প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য দুর্দান্ত সুখবর, একদম সামান্য খরচে জঙ্গলমহলের ‘দুয়ারসিনি’ অরণ্যের মাঝে কাটান ২ দিন

একদম সামান্য খরচে জঙ্গলমহলের 'দুয়ারসিনি’ অরণ্যের মাঝে কাটান ২ দিন

ঘুরতে (Travel) যেতে কম বেশি সকলেই পছন্দ করেন। কোনও জায়গা থেকে ঘুরে (Travel) ফিরলেন, ট্রলি আনপ্যাক করাও হয়নি, মনটা কেমন যেন ‘এরপর কোথায় যাব-কোথায় যাব’ করা শুরু! যদি এই দলেই পড়েন তাহলে কাছে পিঠে ঘোরার প্ল্যান করতেই পারেন। পকেটে চাপ দিয়ে কী আর সবসময় বড় বাজেটের ট্রিপ করা যায়! তার চেয়ে বাড়ির সামনের অজানা জায়গাগুলোই খুঁজে দেখলেই পেয়ে যাবেন এমন জায়গা, যেখানে গিয়ে মন ভরে প্রকৃতিকে অনুভব করতে পারবেন।

Duarsini

পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের পর্যটনকেন্দ্র দুয়ারসিনি (Duarsini)। এখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্র র‍য়েছে। তবে করোনাকালে তা অনেকদিন বন্ধ ছিল। বন্ধ হয়েছিল মাওবাদি অত্যাচারও। তবে ফের খুলেছে দুয়ারসিনির (Duarsini) দরজা। আর এই কদিন নিজেকে বন্ধ রেখে বেশ সুন্দর করে নিয়েছে সে! সেখানে গেলে আরাম উপভোগ করতে পারবেন, কারণ কটেজে বসানো হয়েছে এসিও।

একদম জঙ্গলের মাঝখানে রয়েছে নীল রঙের পর পর কয়েকটি কটেজ। একটি খাবার জায়গা ও একটি ডরমেটরি। তবে এখানে ফোনের নেটওয়ার্ক খুব দুর্বল। তাই যদি কেউ ভেবে থাকেন এখানে এসে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করবেন, তাহলে আপনার জন্য এই জায়গাটি নয়। এখানে আসতে হবে শুধুমাত্র প্রকৃতিকে উপভোগ করতে। সকালে বিকেলে পাখির কিচিরমিচির আপনাকে ভুলিয়ে দেবে হেডফোন কানে লাগিয়ে রক গান শোনার কথা।

কটেজ থেকে একটু এগোলেই রয়েছে ভিউ পয়েন্ট। যেখান থেকে এই অঞ্চলের ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ দেখতে পাওয়া যায়। রাতে চুপ করে বসে থাকতে পারেন ঘরের সামনের একফালি জায়গায় চেয়ার নিয়ে। জঙ্গুলে পরিবেশের মধ্যে রাত কাটানোর অ্যাডভেঞ্চারের টানে দুয়ারসিনি (Duarsini) বরাবরই টানে পর্যটকদের। পরের দিন সকাল সকাল ব্রেকফাস্ট করে একটা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন টটকো জলাধার, হাড়গাড়া জঙ্গল, রাইকা পাহাড়, বুড়িঝোর গ্রামের ঝর্না দেখতে।

Duarsini

দুয়ারসিনির পাশ দিয়েই বয়ে চলছে সাতগুড়ুম নদী। সেখানে দুদণ্ড সময় কাটাতে পারেন। ঘাটশিলাও ঘুরে আসতে পারেন। বিশেষ করে ফেরার দিন একটা গাড়ি ভাড়া করে ঘাটশিলা ঘুরে স্টেশনে নেমে যান। সেখান থেকে বিকেলের ট্রেন ধরে সোজা কলকাতা। বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ‘গৌরীকুঞ্জ’, পঞ্চপাণ্ডব টিলা আর পাহাড়ের গায়ে বিখ্যাত সেই কালী মন্দির, বুরুডি লেক, ধারাগিরি ফলস। আরও অনেক জায়গা আছে ঘাটশিলায় ঘোরার জন্য।

কীভাবে যাবেন:

রোড ট্রিপ যারা করবেন তারা গুগল ম্যাপ দেখে যেতে পারেন। আর ট্রেনের কথা বললে ঘাটশিলা যাওয়ার জন্য রয়েছে অনেক ট্রেন। হাওড়া-বারবিল জনশতাব্দী এক্সপ্রেস সকাল ৬:২৫-এ হাওড়া থেকে ছেড়ে ঘাটশিলা পৌঁছোয় সকাল ৯.১৫-তে। ইস্পাত এক্সপ্রেস সকাল ৬:৫৫-তে হাওড়া থেকে ছেড়ে ঘাটশিলা পৌঁছোয় সকাল ৯:৫০-এ। এই দুটো ট্রেনই আদর্শ। রয়েছে লালমাটি এক্সপ্রেসও।

ট্রেন ছাড়ে প্রতি মঙ্গল আর শনিবার। সকাল সাড়ে আটটায় হাওড়া থেকে রওয়ানা দেয় আর ঘাটশিলা পৌঁছোয় সকাল সাড়ে ১১টায়। এবার স্টেশন থেকে বেরিয়ে খেয়ে নিন গরম গরম কচুরি আর তরকারি। তারপর ধরুন অটো। দেখবেন অটোস্ট্যান্ডে রেট চার্ট লাগানোই থাকে। চাইলে যে অটো করে হোটেল পৌঁছলেন তাকেই বলে দিতে পারেন পরেরদিন সকালে আশপাশ ঘুরে দেখানোর জন্য।

কোথায় থাকবেন:

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্র। অনলাইনে বুক করতে হবে। চার জনের রুম ও ডরমেটরি রয়েছে এখানে। রুমের ভাড়া ২০০০ টাকা প্রতি রাতে। এসি রয়েছে বাথরুম একেবারে ঝাঁ চকচকে। আর ডরমেটারি-তে চারজন থাকতে পারেন। শেয়ার করার ব্যবস্থাও আছে। একটি বেডের এক রাতের ভাড়া ২০০ টাকা। খাবার আপনি যেমন খাবেন তেমন দাম। তবে দেরি না করে ঘুরে আসুন।