গোবর দিয়ে এক অনন্য বাড়ি তৈরি করে তাক লাগালো হরিয়ানার অধ্যাপক, বাড়িতে রয়েছে এই বিশেষত্ব

ঘর একটি এমন জায়গা যেখানে আমরা নিরাপদে থাকতে পারি। সবাই নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী বাড়ি তৈরি করে। যদি আগের সময়ের কথা বলা হয় তবে মানুষ বেশির ভাগই মাটি দিয়ে বাড়ি তৈরি করত। যার কারণে গ্রীষ্মের দিনেও মাটির ঘর খুব ঠাণ্ডা থাকত। সময় বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে মানুষ সিমেন্ট, ইট, বালি দিয়ে ঘর তৈরি করতে থাকে।

আজকাল মানুষ নিজেদের থাকার জন্য বড় বড় বাড়ি তৈরি করে। তবে কখনো কি শুনেছেন গোবরের ঘরও বানানো যায়। রোহতকের এক অধ্যাপক গোবর দিয়ে ঘর তৈরি করেছেন। হরিয়ানার রোহতকে বসবাসকারী ডাঃ শিব দর্শন মালিক গোবর থেকে একটি বাড়ি তৈরি করেছেন।

প্রফেসর গোবর দিয়ে ঘর বানিয়েছেন

আসলে হরিয়ানার রোহতকে মদিনা নামে একটি গ্রাম রয়েছে। এখানে বসবাসকারী ডাঃ শিব দর্শন মালিক একটি বাড়ি তৈরি করেছেন যেখানে ইট বা সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। গোবর ব্যবহার করে এই অনন্য বাড়িটি তৈরি করেছেন ডাঃ শিব দর্শন মালিক। শিব দর্শন মালিক তার ষাঁড় ও বাছুরের গোবর ব্যবহার করেছেন পুরো বাড়িটি তৈরিতে। এছাড়াও মাটি, চুন এবং গাছপালা ব্যবহার করা হয়েছে এটি তৈরিতে।

এভাবেই এলো গোবরের ঘর বানানোর ভাবনা

শিব দর্শন রসায়নে পিএইচডি করেছেন। পড়াশুনার পর তিনি অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেন। একদিন রাতে বাতি নিভে গেলে গরমে অস্থির হয়ে পড়েন তিনি। তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি এর সমাধান খুঁজে বের করবেন। এর পরে তিনি প্লাস্টার এবং গাউক্রেট তৈরি করেন। লোকেরা যখন শুনল যে গোবর ঘর তৈরিতে ব্যবহার করা হয়, তখন তাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে এটি সহজেই আগুন ধরে যায়।


এছাড়াও এটি সহজেই গলে যাবে। তবে যখন গাউক্রেতে বা বৈদিক প্লাস্টার ব্যবহার করা হয়, তখন এটি গোবর হলেও জ্বলে না বা গলে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে না। ঘরের তাপমাত্রাও বাইরের তাপমাত্রার থেকে ৭ ডিগ্রি কম থাকে, যা এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য।

গোবর দিয়ে ঘর বানানোর প্রশিক্ষণ দিন

ডাক্তার শিব দর্শন মালিকও লোকদের গোবর থেকে ঘর তৈরির প্রশিক্ষণ দেন। এ পর্যন্ত দেড়শ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তার কাছ থেকে। পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, জয়পুর, আজমির, দিল্লি, গুজরাট, মহারাষ্ট্র এবং ছত্তিশগড়ের মানুষ এই প্রযুক্তি দিয়ে বাড়ি তৈরি করেছেন।

ডাঃ শিব দর্শন মালিকের কথায়, ‘দিল্লিতে বসে কেউ যদি আমার কাছ থেকে গাউক্রেতে বা বৈদিক প্লাস্টার নেয়, তাহলে এখান থেকে পাঠাতে অনেক টাকা খরচ হবে। পরিবহনে ডিজেল ও পেট্রোলও খরচ হবে। তাই আমি মানুষকে এটি তৈরি করতেও প্রশিক্ষণ দিই।’