কেসি দাস, যিনি প্রথম ব্রিটিশদের পণ্য ত্যাগ করে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন। আসলে একসময়ে ব্রিটিশরা ভারতে তাদের দেশের উৎপাদিত পণ্য ভারতে বিক্রি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছিলেন। কিন্তু ভারতীয় ব্যবসায়ীরা কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিল। এরম সময় বিপ্লবী খগেন চন্দ্র দাস হরফে কেসি দাস বাজারে দেশীয় পণ্য এনেছিল। তিনি প্রথম দেশীয় সাবান মার্গো ভারতে উৎপাদন করেছিলেন। যা এখনও অবধি বাজারে বিক্রি হয়।
বিপ্লবী খগেন চন্দ্র দাস পশ্চিমবাংলার ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা রায় বাহাদুর তারক চন্দ্র দাস, তিনি পেশায় একজন বিচারক ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ সরকারকে সাপোর্ট করতেন। কিন্তু খগেন চন্দের মা মোহিনী দেবী, তিনি গান্ধীবাদী চিন্তা ধারা মানুষ ছিলেন। তিনি কখনোই ব্রিটিশ সরকারকে সাপোর্ট করতেন না এবং স্বাধীনতার কর্মসূচিতেও অংশ নিতেন তিনি। খগেনও মায়ের মতোন দেশের স্বাধীনতার জন্য চিন্তা ভাবনা পোষণ করতেন।
তিনি কলকাতা থেকে শিক্ষা শেষ করার পর শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই সময় ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল দিন দিন। ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় বাজার সম্পূর্ণ নিজের দখল করে নিয়েছিল। তিনি সেই কারণে বিদেশি পণ্য বর্জন এবং দেশীয় পণ্য গ্রহণের জন্য ভারতের মানুষকে বোঝাতে শুরু করেন। তিনি নিজের দেশীয় পণ্য উৎপাদন করতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু তাঁর বাবা রায় বাহাদুর ছেলের চিন্তাধারা একদমই পছন্দ করতেন না। তিনি তার ছেলেকে ব্রিটেনে পড়ানোর জন্য পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বিদেশে যেতে চাননি অবশেষে তিনি ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর দা এডভান্সমেন্ট অফ সাইন্টিফিক ইন্ডাস্ট্রি থেকে বৃত্তি পেয়ে আমেরিকাতে পড়ার জন্য প্রস্তাব পেয়ে আমেরিকায় যান। এরপর তিনি স্নাতকের পড়া শেষ করে জাপানে গিয়েছিলেন। জাপানের বণিকদের কাছে ব্যবসার কিছু সূক্ষ বিষয় শিখেছিলেন। ভারতে এসে প্রথম তিনি কেমিক্যাল কোম্পানি তৈরি করেছিলেন। তিনি টয়লেট সামগ্রীও তৈরি করেছিলেন। তা ছাড়াও তিনি মার্গো সাবান এবং নিম ফেসপ্যাকও উৎপাদন শুরু করেছিলেন ভারতে প্রথম।