সাইকেলের পাম্পচার সেরে কাটাতে হতো জীবন, আজ IAS পরীক্ষায় সফল হয়ে হলেন DM

এর আগে সাফল্যের অনেক গল্পই সবাই জেনেছে। তেমনই আবারও এক সাফল্যের গল্পই উঠে এসেছে। আজ এমন একজন ব্যক্তির কথা বলা হবে যার এক সময় পড়াশোনার জন্য এক টাকাও ছিল না। তবে আজ তিনি আইএএস অফিসার হয়ে দেখিয়েছেন। এটা কোন অলৌকিক ঘটনা নয় বরং তার পরিশ্রমের ফল। আজ IAS অফিসার বরুণ বার্নওয়ালের (Barun Barnwal) কথা বলা হবে।

যিনি একটি সাইকেলের দোকানে কাজ করতেন। অর্থের অভাবে, কোনও সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই কীভাবে এই ব্যক্তি ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইএএস হয়েছেন। বরুণ মহারাষ্ট্রের বোইসার শহরের বাসিন্দা। যিনি২০১৩ সালের UPSC পরীক্ষায় ৩২ তম স্থান অর্জন করেছিলেন। বরুণের জীবনে তার মা, বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

বরুণ বলেছিলেন যে তার জীবনে এমন একটি সময় এসেছিল যখন তাকে সাইকেলের সারাতে হয়েছিল। তিনি পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু পড়াশোনার জন্য টাকা ছিল না। দশম শ্রেণির পড়া শেষ করেই সাইকেলের দোকানে কাজ করতে হয়। কারণ পরবর্তী পড়াশোনার জন্য টাকা যোগাড় করা কঠিন ছিল। তিনি জানান, ২০০৬ সালে তিনি দশম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

পরীক্ষা শেষ হওয়ার তিনদিন পর বাবা মারা যান। এরপর ভেবেছিলেন লেখাপড়া ছেড়ে দেবেন। দশম শ্রেণির রেজাল্ট এলে তিনি স্কুলে টপ করেছিলাম। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যরা অনেক সমর্থন করেছেন। মা বললেন, আমরা সবাই কাজ করব, তুমি লেখাপড়া কর।’ তিনি বলেন, ‘একাদশ-দ্বাদশ আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন বছর। সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যেতাম, তারপর দুপুর ২টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টিউশনি করতাম। তারপর দোকানে হিসাব করতাম।’

বরুণ জানান, দশম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য আমাদের বাড়ির কাছে একটাই ভালো স্কুল ছিল। এতে ভর্তির জন্য ১০ হাজার টাকা অনুদান দিতে হয়। এরপর মাকে বললাম ‘টাকা নেই, থাকুক আমি এক বছর থাকি। আমি পরের বছর ভর্তি হব’। এরপর টাকার যোগাড় হয় এবং তিবি ভর্তি হয়ে যান।

পড়ালেখায় এক টাকাও খরচ করেননি

বরুণ নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করেন, তিনি বলেছিলেন যে ‘আমি আমার পড়াশোনার জন্য ১ টাকাও খরচ করিনি। কেউ আমার বই, ফরম, ফি পূরণ করত। আমার প্রাথমিক ফি ডাক্তার দিয়েছিলেন। তারপরে টেনশন ছিল প্রতি মাসে স্কুলের ফি কীভাবে দেব। যার পরে আমি ভেবেছিলাম যে আমি ভাল পড়াশোনা করব।’

তখন তার মা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রথম বর্ষের জন্য ১ লাখ টাকা ফি দেন। এরপর আবারও একই ঘটনা ঘটল, বাকি বছরের ফি কীভাবে দেবেন। সে আবার ভাবল আমি ভালো করে পড়াশুনা করব, তারপর কলেজের শিক্ষককে অনুরোধ করব। তিনি আরও বলেন, আমি ৮৬ শতাংশ স্কোর করেছি যা কলেজের রেকর্ড।

এভাবেই শুরু হলো UPSC প্রস্তুতি

বরুণ বলেন, আমার প্লেসমেন্ট খুব ভালো হয়ে গেছে। আমার কাছে অনেক কোম্পানি থেকে চাকরির অফার ছিল। ততক্ষণে আমি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। বরুণ মন ঠিক করেছিল কিন্তু কীভাবে প্রস্তুতি নেবে বুঝতে পারছিল না।
এরপর তার ভাই তাকে সাহায্য করেন। তিনি বলেন, ইউপিএসসির প্রিলিমিনারি পরীক্ষার রেজাল্ট এলেই, ‘ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম আমার র‍্যাঙ্ক কত এসেছে- পরে জানতে পারি ৩২। কথাটা শুনে বরুণের চোখে জল আসে।