রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ফিল্মিস্টাইলে দিয়েছিলেন প্রেম প্রস্তাব, নীতার প্রেমে যেভাবে হাবুডুবু খেয়েছিলেন মুকেশ আম্বানি
এসিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি (richest businessman) হলো মুকেশ আম্বানি (Mukesh Ambani)। আম্বানিরা তাদের লাইফস্টাইলের জন্য সবসময় আলোচনার বিষয় হয়ে থাকেন। আম্বানি পরিবারে সবচেয়ে বেশি আলোচনার কারণ হন মুকেশ আম্বানির স্ত্রী (wife of Mukesh Ambani), নিতা আম্বানি (Nita Ambani)। তিনি বেশিরভাগ সময় আলোচনার কারণ হন নিজের স্টাইল, ফ্যাশন ও লাক্সারি জিনিসের জন্য। এছাড়া তিনি মুকেশকে ব্যবসাতেও সাহায্য করেন। নিতা আম্বানি দামি জিনিস ব্যবহার করতে খুব পছন্দ করেন যার জন্য তিনি সবসময় আলোচনার বিষয় হয়ে থাকেন। পৃথিবীর এমন কোনো দামি জিনিস নেই যা আম্বানিদের কাছে নেই।
আর যদি নিতা ও মুকেশ আম্বানির পার্সোনাল জীবনের কথা বলা হয় তাহলে বলা যেতে পারে যে এই দম্পত্তির লাভ স্টোরি (love story of Mukesh Ambani and Nita Ambani)কোনো ফিল্মি লাভ স্টোরির থেকে কম নয়। মুকেশ আম্বানি নিতার প্রেমে রীতিমতো হাবুডুবু খেছিলেন। এই বিষয় নিজেই জানিয়েছেন এক সাক্ষাৎকারে। নিতা আম্বানি একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছিল, যাকে মুকেশের পিতা ধীরুবাই আম্বানি মুকেশের জন্য পছন্দ করেছিলেন। কিন্তু খুব কম লোকই জানেন যে নিতা আম্বানি বিয়ের আগে মুকেশ আম্বানির কাছে একটি শর্ত রেখেছিল এবং তারপর বিয়ের জন্য রাজি হয়েছিলেন তিনি।
১৯৮৫ সালের ৮ই মার্চ মুকেশ আম্বানি ও নীতা আম্বানি একসাথে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন।নিতা আম্বানি একটি সাক্ষাতকারে জানিয়ে ছিলেন যে মুকেশের বাবা ধীরুবাই ও মাতা কোকিলা বেন নিতাকে একটি নাচের অনুষ্ঠানে দেখেছিলেন। তাদের নিতার নাচ খুব ভালো লেগেছিল। তারপরে ধীরুবাই, নিতার বাড়িতে ফোন করে নিতার সঙ্গে মুকেশের বিয়ের প্রস্তাব রেখেছিলেন। এটি নিতার পরিবারের জন্য খুব আশ্চর্যজনক বিষয় ছিল যে দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি তাদের ফোন করেছে। নিতার বাড়ির জন্য এটি একটি সুখবর হলেও নিতা খুব চিন্তিত ছিল এই বিয়ে নিয়ে। কারণ তার মনে হয়েছিল যে এতো ধনী পরিবারে বিয়ে করলে কেউ তাকে আর চাকরি করতে দেবে না। আর তিনি কোনো মিতেই তার চাকরি ছাড়তে চাইতেন না।
জানিয়ে দি, নীতা একটি স্কুলে টিচার ছিলেন। আর সেখানে তিনি ৮০০ টাকা বেতন পেতেন। নিতা এরপর ধীরুবাই ও কোকিলা বেনের কাছে শর্ত রেখেছিলেন যে তিনি তবেই বিয়ে করবেন যদি তাকে বিয়ের পর চাকরি করতে দেওয়া হয়। মুকেশের মাতা পিতা নিতার শর্ত মেনে নিয়েছিল এবং তারপর নিতা ও মুকেশ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। তবে দেখাশোনার বিয়ে হলেও প্রেমপর্ব শুরু হয়েছিল পরে। মুকেশ আম্বানি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, নীতাকে দেখেই প্রেমে পড়ে যান তিনি। বাবার পছন্দের জন্য নয়, নীতার প্রেমে নাকি রীতিমতো হাবুডুবু খাচ্ছিলেন মুকেশও। নিজেই জানিয়েছিলেন, মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, নীতা তাঁকে বিয়ে করতে রাজি কি না। একটি ট্র্যাফিক সিগন্যালে বলিউডি কায়দায় নীতাকে প্রেম প্রস্তাব দিয়েছিলেন রিল্যায়ান্স কর্ণধার। বলেছিলেন, “আমাকে বিয়ে করবে? এখুনি জবাব চাই। হ্যাঁ অথবা না। তা না হলে এই সিগন্যালেই দাঁড়িয়ে থাকব।” ওদিকে লাল আলো সবুজ হয়েছে। পিছনের সমস্ত গাড়ি হর্ন দিতে শুরু করেছে। নীতার মুখে ‘হ্যাঁ’ না শুনে গাড়িই চালাবেন না, স্পষ্ট বলেছিলেন মুকেশ। নীতা প্রস্তাবে সাড়া দিলে তবেই ফের গাড়ি চালানো শুরু করেন মুকেশ।
মুকেশ আম্বনির শান্ত সভাব পছন্দ হয়েছিল নীতার। তারপর ধীরে ধীরে বন্ধুত্ত্ব গাঢ় হয়েছিল তাদের। তারপর প্রতিদিন নীতার বাড়িতে গোলাপ পাঠাতেন ও দামী রিয়াটে করে দেখা করতে যেতেন মুকেশ। তবে দেখা করতে যাওয়ার আগে নীতার পছন্দের খাওয়ার পাওভাজি নিতে ভুলতেন না মুকেশ। বর্তমানে তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে বেশ সুখে দিন কাটাচ্ছেন ও আর তাদের সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কোনো ভাঙন সৃষ্টি হয়নি ও সময়ের সাথে ভালবাস গভীর হয়েছে এমনটাই জানিয়েছে এই দম্পতি।