কালীপুজোর বাজি মানেই ‘বুড়িমা’, জানেন কে সেই বুড়িমা, শুনেছেন এই বাঙালি মহিলার কাহিনি!

কালি পুজো আসতে আর হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি। কালি পুজোর কথা বললেই ভেসে ওঠে বিভিন্ন ধরণের আতশবাজি (Fire-Works)। বেশ কয়েক বছর হলো পুজোয় শব্দবাজি নিষিদ্ধ করেছে সরকার। শব্দ বাজি ফাটালে হতে পারে জেলও। সে যাই হোক, শব্দ বাজির কথা উঠলেই ভেসে ওঠে একটাই নাম, ‘বুড়িমার চকলেট’ (Burima Chocolate Bomb)। আশি ও নব্বইয়ের ছেলে মেয়েদের কাছে খুবই জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ছিল ‘বুড়িমার চকলেট’। এই বাজি তৈরির পিছনে ছিল একজন নারী। তবে জানেন কে এই নারী(The lady Behind Burima Chocolate Bomb)? তাঁর আসল পরিচয় কি? আসুন তাঁর সম্পর্কে জেনে নিন।
সকলের কাছে পরিচিত ‘বুড়িমা’-এর আসল নাম অন্নপূর্ণা দাস (Annapurna Das)। যিনি বাংলাদেশর ফরিদপুর জেলায় (Faridpur District In Bangladesh) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তবে দেশভাগ তাকে ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় টেনে আনে। দেশভাগের পর আশ্রয় নেয় পশ্চিম দিনাজপুরের ধলদিঘী সরকারি ক্যাম্পে। স্বামীকে হারানোর পর শুরু হয় জীবনের নতুন সংগ্রাম। এক সময় তিনি সব্জি ব্যবসাও করেছিলেন।
এরপর গঙ্গারামপুর থেকে তিনি বেলুড়ে চলে আসেন এবং শুরু করেন বিড়ি বাঁধাইয়ের কাজ। ন’শো টাকার বিনিময়ে তিনি একটি দোকানও কিনে ছিলেন সে সময়। একসময় রং থেকে প্রতিমা- সব কিছুরই ব্যবসা করেছেন এই মহিলা। একপরই একদিন ভেবে বসেন বাজির ব্যাবসা করবে। ভাবনা অনুযায়ী কাজ করলেন, বাজি কিনে এসে দোকান সাজালেন। তবে অনুমতি না থাকায় পুলিশ এসে সেই দোকান ভেঙে দেয়।
তবে বুড়িমা ওরফে অন্নপূর্ণা দাস থেমে যাওয়ার পাত্রী নন। এবার তিনি অনুমতি নিয়ে বিক্রি শুরু করেন। এভাবেই তিনি একদিন বাজি তৈরি করার সিন্ধান নেন। তবে বাজি বাঁধতে তিনি পারতেন না। সেই কাজে তাঁকে সহায়তা করেন বাঁকড়ার আকবর আলির।এর পরই তিনি করে ফেললেন এক বাজিমাত! বাজারে আসলো নুতুন ব্র্যান্ড ‘বুড়িমা’। চারিদিকে বুড়িমা চকলেটের আওয়াজ ছড়িয়ে পড়লো। ডানকুনিতে জমিকিনে রমরমিয়ে ব্যাবসা শুরু করেলেন। বর্তমানে তিনি না থাকলেও আজ মানুষের মুখে রয়ে গেছে ‘বুড়িমা চকলেট’-এর নাম।