প্রথম সুযোগেই কিস্তিমাৎ! বছর ২৫-র অনন্যা ইউপিএসসিতে সফল হয়ে এখন বাংলার আইএএস
অনন্যা সিংহ (Ananya Singh), দেখে কলেজ পড়ুয়া বলে মনে হলেও, এরই মধ্যে দেশের প্রশাসনিক কাজের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে যোগ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরে। ‘স্পেশ্যাল ডিউটি’র ডাক পেয়ে মাঝে মধ্যেই কাজে দৌড়ে যেতে হয় পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের একজন আইএএস অফিসার অনন্যা সিংহকে।
২০১৯ সালে প্রথম বার ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়ে মাত্র ২২ বছর বয়সেই আইএএস হওয়ার পরীক্ষায় সফল হন অনন্যা সিংহ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘প্রথমবার পরীক্ষা দিয়ে মনের মত না হওয়ায় দ্বিতীয়বার পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ইউপিএসসি মেন পরীক্ষার জন্য উত্তর লেখার অভ্যাসও করেছি’।
২০১৩ সালে আইসিএসই ৯৬ শতাংশ নম্বর এবং ২০১৫ সালে আইএসসিতে ৯৮.২৫ শতাংশ নম্বর অর্জনকারী অনন্যাকে দ্বিতীয়বার আর এই পরীক্ষায় বসতে হয়নি। তার আগেই দেশের মধ্যে ৫১ তম স্থানাধিকার করেছিলেন এই তনয়া। ছোট থেকে বরাবরই পড়াশুনায় ভালো ছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদের অনন্যা ইলাহাবাদের সেন্ট মেরিজ কনভেন্টে প্রাথমিক পড়াশুনা শেষ করে দিল্লির শ্রীরাম কলেজ অফ কমার্স থেকে বাণিজ্য এবং অর্থনীতিতে স্নাতক পাশ করেন। জেলা আদালতের প্রাক্তন বিচারক হলেন অনন্যার বাবা এবং প্রয়াগরাজের ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রুরাল টেকনোলজির প্রবীণ অধ্যাপক হলেন মা অঞ্জলি সিংহ। যার ফলে ছোট থেকেই আইএএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন অনন্যা।
সেই কারণে ২০১৭ সাল থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তিনি। তবে সারাদিন পড়াশুনা নিয়েই থাকতেন না অনন্যা। প্রথমদিকে দিনে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করলেও, পরের দিকে ৬ ঘণ্টা করে পড়তেন। এই পরীক্ষার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হলেও, অনন্যা পরিশ্রমের থেকে বেশি জোর দিয়েছিলেন পরিকল্পনায়।
পরীক্ষায় বসার পূর্বে হাতে থাকা ২ বছয় সময়টাকে সুন্দরভাবে পড়াশুনার জন্য ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি। কারেন্ট অ্যাফেয়ার, মক টেস্ট এবং মেইন এই তিনটে ভাগে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আবার সিন্থেসাইজ়ারও বাজাতেন তিনি। এমনকি সময় পেলে পড়তেন নানারকম বইও।
এইভাবে ২০১৯ সালের পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর ২০২১ সাল অবধি মুসৌরিতে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে আইএএস হওয়ার প্রশিক্ষণ নেয় অনন্যা। ওই বছর বাংলায় কাজ করার পর দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হিসাবে কাজ করেন। তারপর মাত্র ২৫ বছর বয়সেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের স্পেশ্যাল ডিউটি অফিসার হিসাবে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অনন্যা।