প্রকৃতির ক্ষতি করে বাড়ি নির্মাণ করবেন না, তাই গাছ না কেটেই বাড়ি বানালেন এই ব্যাক্তি

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়ে চলেছে বাসস্থান। একদিকে যেমন নতুন বাড়ি তৈরি হয় অন্যদিকে তেমন অনেক গাছ কেটে ফেলা হয় । আপনারা কি কখনও ভেবে দেখেছেন যখন আমরা নিজের বাড়ি তৈরি করি কত ছোটবড় গাছ নষ্ট করে ফেলি। শুধু তাই নয় বাড়ি বানানোর পরেও জায়গা অবশিষ্ট থাকলে সেইখানের গাছ অপসারণ করে বাগান বানিয়ে ফেলি। আপনার মনের মতো বাড়ি সাজানোর জন্য লাগানো গাছগুলি নষ্ট করা কি নিজেদের নিষ্ঠুর মনে হয় না!

আমরা সকলেই বাড়ির সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য জেনে-বুজে বা অজান্তেই কত গাছ ধ্বংস করে ফেলি। কিন্তু আজ আপনাদের একটি পরিবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেব যারা কোনো প্রাকৃতিক ক্ষতি না করেই তাদের ঘর সাজিয়েছে। যোগেশ কেশওয়ানীর পরিবার মধ্যপ্রদেশের জবলপুর জেলায় থাকে। এই পরিবারটি শহর জুড়ে সন্মানিত । কারণ, এই কেশওয়ানীর পরিবারে এত রকমের গাছপালা আছে যা নার্সারিতেও পাওয়া যাবে না। এমনকি তাদের নির্মানিত বাড়িতে একটি 150 বছরের পুরনো বট গাছও আছে।

এই বাড়িটি আজ থেকে প্রায় 30 বছর আগে তার পিতা তৈরি করেছিলেন। শোনা যায় বাড়ি তৈরির জন্য যখন জমি কেনেন তখন থেকেই এই বট গাছটি ছিল। এই গাছ ঠিক জমির মাঝখানে হওয়ার কারণে বাড়ি তৈরি করতে অনেক সমস্যা হয়েছিল। সেখানে অনেক ধরনের ছোট বড় গাছও ছিল। ওই গাছগুলি নিয়ে বাড়ি নির্মাণের জন্য অনেক সমস্যা হলেও যোগেশের বাবা গাছ অপসারণ করতে রাজি হননি। অবশেষে এক ইঞ্জিনিয়ার মাটি থেকে কোনো গাছ না সরিয়েই বাড়ি বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

বাড়িটি এমন ভাবেই তৈরি করেছিল কোনো বাগান বানানো যায়নি। যোগেশের মতে তার ওই বাড়িতে বাগান বানানোর প্রয়োজনও ছিল না। কারণ, তার বাড়িতেই ছিল বিভিন্ন রকমের গাছ। বাড়িটি নির্মাণ করতে প্রায় বছর খানেক সময় লেগেছিল। যোগেশ বলেছেন যখন বাড়িটি তৈরি হচ্ছিলো তখন আশ পাশের অনেকেই মজা উড়াচ্ছিলো। অনেকে এমন মন্তব্য করেছে বাড়িটি তৈরি করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে তাতে অনেক বড়ো ও সুন্দর বাড়ি বানানো যেত।

তাদের মতে বাড়ির মাঝে কোনো গাছ রাখার দরকার ছিলনা । কিন্তু যোগেশ ও তার পরিবার আশেপাশের কারো কোথায় কোনো তোয়াক্কা না করে তাদের বাড়ি নিজেদের মতোই সাজিয়েছিলো। যোগেশের মতে, একটি গাছ অনেক প্রাণ। তিনি মনে করেন বাড়ির সৌন্দর্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একটা বড় প্রভাব। অনেক শিশুই ওই গাছের ডালে দোলনা করে খেলে বড় হয়েছে। যোগেশ জানান, তাদের বাড়িতে তার মা প্রতিদিন বট গাছে পুজো করতেন বর্তমানে তার স্ত্রী ওই গাছে পুজো করেন।