আস্ত গাড়িকে পরিণত করেছেন ক্লিনিকে, পথচলতি অসহায় মানুষদের যেতে যেতেই করছেন চিকিৎসা

বর্তমানে কিছু অসৎ ডাক্তারের কর্মকাণ্ডের জন্য যেখানে সাধারণ মানুষের ডাক্তারের উপর থেকে ভরসা উঠে গেছে ; ঠিক সেখানেই ডাক্তাররা যে ভগবানের আরেক রূপ তা প্রমাণ করলেন এক চিকিৎসক। ইনি হচ্ছেন ব্যাঙ্গালোরের মালেস্বরমের বাসিন্দা। তিনি আর পাঁচজন ডাক্তারের মতো তার নিজের জীবন ও ক্যারিয়ার চিকিৎসাবিদ্যার প্রতি উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন।

কিন্তু 2010 সালে তার জীবনে এমন এক ঘটনা ঘটে যা তার জীবনে আমূল পরিবর্তন আনে। সেদিন তিনি আর পাঁচ দিনের মতোই তামিলনাড়ুর হসুর-চেন্নাই জাতীয় সড়ক দিয়ে নিজের গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় তার সামনে হটাৎ এক দুর্ঘটনা ঘটে এবং তিনি দুর্ঘটনাগ্রস্থ এক ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা করে হাসপাতালে নিয়ে যান।পরবর্তীকালে রোগীর মা তাকে অনেক ধন্যবাদ জানান এবং তাকে তাদের বাড়িতে আমন্ত্রণ করেন।

সেদিন তাদের বাড়ি গিয়ে উপলব্ধি করেন তিনি এই ব্যাক্তির চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন না করলে ব্যক্তিটিকে প্রাণে বাঁচানো যেত না। এই ঘটনা তার জীবনের এক নতুন মোড় হয়ে দাঁড়ায়। যার ফলশ্রুতি হিসেবে তিনি এখন তার ধ্যান-জ্ঞান জীবন সাধারণ মানুষের সেবায় নিয়োজিত করেন এবং আস্তে আস্তে সাধারণ মানুষের মধ্যে একজন হয়ে উঠেন। সেই ঘটনার পর থেকে তিনি ছুটির দিনগুলোতে মোবাইল ক্লিনিক শুরু করেন এবং স্থানে স্থানে ক্যাম্পের আয়োজন করে বিনা চিকিৎসায় রোগী দেখা শুরু করেন।

এখনও পর্যন্ত তিনি আটশোটি ক্যাম্প আয়োজন করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি এমন এক কাজ করেছেন যা সত্যই বিস্ময়কর ও প্রশংসার উদ্রেক করে। তিনি আস্ত একটা গাড়িকে চিকিৎসালয়ে পরিণত করেছেন। এই ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসালয়ের ফলে সাধারণ মানুষকে আর তার কাছে যেতে হবে না বরং তিনি অসহায় সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করতে পারবেন।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে ও সাধারণ মানুষের প্রতি তার এই অসামান্য অবদানের জন্য 2018 সালে তিনি ভারতীয় উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডুর কাছ থেকে পুরস্কৃত হয়েছেন। এছাড়া তিনি আরও অনেক অ্যওয়ার্ড পেয়েছেন। দেশকে সঠিক পথে এবং সুস্থতার আলো দেখাতে সুনীল ডাক্তারের মতো চিকিৎসকদের অবদান সত্যই অনস্বীকার্য যিনি নিজের সমগ্র জীবন সাধারণ মানুষের সেবায় নিয়োজিত করেছেন।