ফেটে যাচ্ছে আফ্রিকার ভূমি! তৈরি হতে পারে নতুন সাগর, জেনে নিন বিজ্ঞানীদের যুক্তি

আফ্রিকার (Africa) মাঝখানে একটি ফাটলের আকার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ফাটল সামনে আসার পর দেশকে দুই ভাগে ভাগ করার আশঙ্কা আগের চেয়ে বেড়ে যাচ্ছে। এই ফাটল প্রকাশ পায় মার্চের শুরুতে। তারপর প্রায় ৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ফাটল দৃশ্যমান হয়েছিল, কিন্তু জুনের মধ্যে সেই ফাটল আরও দীর্ঘ হয়েছে। প্রাকৃতিক ঘটনাই কারণ বলে মনে করা হচ্ছে বিজ্ঞানীদের মতে। প্রাকৃতিক ঘটনার কারণে পৃথিবীর অনেক মহাদেশ টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। ভূতাত্ত্বিকদের মতে, এক সময়ে অ্যান্টার্কটিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং আফ্রিকা ছিল একটি সুপারমহাদেশ। পরে প্রাকৃতিক কারণে তারা সবাই আলাদা হয়ে যায়।

এমন একটি ঘটনার কারণে ভারতও আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এশিয়ায় যোগ দেয়। এশিয়ার সাথে ভারতের সংঘর্ষ হলে হিমালয় পর্বতমালার সৃষ্টি হয়। এজন্য এদেরকে বলা হয় নতুন ও কাঁচা পাহাড়। অন্যদিকে, আরাবল্লীর পর্বতশ্রেণীগুলি পুরানো, শক্তিশালী এবং শক্ত। লন্ডনের জিওলজিক্যাল সোসাইটি অনুসারে, বেসিনের একটি দীর্ঘ নেটওয়ার্ক লোহিত সাগর থেকে মোজাম্বিক পর্যন্ত প্রায় ৩৫০০ কিলোমিটার বিস্তৃত। এই পুরো এলাকা ধীরে ধীরে বড় ফাটলে পরিণত হচ্ছে। তথ্য অনুযায়ী, এই ফাটলে তৈরি হতে পারে নতুন সাগর।

এই দীর্ঘ বিস্তৃত ফাটল গঠনের কারণে সারা বিশ্বে প্রশ্ন উঠছে আফ্রিকা (Africa) কি এখন দুই ভাগে বিভক্ত হবে? যদি এমন হয়, তা কবে হবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে জড়ো হয়েছেন ভূতত্ত্ববিদরা। এই জন্য বিজ্ঞানীরা টেকটোনিক প্লেট নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। নাসার আর্থ অবজারভেটরির মতে, পূর্ব আফ্রিকার সোমালিয়ান টেকটোনিক প্লেট নুবিয়ান টেকটোনিক প্লেট থেকে পূর্ব দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

সোমালিয়ান প্লেট সোমালি প্লেট এবং নুবিয়ান প্লেট আফ্রিকান প্লেট নামেও পরিচিত। ভূতাত্ত্বিকদের মতে, সোমালিয়ান এবং নুবিয়ান প্লেটও আরবীয় প্লেট থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। লন্ডনের জিওলজিক্যাল সোসাইটি তার গবেষণায় দেখেছে যে এই প্লেটগুলি ইথিওপিয়াতে একটি ওয়াই-আকৃতির রিফ্ট সিস্টেম তৈরি করে। আফ্রিকা মহাদেশ ভেঙে গেলে আগামী বছরগুলোতে কী হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে।

বিজ্ঞানী ইবিঙ্গার বলেছেন যে, পৃথিবীতে ফাটল সৃষ্টিকারী প্রাকৃতিক শক্তিগুলি ভবিষ্যতেও ধীর হতে পারে। ইতিহাসে এরকম বহুবার ঘটেছে। সোমালিয়ান এবং নুবিয়ান প্লেটের বিচ্ছেদ আরও কম হতে পারে। এবিঙ্গার আরও বলেছেন যে, এই ভাবে প্রথমে সক্রিয় এবং পরে শুকনো ফাটল বিশ্বে বহুবার দেখা গেছে। তার মতে, আফ্রিকাও ফাটলের বিপদ এড়াতে পারে।