বড়ো হতেই ছেলে হতে শুরু করে এই গ্রামের মেয়েরা, হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণ খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা
অধিকাংশ ছেলে মেয়েদের জন্য বয়ঃসন্ধিকালের সময়টা একটু কঠিন সময় হয়। এই সময় ছেলে-মেয়েদের গলার আওয়াজে পরিবর্তন ঘটে, মুদ সুইং হয়, এমনকি দেহের কিছু কিছু অঙ্গে চুল গজাতে শুরু করে যেই সব জায়গায় আগে কখনো চুল ছিল না। বয়ঃসন্ধিকালের সময় ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এই পরিবর্তন গুলি খুব স্বাভাবিক।
কিন্তু যদি বলি পৃথিবীর বুকে একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে একটা বয়সের পর মেয়েরা ছেলেতে পরিণত হয়ে যায় তাহলে বিশ্বাস করবেন ? আপনার উত্তর নিশ্চই না হবে। তবে জানিয়ে দি এই ঘটনাটি একদম সত্যি ঘটনা। ডোমিনিকোন রিপাবলিক দেশে লা সেলিনাস নামক একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে মেয়েদের জেন্ডার একটি বয়সের পর পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং মেয়ে গুলি ছেলেতে রূপান্তরিত হয়ে যায়। এই কারণে এখানকার বাসিন্ধারা এই গ্রামটিকে অভিশপ্ত গ্রাম হিসেবে গণ্য করে। এইরকম কেন হয় সেই বিষয় বৈজ্ঞানিকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরও জানতে পারেনি।
লা সেলিনাস গ্রামের মেয়েরা ১২ বছর বয়সে পৌঁছানোর পর ধীরে ধীরে ছেলেতে রূপান্তরিত হতে শুরু করে। এই কারণে গ্রামের অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। গ্রামের লোকেরা মনে করেন যে এটি কোনো অদৃশ্য শক্তির প্রকোপের কারণে ঘটছে। কিছু বয়স্ক লোক এই গ্রামটিকে অভিশপ্ত গ্রাম মনে করেন। যেইসব মেয়েরা ছেলেতে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে তাদের গুয়েবেডোসেস বলা হয়।
গ্রামে যদি কোনো পরিবারে মেয়ের জন্ম হয় সেই পরিবারে শোকের ছায়া নেমে পরে কারণ সেই পরিবার এই ভেবে দুঃখী হয়ে পরে যে তাদের মেয়েও বড় হয়ে ছেলেতে পরিণত হয়ে যাবে। এই অলৌকিক ঘটনার কারণে গ্রামে দিন দিন মেয়ের সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং আশেপাশের মানুষরা এই গ্রামটিকে খারাপ চোখে দেখে।
রিপোর্ট থেকে জানা গেছে সমুদ্র তীরে অবস্থিত এই গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ৬০০০। মেয়ে হটাৎ ছেলেতে রূপান্তর হয়ে যাওয়ার আশ্চর্য ঘটনার জন্য এই গ্রামটি গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানীদের কাছে গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছি যে এই ঘটনা নাকি জেনেটিক ডিসঅর্ডার রোগের জন্য ঘটছে।
স্থানীয় ভাষায় এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের ‘সিউডোহার্মাফ্রোডাইটস’ বলা হয়। যেই সব মেয়েরা এই রোগে আক্রান্ত হয় তাদের একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে পুরুষের মতো অঙ্গ গঠন শুরু হয়, তাদের কন্ঠ ভারী হতে থাকে এবং শরীরে সেইসব পরিবর্তন আসতে শুরু করে যা একটা পুরুষের আসা উচিত। আর এইভাবেই একটি মেয়ে সম্পূর্ন ছেলেতে পরিণত হয়ে যায়। গ্রামে ৯০ শিশু-কন্যার মধ্যে একজন এই রোগে আক্রন্ত হচ্ছে।