মাত্র ১৩ বছরে হয়েছিল প্রেম, লিখতেন লাভ লেটার- ঠিক যেন সিনেমার গল্প রানী এলিজাবেথের প্রেমকাহিনী
গত ৮ সেপ্টেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ইংল্যান্ডের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ (Queen Elizabeth II of England)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তিনি প্রায় ৭০ বছর ইংল্যান্ডে রাজত্ব করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তবে রানী মারা গেলেও তাঁর প্রেম কাহিনী অমর হয়ে থেকে যাবে। অনেকের ইংল্যান্ডের রানী সম্পর্কে জানলেও, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন বিশেষ করে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে খুব কম জনই জানেন। আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের জানাবো ইংল্যান্ডের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রেমের গল্প(Love Story)। যে গল্প কোনো রূপকথা গল্প কিংবা সিনেমার থেকে কোনো অংশে কম নয়। চলুন রানীর প্রেমের গল্প সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
৭০ বছর ধরে ব্রিটেনের সিংহাসনে রাজত্ব করা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রেমের গল্প ছিল রূপকথার মতো। রানীর স্বামী ছিলেন ফিলিপ(Prince Philip)। ফিলিপ ছিলেন গ্রীস এবং ডেনমার্ককের প্রিন্স। তাঁদের বিয়ে হয়েছিল প্রেম করে। দীর্ঘ ৭৪ বছর তাঁরা এক সঙ্গে সংসার করেছেন। তাঁদের বিবাহিত জীবন খুবই সুখের ছিল। তবে রানীর প্রেমের গল্প শুনলে মনে হবে কোনো রোমান্টিক সিনেমার গল্প শুনছেন।
১৯৩৯ সাল নাগাদ প্রিন্স ফিলিপের সঙ্গে এলিজাবেথের প্রেম শুরু হয়। তখন রানীর বয়স ১৩ এবং প্রিন্স ফিলিপের বয়স ১৮। লন্ডনের রয়্যাল নেভাল কলেজে(Royal Neval College) থেকে তাঁদের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল। এই কলেজেই তাঁদের প্রথম দেখা এবং প্রথম দেখাতেই দুজন দুজনের প্রেমে পড়ে যান। রানী এলিজাবেথ ফিলিপের প্রেমে এতোটাই মুগ্ধ ছিলেন যে, প্রেমিকের ছবি তিনি ঘরে রাখতে শুরু করেছিলেন। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (2nd World War) সময়কালে যখন প্রিন্স ফিলিপকে যুদ্ধের জন্য যেতে হয়েছিল, তখন তাঁদের সম্পর্কে নতুন মোড় আসে। যুদ্ধের সময় নিয়মিত প্রেমিককে চিঠি লিখতেন এলিজাবেথ।
প্রিন্স ফিলিপ যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর তাঁদের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়ে ওঠে। অবশেষে, ১৯৪৬ সালে ফিলিপ এলিজাবেথকে একটি চিঠির মাধমে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এলিজাবেথ। ১৯৪৭ সালের ২০ নভেম্বর দুজনে বিয়ে করেন। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে (Westminster Abbey) রাজকীয় ভাবে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছিল। তবে অনেকেই দুজনের বিয়ে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
আপত্তি সত্ত্বেও তাঁদের দুজনের বিয়ে কেও আটকাতে পারেনি। দীর্ঘ ৭৫ বছর তাঁরা সুখে সংসার করে গেছেন। গত বছর স্বামী ফিলিপের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর রানী অনেকটাই একা হয়ে পড়েন। স্বামীর মৃত্যুর ১৭ মাস পর রানীও মৃত্যুবরণ করেন। সবশেষে বলা যায়, সারাজীবন দুজনে একসাথে ছিলেন, মৃত্যুও তাঁদের ভাঙতে পারেনি।