কম্পিউটার সায়েন্সে গ্রাজুয়েট ভিখারি, ঝড় ঝড় করে বলেন ইংরাজি, ভাইরাল ভিডিও

রাস্তার ধারে খারাপ অবস্থায় বসে থাকা প্রতিটি মানুষই যে ভিখারি তা নয়, কারণ অনেক সময় সেই ব্যক্তির অবস্থা আমাদের চিন্তার সম্পূর্ণ বিপরীতও হয় থাকে। এমনই একটি ঘটনা সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ থেকে জানা গেছে, যেখানে রাস্তার ধারে বসে থাকা এক মহিলাকে অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলতে দেখা যায়। উত্তর প্রদেশে অবস্থিত বারাণসী শহরটি লক্ষ লক্ষ হিন্দুদের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের কেন্দ্রস্থল, যেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় গঙ্গা আরতির অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়।

এই জায়গায়তে একজন মহিলা গত ৩ বছর ধরে তার জীবন কাটাচ্ছেন, কারণ কেউ তার কথা ঠিকভাবে বুঝতে পারে না।বারাণসীতে যাওয়া বিএইচইউ-এর ছাত্র অবনীশ যখন মহিলাটিকে দেখতে পান, তখন তিনি তার সাথে কথা বলতে যান। অবনীশ মহিলার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলে ওই মহিলা ইংরেজিতে কথা বলতে শুরু করেন। এই দৃশ্য দেখে অবনীশও প্রথমে অবাক হয়ে যায়।

কারণ রাস্তার ধারে নোংরা পোশাক পরা এই মহিলা যে সাবলীল ইংরেজিতে কথা বলতে জানে তা সে ভাবেনি। মহিলা তার নাম জানান স্বাতী, যিনি ৩ বছর আগে দক্ষিণ ভারত থেকে বারাণসীতে এসেছিলেন। স্বাতী তার স্কুলে পড়া শেষ করার পর কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক সম্পন্ন করেন, এরপর তার বিয়ে হয়।

বিয়ের পর স্বাতীর জীবন ভালোই চলছিল, কিন্তু গর্ভধারণের পর যখন সে একটি সন্তানের জন্ম দেয়, তখন তার শরীরের ডান অংশ অবশ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে স্বাতীর শরীরের একটি অংশ সম্পূর্ণরূপে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল এবং সে অনুভব করতে শুরু করেছিল যে সে তার পরিবারের বোঝা হয়ে উঠছে।

তাই স্বাতী কাউকে কিছু না জানিয়ে তার বাড়ি ছেড়ে বারাণসীতে চলে আসে। বারাণসীতে আসার পর, স্বাতীর থাকার জন্য ঘর ছিল না খাওয়ার জন্য খাবার ছিল না, তাই সে ঘাটের ধারে রাস্তায় থাকতে শুরু করে। ঘাটে আসা ভক্তরা, যা খেতে দেয় তাই খেয়ে পেট ভরে তার এবং এর পর রাতে ঘাটের পাশেই ঘুমিয়ে পরেন তিনি।

স্বাতী বলেছেন যে তিনি যখন মানুষের সাথে ইংরেজিতে কথা বলেন, লোকেরা তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে মনে করে। তাই স্বাতী কারো সাথে কথা না বলে চুপচাপ ঘাটের পাশে জীবন কাটায়। স্বাতীর সফ্টওয়্যার সম্পর্কে ভাল জ্ঞান ছিল এবং কম্পিউটার পরিচালনা করতেও জানতেন তিনি এর পাশাপাশি স্বাতী ইংরেজিতে টাইপ করতে সক্ষম।

কিন্তু শরীর অবশ হয়ে যাওয়ার পর স্বাতী কোনো চাকরির জন্য আবেদন করেননি, অথচ বারাণসীতে আসার পর তার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। স্বাতী বলেন, লোকেরা তাকে খাবার এবং কাপড় দেয়, যার মাধ্যমে সে তার জীবনযাপন করে। তবে একটা চাকরি পেলে তা তার জীবকে এক নতুন দিশা দেবে।