মধুবালা-নার্গিস নন বরং এই সুন্দরী অভিনেত্রী ছিলেন বলিউডের প্রথম গ্ল্যামার গার্ল, দিলীপ কুমারের সাথে ছিল বিশেষ সম্পর্ক

একসময় বলিউডে জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন বেগম পারা এবং আজ তার ছেলেও একজন বড় অভিনেতা

বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি (Bollywood film industry)  হচ্ছে এমন একটি ইন্ডাস্ট্রি যেখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যেমন দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য জনপ্রিয়, ঠিক তেমন জনপ্রিয় তাদের সৌন্দর্য্যের দিক থেকেও তেমন জনপ্রিয় হয়। যেমন সুন্দর মুখ তেমন ভালো ফিগার বা বডি। আর শুধু এখন না যবে থেকে বলিউড আছে তবে থেকেই বলিউডের (Bollywood film industry) অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অভিনয় ও সৌন্দর্য্যের দিক থেকে সবার আগে থাকে। আজ আমরা এই আর্টিকেলে বলিউডের ৭০ বা ৮০ দশকের এমন এক অভিনেত্রীর (Bollywood actress) বিষয় আলোচনা করবো যিনি অভিনয়ের সাথে সাথে রূপেও ছিলেন ১ নম্বর স্থানে। এই হিরোইন ৭০ বা ৮০” দশকে যেমন রাজত্ব করেছে ঠিক তেমনি তার ছেলেও একজন বড় অভিনেতা হয়ে রাজত্ব করেছেন ও জনপ্রিয় অভিনেতা হয়ে উঠেছেন। আসুন জেনেনি এই মা ও ছেলের ব্যাপারে।

৭০ বা ৮০ দশকে সব হিরোইনদের (Bollywood actress) সৌন্দর্য্যকে হারিয়ে গ্ল্যামার গার্লের খেতাব নিজের নামে করেছিলেন অভিনেত্রী বেগম পারা (Begam para) । যদিও এনার আসল নাম ছিল জুবেদা উল হক। ইনি ১৯৪০ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত বলিউডে এক্টিভ ছিলেন। ১৯৫১ সালে ফটোগ্রাফার জেমস বার্ককে লাইফ ম্যাগাজিন ফটো শুটের জন্য পোজ দিয়েছিলেন। এরপর তিনি বিদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। বলা হয় যে আমেরিকার সৈনিকরা তার প্রতি এতটাই মুগ্ধ ছিল যে তার ফটো তারা পকেটে নিয়ে ঘুরতো।

বেগম পারার জন্ম ব্রিটিশ ভারতে হয়েছিল যেটি এখন পাকিস্তানের অংশ। তার পিতা মিয়ান এহসানুল-হক একজন বিচারক ছিলেন আর তিনি সেই সময় বিকানের রাজ্যের বিচার বিভাগীয় সেবায় গিয়েছিলেন। এটি এখন উত্তর রাজস্থান হিসেবে পরিচিত।
সেখানে তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে কাজ করছিলেন এছাড়া বেগম পারার বাবা নিজের সময়ের একজন সেরা ক্রিকেটারও ছিলেন। এমতাবস্থায় বেগম পারার শৈশব কেটেছে বিকানেরে। আর তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভও করেছিলেন।

এরপর বেগম পারার (Begam para) অভিনয় এন্ট্রির গল্পটা বেশ মজাদার। আসলে বেগম পারার ভাইও একজন অভিনেতা হতে চাইতেন। তাই ১৯৩০ সালে তিনি বোম্বেতে গেছিলেন। মুম্বাইতে তার ভাইয়ের আলাপ বাঙালি অভিনেত্রী প্রতিমা দাশগুপ্তের সাথে হয়েছিল এবং সেই আলাপ প্রেমের সম্পর্কে বদলে গেছিল আর তাই তারা দুজন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। বেগম পারা যখন তার দাদা-বৌদির সাথে দেখা করতে আসতেন তখন তিনি তার বৌদির গ্ল্যামারেস জীবনযাপন দ্বারা খুব প্রভাবিত হতেন। এমনকি অনেকবার তিনি তার দাদা বৌদির সাথে বিভিন্ন ইভেন্টেও গেছেন। ইভেন্টে তার লুককে দেখে অনেক ফিল্মের অফার পাচ্ছিলেন বেগম পারা। এরপর  শশধর মুখার্জি ও দেবিকা রানীও বেগম পারাকে ফিল্মের অফার দিয়েলেন।

তারপর শেষমেষ প্রথম বিরতি তিনি পেয়েছিলেন ১৯৪৪ সালে চাঁদ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ছবিতে তাঁর নায়ক ছিলেন প্রেম আদিব এবং ছবিতে ভ্যাম্প ছিলেন সিতারা দেবী। যদিও তিনি কোনোদিন একজন অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। তার বরাবর গ্ল্যামার পুতুলের ইমেজ ছিল আর সেই কারণেই তিনি কাজ পেতেন।

বেগম পারার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে বলতে গেলে তিনি  দিলীপ কুমারের ভাই নাসির খানকে বিয়ে করেছিলেন। নাসিরের মৃত্যুর পর বেগম পারা ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গেছিলেন। বেগম পারার স্বামী ১৯৭৪ সালে মারা যান আর ১৯৭৫ সালে পাকিস্তানে চলে যান বেগম পারা। আবার তার দুই বছর পর বেগম পাড়া ভারতে ফিরে এসেছিলেন এবং ‘সোনি মাহিওয়াল’, নীল কমল, ‘লায়লা-মজনু’ এবং ‘কিসমত কা খেলা’-এর মতো ফিল্মে গুরুত্বপূর্ন চরিত্রতে অভিনয় করেছিলেন। তাকে শেষ দেখা গিয়েছিল ২০০৭ সালে সঞ্জয় লীলা বানসালির সাওয়ারিয়াতে সোনম কাপুরের দাদির চরিত্রে। তার পরের বছর ২০০৮ সালে তিনি মারা গেছিলেন। বেগম পারারতিনটি সন্তান রয়েছে। তার ছেলে অভিনেতা আইয়ুব খান চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন এবং বর্তমানে একজন বড় টিভি অভিনেতা আর টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে আইয়ুব অনেক জনপ্রিয়।