সারা শরীরে গজিয়েছে বড় বড় লোম, বাচ্চারা ভাবছে ভূত! বিরল রোগে আক্রান্ত এই যুবক

কখনও শুনেছেন কোন মানুষের মুখে বনমানুশের মত বড় বড় লোম গজাতে? শুনতে অবাক লাগলেও, বাস্তবে ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছে ১৭ বছর বয়সী ললিত পতিদারের (Lalit Patidar) সঙ্গে। মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) রতলামের বাসিন্দা ললিতের এই অদ্ভূত রোগের নাম ওয়্যারউলফ সিনড্রোম (Werewolf Syndrome)। যার ফলে তাঁর মুখে ৫ সেমি পর্যন্ত চুল গজাতে দেখা যাচ্ছে।

মধ্যপ্রদেশের নন্দলেটা গ্রামের এই ছাত্র মধ্যযুগ থেকে এই রোগে আক্রান্ত পঞ্চাশ জনের একজন। নিজের এমন অদ্ভূত রোগের বিষয়ে ললিত বলেন, ‘আমি একটি সাধারণ পরিবার থেকে এসেছি, আমার বাবা একজন কৃষক এবং আমি বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ছি। এছাড়াও, আমি আমার বাবাকে তাঁর কৃষিকাজেও সাহায্য করি’।

img 20230201 141607

তিনি আরও বলেন, ‘ছোট বেলায় এই বিষয়টা আমি ভালো করে বুঝতে পারিনি। তখন ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা আমাকে দেখে ভয় পেত। অনেকে তো ভাবত, আমি বুঝি তাঁদের পশুর মত করে কামড়াতে যাব। তবে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারি, আমি সবার থেকে কিছুটা হলেও আলাদা’।

পতিদার বলেন, ‘আমার সারা জীবন এই চুলগুলো ছিল। আমার বাবা-মা বলেছিলেন, ডাক্তার আমাকে জন্মের সময় বাঁচিয়েছিলেন। কিন্তু ছয় বা সাত বছর বয়স পর্যন্ত আমি কোন পার্থক্যই বুঝতে পারিনি। তারপর আমি ধীরে ধীরে বুঝতে পারি, আমার সারা শরীরে বড় বড় লোম গজাচ্ছে। সেইসঙ্গে বুঝতে পারি, আমি সাধারণ মানুষের থেকে বেশ কিছুটা আলাদা’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্কুলের সহপাঠীরা আমাকে সবসময় বানর বলে বিরক্ত করত। এছাড়াও চারপাশের মানুষজন আমাকে ভূত বলেও মনে করত। কিন্তু তাঁদের এটা বোঝাতে সময় লাগত, যে আমি মানুষ। তবে আমি কখনই হাল ছাড়িনি। জীবনকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি’।

জানিয়ে রাখি, হাইপারট্রিকোসিস হল শরীরে চুলের বৃদ্ধির অস্বাভাবিক পরিমাণ। হাইপারট্রাইকোসিসের দুটি ভিন্ন প্রকার হল সাধারণীকৃত হাইপারট্রিকোসিস, যা সারা শরীরে ঘটে এবং স্থানীয় হাইপারট্রিকোসিস, যা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে। তবে উনিশ এবং বিশ শতকের গোড়ার দিকে অনেক সার্কাস সাইডশো পারফর্মার, যেমন জুলিয়া পাস্ত্রানার হাইপারট্রিকোসিস ছিল।