ইসরায়েলি চিকিত্সকরা করলেন অলৌকিক কাজ, যুক্ত করলেন শিশুর কাটা মাথা

এটা বিশ্বাস করা হয় যে, একজন ডাক্তারও (Doctor)  ঈশ্বরের (God) রূপ কারণ একজন ডাক্তারের কাজ অন্যকে বাঁচানো। কারো জীবন কেড়ে নেওয়া সহজ কিন্তু কারো জীবন দেওয়া খুব কঠিন। যখনই আমাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হয়, আমরা ডাক্তারের কাছে যাই। চিকিৎসা পেশায় অনেক সময় এমন ঘটনা সামনে আসে, যখন মানুষ জীবনের আশা ছেড়ে দেয়। সে সময় মৃত্যুকে পরাজিত করে জীবন বাঁচান একমাত্র চিকিৎসক। এরই মধ্যে ইসরায়েল (Israeli) থেকে একটি ঘটনা সামনে এসেছে। এখানকার চিকিৎসকরা এমন এক অলৌকিক কাজ করে দেখিয়েছেন যা তুমুল আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি জানতে পারলে আপনিও অবাক হবেন।

আসলে, একটি শিশুর (Child) চরম দুর্ঘটনায় (Accident) ঘটেছিল, যার কারণে তার মাথা শরীর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেই শিশুটির বেঁচে থাকার আশা ছিল না। বলা হচ্ছে, ওই শিশুর শুধু মাথা চামড়ার সঙ্গে লাগানো ছিল। কিন্তু অনেক চেষ্টার পর চিকিৎসকরা দেহের সঙ্গে মাথা যোগ দিয়ে শিশুটিকে নতুন জীবন দেন। খবরে বলা হয়েছে, সুলেমান হাসান (Suleman Hasan) নামে ফিলিস্তিনের ১২ বছর বয়সী এক বালক সাইকেল চালাচ্ছিল, তখন একটি গাড়ি তাকে ধাক্কা দেয়, যার ফলে শিশুটির মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং মাথার খুলি ও মেরুদণ্ডের গোড়ায় ফ্র্যাকচার হয়।

এই পরিস্থিতিটি বৈজ্ঞানিকভাবে দ্বিপাক্ষিক আটলান্টো-অসিপিটাল জয়েন্ট ডিসলোকেশন নামে পরিচিত। সুলেমানকে তাৎক্ষণিকভাবে একটি মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তাকে জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য পাঠানো হয়। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, শিশুটির মাথা তার ঘাড়ের গোড়া থেকে প্রায় আলাদা হয়ে গেছে। শিশুটির চিকিৎসা করা অর্থোপেডিক সার্জন ডাঃ ওহাদ আইনাভ বলেছেন যে, অস্ত্রোপচারে বেশ কয়েক ঘন্টা সময় লেগেছিল কিন্তু সঠিকভাবে করা হয়েছিল। এর জন্য আমাদের নতুন প্লান্ট এবং ফিক্সচার স্থাপন করতে হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই সন্তানের জন্য জীবন যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছি। সার্জন বিশ্বাস করেন যে শিশুটির পুনরুদ্ধার একটি অলৌকিক ঘটনা থেকে কম কিছু ছিল না, কারণ তার বেঁচে থাকার আশঙ্কা খুব কম ছিল। সোলেমানকে সম্প্রতি সার্ভিকাল স্প্লিন্ট নিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ডাক্তাররা তার পুনরুদ্ধারের দিকে নজর রাখছেন। ডাঃ ইনাভ আউটলেটকে বলেছেন যে, শিশুটি এখন ভাল আছে।

আপনি জেনে অবাক হবেন যে তার কোন স্নায়বিক সমস্যা নেই। এত বড় অপারেশনের পরও কোনো রকম সাহায্য ছাড়াই সে নিজে হাঁটতে পারে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের বিরল অস্ত্রোপচারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন হয়। এটি মোটেও স্বাভাবিক অস্ত্রোপচার নয়। সুলেমানের বাবা তার ছেলেকে এক মুহূর্তের জন্যও একা ছাড়েননি। একমাত্র ছেলেকে বাঁচানোর জন্য তিনি হাসপাতালের কর্মীদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলেকে বাঁচানোর জন্য সারাজীবন চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব’।