পড়াশোনা ছেড়ে শুরু করেছিলেন নিজের ব্যবসা, আজ সেই ব্যক্তিই ৫ লাখ কোটি টাকার কোম্পানির মালিক

আজকাল বেশিরভাগ মানুষ চাকরির থেকে বেশি ব্যবসার (Business Idea) প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে। এমনকি এখন এমন অনেক ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে মানুষ তার মোটা টাকা মাইনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করা শুরু করছে (now people resign the 9 to 5 job and show interest in business) ও সফলও হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময় মানুষ ব্যবসা করার ভাবনা থেকে পিছিয়ে আসে কারণ ব্যবসা করতে গেলে অনেক মোটা অংকের মূলধনের প্রয়োজন হয় যা সবার পক্ষে যোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু যারা মূলধনের অভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারছেন না ভয় পাচ্ছেন তাদের জন্য আজ আমরা একটি অনুপ্রেরণা দায়ক সত্যিকারের গল্প নিয়ে এসেছি যা আপনাকে সাহস দেবে আপনাকে আপনার সফলতার পথে এগিয়ে যাওয়ার। তবে আসুন দেরি না করে জেনেনি Facebook অ্যাপ্লিকেশন কোম্পানির মালিক মার্ক জুকারবার্গ (Mark Zuckerberg) এর সফলতার কাহিনী।

Facebook creator Mark Zuckerberg

মার্কের ১২ বছর বয়স থেকেই কম্পিউটারের প্রতি একটা আলাদা ভালোবাসা কাজ করতো। কিন্তু প্রোগ্রামিং ডেভেলপমেন্টের জন্য তার ভালোবাসা তখন বৃদ্ধি পেয়েছিল যখন মার্কের বাবা তাকে একটি C++ নামের বই গিফট করেছিল। এরপর মার্ক এমন একটি বেসিক ম্যাসেজিং প্রোগ্রাম জ্যাকনেট তৈরি করেছিল যার ব্যবহার মার্কের পিতা নিজের ডেন্টাল অফিসে করেছিল। এর দ্বারা তার রিসেপশনিস্ট তাকে এই বিষয় ইনফরমেশন দিতেন। জুকারবার্গ মনে করেন জীবনের রিস্ক নিলেই সফলতা পাওয়া যায়। তাই মার্ক কখনো চাকরির প্রতি লোভ করেননি। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি তার বন্ধুদের সাথে মিলে সিন্যাপস মিডিয়া প্লেয়ার তৈরি করেছিলেন। এটি ইউজারদের পছন্দের গানগুলোকে স্টোর করতো।

মার্ক শেখার প্রতি এতটাই আগ্রহী ছিলেন যে তিনি ফেসবুকের আগে ফেসেসমাস নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলেন। এই সাইটে দুটি ছাত্রের ছবি একসাথে তুলনা করা যেতে পারে এবং কে বেশি হট তা নির্ধারণ করা যেতে পারে। এই ওয়েবসাইটটি স্কুলে অনেক বিতর্ক তৈরি করেছিল। শিক্ষার্থীদের মনে হয়েছিল যে এইভাবে ছবি আপলোড করা তাদের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করার সমান। কিন্তু মার্ক সাহস হারাননি এবং ফেসেসমাসের ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় এক মিলিয়ন পর্যন্ত পৌঁছে গেছিল। এরপর ২০০৪ সালে আবার মার্ক তার বন্ধুদের সাথে মিলে Facebook অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি করেছিল। এই অ্যাপে যেকোনো ব্যক্তি নিজের প্রোফাইল খুলে নিজের ছবি আপলোড করতে পারবে। এরপর নিজের কলেজ ও পড়াশুনা পুরোপুরি ছেড়ে দিতে মার্ক নিজের সমস্ত ফোকাস Facebook কে দিতে শুরু করেছিল। তারপর ২০০৪ সালের শেষ দিকেই facebook এর ইউজারদের সংখ্যা গিয়ে দাড়িয়েছিল প্রায় ১০ লাখের বেশি। এর থেকে আপনি নিশ্চই Facebook কতটা তাড়াতাড়ি সফলতা পেয়েছিল তা বুঝতেই পারছেন।

Facebook creator Mark Zuckerberg

এরপর ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এক্সেল পার্টনারস ২০০৫ সালে Facebook নেটওয়ার্কে ১২.৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছিল। Facebook প্রথম খোলা হয়েছিল শুধুমাত্র Ivey League এর ছাত্রদের জন্য তারপরে এটি অন্যান্য কলেজ, স্কুল, ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের লোকেরাও এতে যোগ দিতে শুরু করে। ডিসেম্বর ২০০৫ পর্যন্ত সাইটটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫.৫ মিলিয়ন পর্যন্ত পৌঁছে গেছিল। টাইম ম্যাগাজিন মার্ককে ২০১০ সালে পারসন অফ দ্যা ইয়ার ও ফোর্বস তাকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের তালিকায় ৩৫ তম স্থান দিয়েছিল। 2022 সালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ফেসবুকের সিইও মার্ক জুকারবার্গের আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ বর্তমানে প্রায় ৫০১০ কোটি ইউএসডি। “প্রশ্ন এটা নয় যে লোকেরা আপনার বিষয় কি জানে, বরং প্রশ্ন এটা যে আপনি লোকেদের আপনার বিষয় কি জানাচ্ছেন” এই কথাটি ২০১১ একটি ইন্টারভিউতে মার্ক বলেছিলেন। এই মন্তব্যটিতে পরিষ্কার বোঝা যায় যে কমিউনিকেশনের জন্য এরচেয়ে শ্রেষ্ঠ মাধ্যম আর কিছু হতে পারে না। বলা যেতে পারে ২০০৭ সাল মানে যখন মার্কের বয়স মাত্র ২৩ বছর ছিল তখনই তিনি Facebook এর সফলতার কারণে কোটিপতিতে পরিণত হয়ে গেছিলেন।