অনন্য নজির গড়লেন পুত্রবধূরা, ১০৫ বছর বয়সী শাশুড়ির শেষ যাত্রায় দিলেন কাঁধ! তাজ্জব গ্রামবাসী

কথায় বলে শাশুড়ি (mother in law) ও পুত্রবধূর (daughter in law) মধ্যে কখনই মিলমিশ হয় না। প্রায় সময়ই তাঁদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যায়। শাশুড়ির সেবা করতে অনেক বউমাকেই রাজি হতে দেখা যায় না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শাশুড়ি বউমার এই ঝগড়ার কারণে, স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে ভেঙ্গে গিয়েছে বহু সংসার।

তবে এই ঘটনার ঠিক বিপরীত এক ব্যতিক্রম ঘটনার সাক্ষী থাকল হরিয়ানার সোনিপতবাসী (sonipat)। যেখানে শাশুড়ির শেষ সময়ের কাঁধ দিলেন পরিবারের বউমারাই। শুনতে অবাক লাগলেও, বাস্তবে ঠিক এমনই ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে।

img 20230102 183720

সাধারণত দেখা যায়, হিন্দু ধর্মের নিয়ম অনুসারে বাবা মা মারা যাওয়ার পর তাঁদের অন্তিম যাত্রায় কাঁধ দেয় ছেলেরা। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা গেল এই কাজ করছেন পরিবারের বউমারা। হরিয়ানার সোনিপতের বৌদ্ধ বিহারের ১০৫ বছর বয়সী ফুলপতি যখন মারা গেলেন, তখন তাঁকে কাঁধ দিলেন তাঁর পরিবারের পুত্রবধূরা। এটাই ছিল শাশুড়ি অর্থাৎ ফুলপতির শেষ ইচ্ছা। পুত্রবধূদের অসম্ভব ভালোবাসতেন এই শাশুড়ি, যে কারণে এই অধিকার তিনি তাঁর পুত্রবধূদের দিয়ে গিয়েছিলেন।

পাঁচ ছেলে, তিন মেয়ে, নয় নাতি ও নয় নাতনি রয়েছে ফুলপতির। গত ৫ বছর ধরে শয্যাশায়ী হয়ে থাকার পর হাঁটতে অক্ষম হয়ে পরা ফুলপতির শেষ সময়ে তাঁকে পরিবারের সকলে মিলে খুব যত্ন করতে শুরু করেন। আর সেই সময় তাঁর প্রতি পুত্রবধূদের সেবা থেকে মুগ্ধ হন ফুলপতিও। আর সেই কারণেই, তিনি ছেলেদের বলেছিলেন, তাঁর শেষ সময়ে যেন বউমারা তাঁকে কাঁধে করে শ্মশান নিয়ে যায়- এটাই তাঁর শেষ ইচ্ছা।

বৌদ্ধ বিহার কলোনির মুর্থল রোড়ের বাসিন্দা ফুলপতির দুই ছেলে হরিয়ানা সরকারে এবং দুই ছেলে কেন্দ্রীয় সরকারে অফিসার এবং ছোট ছেলে কৃষিকাজ করেন। গত ২১ শে ডিসেম্বর তাঁদের মা ফুলপতি মারা যাওয়ার পর মায়ের শেষ ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে পরিবারের পুত্রবধূদের মায়ের শেষ যাত্রায় কাঁধ দেওয়ার সুযোগ দেন ফুলপতির ছেলেরা। এই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান গোটা গ্রামবাসী। আর শাশুড়ি বউমার এই প্রেম দেখেও তাঁরা মুগ্ধ হয়ে যান।