বাবা রাস্তার ধারে বিক্রি করতো টুপি, মেয়ে দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে আজ ৯৬.৬% পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক টপার

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার ফলে মানুষ নিজের বা নিজের সন্তাদের ট্যালেন্ট বা স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিয়ে দেয়। কারণ বেশিভাগ মানুষের কাছেই নিজের স্বপ্ন পূরণ করা তো দূরের কথা দুবেলা খাওয়ার জোটানো জন্য অনেক সংগ্রাম করতে হয়। তাই এই আর্থিক দুর্ভোগের মাঝে কিছু মানুষ নিজের স্বপ্নকে পূরণ করতে পারে না। তবে কিছু কিছু মানুষ রয়েছে শত আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকলেও নিজের মনের জোরে নিজের স্বপ্নকে বাস্তব করে তোলে। আর কথায় আছে যে ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। এই বাক্যটিকে সত্যি প্রমান করেছে সিমরান নৌরিন। আসুন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনেনি সিমরানের সফলতার গল্প।

Simran and her school mates

দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে আজ হয়ে উঠেছে রাঁচির টপার

রাঁচির (ranchi) উরসুলিন কনভেন্ট গার্লস স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞানের ছাত্রী হলেন সিমরান নৌরিন (simran nourin)। দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করা সত্ত্বেও আজ তিনি পরীক্ষায় দুর্দান্ত রেজাল্ট করেছেন এবং সফলতা অর্জন করেছেন। তিনি দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় ৪৭৮ নম্বর পেয়ে রাঁচি (ranchi) জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন ও গোটা রাজ্যে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছেন। সিমরানের শতাংশ হলো ৯৬.৬%। সিমরাম খুব গরিব পরিবারের মেয়ে। সিমরানের বাবা জসিম আক্তার বাজারের ফুটপাতে টুপি বিক্রি করেন ও মা হাউস ওয়াইফ। সিমরানরা দুই বোন এবং সিমরাম ছোট। সিমরানের বড় বোন ফিজিক্সে পিজি করছে।

দশম শ্রেণীতেও হয়েছিলেন টপার

যখন দ্বাদশ শ্রেণীর রেজাল্ট বেরোলো তখন সিমরান (simran nourin) তার মায়ের সাথে নিজের স্কুলে গেছিলেন রেজাল্ট দেখতে। রেজাল্ট জানার পর তারা অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন এবং জানিয়েছিলেন যে সিমরান দশম শ্রেণীতেও টপ করেছিল আর তাই তিনি আশা রেখেছিলেন যে দ্বাদশ শ্রেণীতেও তার রেজাল্ট ভালো হবে।

Simran and her school mates

সিমরান আরো জানান যে দশম শ্রেণীর পর সিবিএসই বোর্ডের স্কুল থেকে পড়াশোনা করতে চাইতেন। কিন্তু সিমরানের বাবা গরিব হওয়ায় তার সামর্থ ছিল না সিমরানকে সিবিএসসি স্কুলে পড়ানোর। তাই সিমরানকে নিজের ইচ্ছার জলাঞ্জলি দিতে হয়েছিল। কিন্তু সরকারি স্কুলে পড়ার পরও তিনি টপ করে দেখিয়ে দিয়েছেন সবাইকে যে তিনি যেই স্কুলেই পড়ুক না কেন তিনি সেরা।

Simran nourin

সিমরান অনেক ছোট বয়স থেকে দেখেছেন যে তার মা-বাবার আর্থিক অবস্থা কতটা খারাপ এবং এই কারণে কতোটা দুর্দশার শিকার হয়েছে তার পরিবারকে। তাই সিমরান জানিয়েছেন যে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন পড়াশোনা করে তিনি তার পরিবারের আর্থিক দুর্দশা দূর করবেন।

https://youtu.be/djpvAxt20jU

এছাড়া সিমরানের মা জানিয়েছেন যে সিমরানের বাবা বাজারে টুপি ও অন্যান্য বস্তু বিক্রি করে সংসারের খরচা চালান। কিন্তু লকডাউনের সময় তাদের পরিবারকে মারাত্মক আর্থিক দুর্দশায় সম্মুখীন হতে হয়েছিল। একটা সময় এমনও এসেছিল যখন সিমরানের মা-বাবা ভেবেছিলেন যে তাদের মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করিয়ে দেবেন কারণ তাদের পক্ষে সেই সময় দুবেলার খাওয়ার জোটানো মুশকিল হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ত সত্ত্বেও সিমরানের বাবা কোনোভাবে মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে গেছিলেন। কিন্তু লকডাউন উঠে যাওয়ায় খারাপ সময় শেষ হয়ে গেছে আর আজ তার মেয়েরা শুধু মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল নয় বরং গোটা দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে এবং আগেও করবে এমনটাই সিমরানের মা-বাবার।