এই ৫ জন মহিলা পেয়েছেন পদ্ম সন্মান, যাদের সাহসিক কাজ শুনলে অবাক হবেন আপনিও

গতকাল রাষ্ট্রপতি ভবনে সিভিল এনডাউমেন্ট অনুষ্ঠান করা হয়েছে। ২০২১ সালে যাদের পদ্ম পুরস্কারের জন্য নাম ঘোষণা করা হয়েছিল তাদের অনুষ্ঠানে পুরুস্কার দেওয়া হলো। পুরুস্কারটি তিনটি বিভাগে দেওয়া হয়েছে। প্রথমটি – অসাধারণ এবং বিশিষ্ট পরিষেবার জন্য, দ্বিতীয়টি – উচ্চমানের বিশিষ্ট পরিষেবা এবং পদ্মশ্রী পুরুস্কার – বিশিষ্ট পরিষেবার জন্য। আসুন জেনে নিন কয়েকজন নারীর গল্প, যাদের নিজস্ব সংগ্রামের কাহিনী আপনি জানলে নিজেও অনুপ্রাণিত হবেন।

১. দুলারি দেবী (শিল্প) –

তিনি বিহারের মধুবনী জেলার রতি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল। শশুর বাড়ির অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য ৭ বছর পর তিনি মায়ের কাছে ফিরে আসেন এবং লোকের বাড়িতে কাজ করতে শুরু করেন। তিনি বিখ্যাত মধুবনী শিল্পী কার্পুরী দেবীর সংস্পর্শে আসার পর তাঁর জীবন বদলে যায়। তিনি ৭০০০ মিথিলার ছবি করেছেন। তাঁর শিল্পকর্মের জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের কাছেও তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি এ বছর পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতির কাছে।

২. ভূরি বাই ( শিল্প) –

তিনি মধ্যপ্রদেশের ঝাড়ুয়া জেলার পিটোল গ্রামের বাসিন্দা। এই গ্রামটি প্রধানত আদিবাসী সম্প্রদায়। গ্রামের মানুষদের অন্ধবিশ্বাস মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হলে ছবি আঁকা পাপ। তাই সেসময় মেয়েরা সেসময় ছবি আঁকতে পারবে না। তিনি সমাজের এই সংকীর্ণ মনোভাব দূর করেছেন। তিনি চিত্রকলার ক্ষেত্রে আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছেন। মধ্যপ্রদেশ সরকার তাঁর শিল্পকলা জন্য তাঁকে অনেক পুরস্কার দিয়েছেন। এবছর কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করলেন।

৩. বোম্বে জয়শ্রী রামনাথ –

তিনি কলকাতার বাসিন্দা। তিনি পাঁচটি ভাষায় গান গেয়েছেন। তিনি যে যে ভাষায় গান গেয়েছেন, সেগুলি হলো তামিল, তেলেগু, কন্নড়, মালায়ালাম এবং হিন্দি। তিনি এবছর পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন।

৪. ছুটনী দেবী (সমাজসেবা) –

তিনি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তাঁকে ২৫ বছর আগে ডাইনি বলে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি হাল ছাড়েননি। সমাজের এই চিন্তা ধারা তিনি পরিবর্তন করেছেন। সমাজের যেসব মেয়েরা তাঁর মত হয়রানির শিকার হয়, সেরকম ৭০ জন মেয়েকে নিয়ে তিনি সমাজসেবার একটি দল তৈরি করেছেন।

৫. প্রকাশ কৌর ( সমাজসেবা) –

তিনি পাঞ্জাবের বাসিন্দা। মেয়ে হয়ে বাড়িতে জন্মেছিল বলে তাঁকে বাড়ি থেকে পরিত্যাগ করা হয়েছিল। তিনি তাঁর দুঃখকে শক্তি বানিয়েছেন। তিনি আজ সমাজসেবা করেন। যেসব পরিবারের সদস্যরা মেয়েদেরকে বাইরে ছুড়ে ফেলে দেয়। তাঁদের নিজের মেয়ের মতন ভালোবাসা তিনি দেন। মাত্র ২৩ বছর বয়স থেকে তিনি এই উদ্যোগ নিতে শুরু করেছিলেন।