানে মানুষ বা কোনো ধরনের পশু-পাখির কোনো তথ্য না থাকার কারণে, এই স্থানকে বিশ্বের বৃহত্তম সমাধিক্ষেত্র বলা হয়। এই স্থান যেহেতু আবার মহাকাশের কবরস্থান, তাই একে স্যাটেলাইটের কবরস্থানও বলা হয়ে থাকে।
জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে পরিবেশ বান্ধব স্যাটেলাইট আনতে পারে জাপান। কিয়োটো ইউনিভার্সিটি এবং সুমিটোমো ফরেস্ট্রি কোভিড পিরিয়ডেই এটির উপর কাজ শুরু করেছিল। তথ্য অনুযায়ী, স্যাটেলাইটে কাঠের সর্বোচ্চ ব্যবহার থাকবে যাতে অকেজো হওয়ার পরেও মহাকাশ দূষিত না হয়। জাপানি গণমাধ্যম আরও বলছে, স্যাটেলাইটটি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যাতে কাজ শেষ হলে এটি মহাকাশে গিয়ে পড়ে। জানিয়ে রাখি, মহাকাশে ধ্বংসাবশেষের মাত্রা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে প্রায় সব দেশই মহাকাশে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। প্রতিনিয়ত স্যাটেলাইট পাঠানো হলেও, সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সেগুলোর পুনর্ব্যবহার সঠিকভাবে করা হয় না। এই বিষয়ে নাসা জানিয়েছে, এই ধ্বংসাবশেষ ভবিষ্যতে বড় সমস্যার সৃষ্টিও করতে পারে।
এই বিষয়ে আমেরিকার স্পেস সার্ভিল্যান্স নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, মহাকাশে ১০ সেন্টিমিটারের চেয়ে বড় প্রায় ২৩০০০ বস্তু রয়েছে। শুধু তাই নয়, ১ সেন্টিমিটারের চেয়ে বড় রয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ বস্তু এবং ১ মিলিমিটারের চেয়ে বড় রয়েছে প্রায় ১০ মিলিয়নেরও বেশি বস্তু। তারা লিডার নামক একটি ডিভাইসের মাধ্যমে সর্বদাই এই বস্তুর গতিপথ ট্র্যাক করা হচ্ছে।
জানিয়ে রাখি, এই বস্তুগুলোর গতি সেকেন্ডে প্রায় ৫ মাইল। এই গতিতে যদি কোনো মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়, তাহলে ক্ষতিটা জানা যাবে না। এইসমস্ত দেখার পর বেশকিছু দেশ একত্রিত হয়ে একটি মহাকাশ চুক্তি করেছে, যার প্রধান কাজ এই বস্তুগুলোকে একত্রিত করা। পয়েন্ট নিমো হল এই কাজের ফল। এই চুক্তির আয়ত্তায় ক্ষতিগ্রস্ত স্যাটেলাইটগুলোকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে এনে পয়েন্ট নিমোতে জমা করা হচ্ছে। প্রশান্ত মহাসাগরে দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে অবস্থিত, এই স্থানটিকে মহাসাগরের কেন্দ্র হিসাবেও বিবেচনা করা হয়। সমুদেরর মাঝে এই জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব নয়। এই স্থানকে Oceanic Pole of Accessibility বলা হয়। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই এখানে ১০০ টিরও বেশি স্যাটেলাইট জমা করা হয়েছে এবং ২০৩১ সাল যখন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন শেষ হতে শুরু করবে, তখন এটি নিমোতেও নিক্ষেপ করা হবে।