সপ্তম শ্রেণীতে ফেল হওয়ায় ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলেন বাবা, আজ ৫০ কোটি টাকার মালিক

প্রায়ই শোনা যায় যে পারিবারিক কলহ জনিত কারণে যেসব বাচ্চারা ছোট থেকে বিপথগামী হয় তারা জীবনে অসফল হয়। কিন্তু এমন কিছুও বাচ্চা আছে যারা চরম কষ্ট সহ্য করার পর নিজেদের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করে। এ রকমই একজন হচ্ছেন গুজরাটের আনন্দের বিমল প্যাটেল।

বিমল যখন সপ্তম শ্রেণীতে পড়েন তখন তার বাবার সাথে পাশের বাড়ির এক কলহের মাঝে, তিনি পাশের বাড়ির লোককে খুব জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলেন। তখন তার বাবা তাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তারপর তিনি নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং মুম্বাইয়ে 4 হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি করা শুরু করেন।

বিমলের বাবা হীরে-মুক্তো প্রভৃতি রত্নকে পালিশ করতেন। তার বাবার কাছ থেকে ছোটোবেলা থেকেই এই পালিশের কাজ শিখে ছিলেন তিনি। যেটি মুম্বাইয়ে তার জীবিকা নির্বাহে সাহায্য করে। কিন্তু বিমল সাথে এটাও বুঝতে পেরেছিল যে শুধু এতেই তার অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না। তাই সে কিছু টাকা সঞ্চয় করতে থাকে।

এসময় তার কিছু বন্ধু রত্নের দালালের কাজ করতো। বিমল তাদের কাছ থেকে ব্যবসা শিখে। 1998 সালে সে নিজের ব্যাবসা শুরু করে। যেখান থেকে তার প্রতিদিন 1,000-2000 টাকা করে আয় হত। তিনি মুম্বাইয়ের শহরতলীতে প্রবেশ করে, 50000 টাকা সঞ্চয় করেন। 1999 সালে তিনি ‘বিমল জেমস’ নামে নতুন দোকান খোলেন।

ব্যবসার প্রথম থেকেই তিনি নিজের ভাইদের সাহায্যে ব্যবসা পরিচালনা করলেও পরবর্তীকালে চারজনের সাথে মিলে 15 লাখ টাকার ব্যবসা করতেন। কিন্তু 2001 সালে সঙ্গে কর্মরত এক কর্মচারী 29 লাখ টাকার রত্ন নিয়ে পালিয়ে যান। তাকে এই সমস্ত টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। কিন্তু তিনি হার মানেনি আবার শূন্য থেকে শুরু করেন।

পর 2008 সালে ব্যবসায় মন্দা দেখা যায়। কিন্তু এমন সময় 2009 সালে তিনি প্রথম তার গয়নার দোকান খোলেন। সেখানে একজন জ্যোতিষীকে নিয়োগ করেন যাতে মানুষ সঠিক রত্ন পরতে পারে। তার এই বুদ্ধি ব্যাপকভাবে কাজ করেছিল এবং প্রথম দিনেই তার লাখ টাকা আয় হয়েছিল। আজ সারা মহারাষ্ট্র জুড়ে তাদের 52 টি গয়নার দোকান আছে এবং বিমলের নিকটস্থ 550 জন কর্মরত। তার কোম্পানির টার্ন ওভার হচ্ছে 50 কোটি এবং তিনি 100 কোটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং দেখা যায় যে মানুষের মনোবল যদি ঠিক থাকে তাহলে সব কিছুই সম্ভব।