জবাব দিয়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা, কিডনির ৬৫ শতাংশ দিয়ে বাবাকে বাঁচালেন ছেলে

মানুষের জীবন কিছুটা দিন রাতের মত। দিনের উজ্জ্বল আলোর পর যেমন আসে রাতের নিকষা অন্ধকার, আবার সেই অন্ধকার পেরিয়ে দেখা যায় ভোরের আলো। ঠিক তেমনই মানুষের জীবনেও দেখা যায় আলো ছায়ার প্রভাব। তবে জীবনের খারাপ সময়টাকে কাটিয়ে উঠে, আবারও ফিরতে হয় জীবনের মূল স্রোতে। ঠিক এভাবেই জীবনের মূল স্রোতে ফিরলেন পিতা এবং পুত্র।

নিজের কিডনির ৬৫ শতাংশ নিজের বাবাকে দান করে বাঁচিয়ে তুললেন বাবাকে। বাবা ছেলের এমন সম্পর্কের কাহিনী শুনে অনেকের চোখেই জল চলে এল। জীবনে কোনদিন বিড়ি সিগারেট ও মদ স্পর্শ করেননি তাঁর বাবা। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য চিকিৎসকের কাছে যেতেই, চিকিৎসকরা জানায়, হাতে খুব বেশি সময় নেই। কারণ তাঁর বাবার কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।

হাতে রয়েছে মাত্র ৬ মাস। এমন কথা শুনে অসহায় হয়ে পড়ে ছেলে। এই সময় কি করবে সে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না। ছেলে জানায়, ‘চিকিৎসকদের থেকে এমনটা শোনার পর থেকে বাবাকে সবসময়ই আমি খুশি রাখার চেষ্টা করতাম। সবসময় ভিডিও কলে কথাও বলতাম। এমনকি লুডো খেলতে বসে, ইচ্ছাকৃত ভাবে বাবাকে জিতিয়েও দিতাম সবসময়। শুধু আশা ছিল, একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে’।

একদিকে বাবার শারীরিক অসুস্থতা, আর অন্যদিকে নিজের পড়াশুনা- দুইই সমানভাবে ব্যালন্স করে চলছিলেন ছেলে। এরই মধ্যে ছেলে সিদ্ধান্ত নিলেন বাবাকে বাঁচাতেই হবে। আর সেই কারণে নিজের কিডনির ৬৫ শতাংশ বাবাকে দান করার সিদ্ধান্ত নিলেন। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার পর সবকিছু টেস্ট করার পর দেখা যায়, বাবার সঙ্গে তাঁর রিপোর্টে মিল থাকলেও তার লিভার খুব ফ্যাটি। সেই কারণে অনেক কসরত, ব্যায়াম করে নিজের ওজন কমান ছেলে।

এরপর একটা সময় চিকিৎসকদের থেকে সম্মতি পেয়ে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রস্তুত হয় তাঁরা দুজনেই। এরপর ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে, জীবন যুদ্ধে দুজনেই জয়লাভ করতে সক্ষম হন। ছেলে জানায়, ‘আমাদের অস্ত্রোপচার শেষ হওয়ার আগেই আমি স্নাতক পাস করে যাই। এই খবরটা বাবাকে দিতেই, বাবা বলেন-তোমার মত ছেলের বাবা হত পেরে আমি গর্বিত’।