বাবা চেয়েছিলেন ছেলে কুলি হবে, কিন্তু দুর্দান্ত আইডিয়ার জেরে ২০০ কোটি টাকার ব্যাবসা দাঁড় করালো ছেলে

এই বিশ্বে যত বড় বড় ব্যবসায়ী আছে তার মধ্যে বেশিরভাগ নিজের চেষ্টায় ব্যবসায় (Business) সফলতা অর্জন করেছেন। বেশিরভাগজন শুরু থেকে কোটিপতি বা ধনী ছিলেন না। নিজের পরিশ্রমের দ্বারা তারা ওই জায়গায় পৌঁছেছেন। তাতে সেটা বিল গেটস হোক, আদানি হোক বা জুকারবার্গ হোক। ঠিক এমনভাবেই একজন গরীব কুলির ছেলে মুস্তাফার ব্যাবসায়িক সাফল্যের বাস্তব ঘটনা সকলের নজর কেড়েছে।

কেরল রাজ্য এর ওয়াইনাড এর এক গরীব কুলি পরিবার থেকে আসা মুস্তাফা একদিন নিজের ভাইয়ের দোকানে যখন উইকেন্ডে সময় কাটাটে যেতেন। তখন তিনি দেখেন একজন মহিলা ইডলি-ধোসা বানানোর জন্য মাখন কিনে নিয়ে যাচ্ছিল। সেটা দেখেই হটাৎ তার মাথায় বুদ্ধি হলো যে সে প্যাকেজিং ফুডের কোম্পানি শুরু করবেন। মুস্তাফা নিজের ভাইদের সাহায্যে ঘোল তৈরি করে এবং প্যাক করার মেশিন কিনে “আইডি ফ্রেশ” নামের একটি ব্র্যান্ড শুরু করেছিলেন।

খুব অল্প দিনেই তার ব্যবসাটি (Business) সাফল্য লাভ করে এবং ধীরে ধীরে তার প্রোডাক্টটি ফেমাস হয়ে যায়। এছাড়া তিনি শুরু থেকেই নিজের খাওয়ার ও পাকেজিংয়ের কোয়ালিটিতে কোনো খুত রাখেনি। ব্যাঙ্গালোরে আইডি ফ্রেশের এখন ৬৫ হাজার ক্ষুদ্র দোকান উপস্থিত আছে যার মধ্যে ১২ হাজার দোকানে রেফিজারেটার এর ব্যাবস্থা রয়েছে। মুস্তাফার কোম্পানির ভ্যালুয়েসন আজ ২০০কোটি টাকার।

কোম্পানিটি বাড়ানোর জন্য মুস্তাফা তার কোম্পানিতে ঘোল ছাড়া মালাবার পরোটা ও বিভিন্ন ধরণের চাটনীও বানানো শুরু করে এবং সফলতাও লাভ করে। আইডি ফ্রেশ এখন দক্ষিণ ভারতের প্রতিটি বাড়িতে একটু চেনা নাম বা ব্যান্ডে পরিণত হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গেছে যে মুস্তাফাকে পুরো জীবনে অনেক সংঘর্ষ করে তারপর এইখানে আসতে হয়েছে। মুস্তাফা ক্লাস ৬ এ যখন ফেল করেছিল তখন তার বাবা তার পরাশোনা ছাড়িয়ে তাকে কুলির কাজে ঢোকাতে চেয়েছিল কিন্তু মুস্তাফা হার মানেনি।

তিনি তার পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেন। তারপর তিনি কালকটের ন্যাশেনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং করেন এবং মটোরোলা মোবাইলে কোম্পানিতে জবে ঢোকেন এবং কোম্পানি থেকে তারপর তাকে লন্ডনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কুলির ছেলের লন্ডনে গিয়ে চাকরি করাটাও কোনো স্বপ্নের চেয়ে কম নয়।

তারপর মুস্তাফা চাকরি বদলে সিটি ব্যাংকে কোম্পানিতে তিনি ৭ বছর রিয়াদ ও দুবাইতে কাটিয়ে দেন। কিন্তু তারপর দেশের টানে তিনি আবার ভারতে ফিরে আসেন এবং ব্যাঙ্গালোরের আইআইএম ব্যাঙ্গালোরে এমবিএ পড়ার জন্য এডমিশন নেন এবং সেই সময় একদিন যখন তিনি তার ভাইয়ের দোকানে যান সেখান থেকে তিনি ব্যাবসা (Business) করার সিদ্ধান্ত নেন আর প্রমান করেন যে ইচ্ছা থাকলেই সব করা যায়।