ছেলেকে পড়াতে বাবা বেঁচেছিলেন জমি, কিডনি বিক্রি করতেও ছিলেন রাজি- এমনি এই IPS এর কাহিনী
নিজের ছেলেকে পড়াশোনা করানোর জন্য IPS Officer ইন্দ্রজিৎ মেহেতার বাবা নিজের জমি বিক্রি করে দিয়েছিলেন
একজন পিতা (Father) বাচ্চাদের জন্য ভগবান তুল্য হয়ে থাকে। একজন পিতা তার বাচ্চাদের সমস্ত চাহিদা-স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা করে ও তার জীবন নিজের পরিবারের চারিপাশে ঘুরপাক করতে থাকে। আর পিতা (Father) বাচ্চাদের খুশি রাখারও চেষ্টা করতে। সন্তানদের সংগ্রামে একজন পিতা সর্বদা আত্মবিশাস বাড়ায়, নিজের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ উন্নত বানানোর জন্য পিতা কঠোর পরিশ্রম করে ও নিজের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার জন্য একজন পিতা সব করার জন্য প্রস্তুত থাকে।
আজ আমরা আমাদের আর্টিকেলে উপরে উল্লেখিত বর্ণনার মতোই একজন পিতার ব্যাপারে জানাবো। এই পিতা নিজের ছেলের (Father-son relationship) উন্নত ভবিষ্যতের জন্য নিজের চাষবাসের জমি পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছিলেন। ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী সমাজের এই পিতার কাছে যখন ছেলে (Father-Son relationship) পড়াশোনা খরচ চালানোর জন্য টাকা ছিল না তখন তিনি নিজের কিডনি বিক্রি করার জন্য তৈরু হয়ে গেছিলেন। এই পিতা নিজের ছেলেকে পড়াশোনা করানোর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করেছেন।
এই পিতার ছেলেও তার বাবার পরিশ্রমকে বিফল যেতে দেয়নি। তিনি কঠোর পরিশ্রম করে আইপিএস অফিসার (IPS OFFICER)হয়ে দেখিয়েছেন। এই আইপিএস অফিসারের নান হচ্ছে ইন্দ্রজিৎ মেহেতা (Indrajit maheta)। ইনি ঝাড়খণ্ডের বকার জেলার একটি ছোট গ্রামে গরিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যখন ইন্দ্রজিৎ মেহেতা (Indrajit maheta)পঞ্চম শ্রেণীতে পড়তেন তখন তিনি তার গ্রামের শিক্ষকের থেকে জেলা প্রশাসনের বিষয় শুনেছিলেন তবে থেকে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অফিসার হওয়ার।
পিতা জমি বিক্রি করে পড়াশোনার ফিস দিয়েছিলেন
আজ ইন্দ্রজিৎ মেহেতা একজন আইপিএস অফিসার (IPS OFFICER) হয়ে গেছেন ও দেশের সেবা করছেন কিন্তু এই সফলতা পর্যন্ত পৌঁছানো তার জন্য সহজ ব্যাপার ছিল না। কারণ ইন্দ্রজিতের বাড়ির আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল। ইন্দ্রজিতের বাবা ছিলেন একজন দরিদ্র কৃষক। তিনি কোনোরকমে পরিবারের জন্য দুবেলার খাওয়ার জোগাড় করতেন। এমনকি ইন্দ্রজিতের পরিবারের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তারা কাঁচা বাড়িতে থাকতেন। বাড়ি মেরামত করার মতো টাকাও ছিল না তাদের কাছে। কোনোমতে লোকজনের সহযোগিতায় ইন্দ্রজিতের বাবা তাদের বাড়িটি মেরামত করিয়েছিলেন।
ইন্দ্রজিৎ তার জীবনে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। তবে তিনি অনেক কঠোর পরিশ্রম করে নিজের পড়াশোনা করতেন। তিনি আবর্জনা কুড়োনো লোকেদের থেকে পুরোনো বই কিনে পড়াশোনা করতেন। ইন্দ্রজিৎ গ্রাজুয়েশনের ডিগ্রি প্রাপ্ত করার জন্য দিল্লী গিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন।তবে ফি দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত টাকা ছিল না তার কাছে। কিন্তু তার বাবা তাকে পড়াশোনা করার জন্য সহায়তা করেছিলেন। ইন্দ্রজিতের বাবা নিজের জমি বিক্রি করে ফিস জমা দিয়েছিলেন।
এরপর ইন্দ্রজিৎ UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি পড়াশোনার কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে ইন্দ্রজিৎ তার ঘরের অভাব ও আর্থিক অবস্থা নিয়ে সর্বদা চিন্তিত থাকতেন। ইন্দ্রজিৎ ভাবতেন এই আর্থিক অবস্থার মধ্যে তিনি কিভাবে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যাবেন? কিন্তু সেই সময় ইন্দ্রজিতের পিতা তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন যে “তুমি পড়াশোনা করো, টাকা-পয়সা নিয়ে চিন্তা করা না। দরকার পড়লে আমি কিডনি বেঁচে তোমার পড়াশোনার টাকা জোগাড় করবো”। এরপর বাবার কথায় উৎসাহিত হয়ে ইন্দ্রজিৎ কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশোনা করেছিলেন এবং দ্বিতীয় চেষ্টায় UPSC পরীক্ষা পাশ করে গেছিলেন। আর ইন্দ্রজিৎ নিজের এলাকায় প্রথম UPSC অফিসার হয়েছেন।