বাঙালি ট্রান্সজেন্ডার প্রিন্সিপালের কাহিনী: বাড়িতে থাকতেন মেয়ে সেজে, সমাজে থাকতেন ছেলের রুপে

বাঙালি ট্রান্সজেন্ডার প্রিন্সিপালের কাহিনী

ভারতীয় সমাজে (Indian Culture) আজও অবহেলিত রয়েছে ট্রান্সজেন্ডার (Transgender) বা হিজড়ারা। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে অনেক আইন তাদের জন্য আজ চালু হয়েছে। তবুও সমাজের অনেক মানুষ তাঁদের খারাপ দৃষ্টিতেই দেখেন। সে জায়গা অনেকে অনেক ভারতীয় ট্রান্সজেন্ডার ধীরে ধীরে লড়াই করে নিজেদের জায়গা বানিয়ে নিচ্ছেন। আজ এমন আরেক ট্রান্সজেন্ডারের গল্প আপনাদের বলবো, যার নাম মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় (Manabi Bandyopadhyay)। যিনি ভারতের প্রথম কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছেন (Indian First Transgender College Principal)। চলুন বিস্তারিত জেনে নিন।

Transgender

প্রসঙ্গত, এর আগে ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার আইপিএস হয়েছেন ঐশ্বরিয়া ঋতুপর্ণা প্রধান। অন্যদিকে ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নর্তকী নটরাজ, যিনি পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছেন। এবার এই প্রথম কোনো ট্রান্সজেন্ডার কলেজের অধ্যক্ষ হলেন। একজন ট্রান্সজেন্ডারের পক্ষে এ সমাজে পড়াশোনা করা খুবই কঠিন। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, পড়া লেখা শেষ করে সফল হয়েছেন বাংলার এই ট্রান্সজেন্ডার।

মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি ট্রান্সজেন্ডারদের কাছে এক অনুপ্রেরণা। তাঁর জন্ম নৈহাটিতে। জন্মের সময় তাঁর নাম ছিল সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শৈশব কাটিয়েছেন নদীয়া জেলায় (Nadia District)। যেখানে তাঁকে অনেক কষ্ট ও অপমান সহ্য করতে হয়েছিল। তিনি ছেলে হয়ে জন্ম নিলেও, তাঁর আচরণ ছিল মেয়েদের মতো। তিনি বাড়িতে মেয়েদের পোশাকে পরে থাকতেন। তবে বাড়ির বাইরে বের হলে তাঁকে ছেলেদের পোশাক পরে বাইরে যেতে হতো।

Manabi Bandyopadhyay

২০০৩ সালে তিনি লিঙ্গ পরিবর্তন করার সিন্ধান্ত নেন এবং লিঙ্গ পরিবর্তন করেন। এরপর তিনি পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চিন্তা ভাবনা করেন। শুরু হয় লড়াই। তিনি বাংলায় এম.এ সম্পন্ন করেছেন। জানিয়ে রাখি, তিনিই ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার যিনি পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। এরপর ২০১৫ সালে তিনি নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর মহিলা কলেজের (Krishnagar Womens College) কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে নিযুক্ত হন। এভাবেই একজন ট্রান্সজেন্ডার হয়েও মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় যে নজির গড়লেন তা অনেককেই অনুপ্রেরণা যোগায়।