বাজারে ভরে গিয়েছে নকল আলু, না চিনলে ক্ষতি আপনার! জানুন বিস্তারিত

রান্নার ক্ষেত্রে আলু (potato) খুবই গুরুর্বপূর্ণ একটি সবজি। এই সবজি যেমন রান্নার স্বাদ বদলে দেয়, তেমনই আবার খাবারের পাতে এক দু টুকরো আলু না হলে চলে না অনেকেরই। তবে অনেকেই হয়ত এই বিষয় সম্পর্কে অগবত নন যে প্রচুর পরিমাণে নকল আলু পাওয়া যাচ্ছে, যা আপনি খালি চোখে দেখে বুঝতে পারবেন না।

অনেক সময় ‘হেমাঙ্গিনী’ বা ‘হেমলিনী’ আলু বিক্রি করা হচ্ছে ‘চন্দ্রমুখী’র দামে। এই আলুগুলো চন্দ্রমুখীর মত দেখতে হলেও, স্বাদে আলাদা। তবে এগুলো যদি চন্দ্রমুখী আলুর পাশে রাখা থাকে, তাহলে আপনার চোখে কোনরকম পার্থক্য ধরা পড়বে না।

img 20230220 122858

চন্দ্রমুখী আলুর দাম কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা। কিন্তু হেমাঙ্গিনী আলু পাওয়া যায় ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি প্রতি হিসাবে। তবে এই দুরকম আলুর মধ্যেকার পার্থক্য শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের নজর এড়াতে তে পারে না। কিন্তু ক্রেতারা না বুঝতে পারায়, মুহূর্মুহ ঠকতে হচ্ছে তাঁদের।

হুগলি এগ্রিকালচারাল কো-অপারেটিভ সোসাইটির একজন সদস্য জানান, হেমাঙ্গিনী আলু মূলত একটি মিশ্র জাতের আলু। পাঞ্জাবের বিভিন্ন অঞ্চলে এই আলু চাষ করা হয়। এই আলুর বীজ অন্যান্য রাজ্য থেকে এই রাজ্যে আসে। হুগলির বিভিন্ন জায়গায় এই আলু চাষ হয়। এ আলু চাষে ফলন বেশি হয়।

প্রতি বিঘায় ৫০ থেকে ৬০ বস্তা চন্দ্রমুখী আলু উৎপাদিত হলেও এই আলু উৎপাদন হয় প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ বস্তা। এ আলু উৎপাদনের হার বেশি হলেও বাজারে এ আলুর চাহিদা অনেক কম। প্রথমত, এই আলু ঠিকমতো রান্না করতে চায় না। দ্বিতীয়ত, এই আলুর স্বাদ খুব একটা ভালো হয় না।

হুগলি জেলা কৃষি আধিকারিক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘শহর এলাকার মানুষের পক্ষে বাইরে থেকে হেমাঙ্গিনী আলু এবং চন্দ্রমুখী আলুতে পার্থক্য করা খুবই কঠিন। চন্দ্রমুখী আলু দিয়ে ক্রস ব্রিডিং করে হেমাঙ্গিনী আলু তৈরি করা হয়। এই আলু হাইব্রিড হওয়ায় কম সময়ে ও কম খরচে চাষ করা যায়’।

img 20230220 122910

জানিয়ে রাখি, হুগলি জেলার পুরশুরা ও তারকেশ্বর এলাকায় এই আলু চাষ হয়। চন্দ্রমুখী আলু যা প্রস্তুত হতে যেখানে তিন থেকে চার মাস সময় লাগে, সেখানে এসব হাইব্রিড আলু দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে উৎপাদন হয়। কৃষকরা মৌসুমে দুইবার এই আলু চাষ করতে পারেন।

অনেক অসাধু ব্যবসায়ী এই হেমাঙ্গিনী আলুকে চন্দ্রমুখী আলু বলে বিক্রি করছে। গ্রামবাসীদের বোকা বানানো খুব সহজ নয়, কারণ তারা কৃষিকাজের সাথে জড়িত এবং দেখলেই আলু চিনতে পারে। তবে অসাধু ব্যবসায়ীরা শহরাঞ্চল বা বস্তির মানুষকে সহজেই বোকা বানিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।