মাশরুমের তৈরি আচার, পাপড় বিক্রি করে লাখপতি অশোক কুমার, বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ১০ লাখ

পড়াশুনা করেন মাত্র দশম শ্রেণী পর্যন্ত। তারপর চাপে পরে কাঁধে তুলে নেন সংসারের বোঝা, শুরু করেন কৃষিকাজ। সহায় সম্বল ৫ একর জমিতে শুরু করেন মাশরুম চাষ। ব্যাস আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি হরিয়ানার জিন্দের বাসিন্দা অশোক কুমার বশিষ্ঠকে। যার বার্ষিক আয় এখন ১০ লক্ষ টাকা।

২০০৭ সালে আত্মীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে, মুর্থালের মাশরুম গবেষণা কেন্দ্রের কথা জানতে পারেন। সেখানে গিয়ে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলার পর ডাঃ অজয় ​​সিং যাদবের কাছ থেকে সরকারিভাবে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নেন অশোক। কিছুদিন শিক্ষা নেওয়ার পর, মাশরুম চাষের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

প্রশিক্ষণ নিলেও, কোথায় করবেন মাশরুম চাষ, এই নিয়ে সংকটে পড়েন অশোক কুমার। প্রথমটায় ধ্বংসাবশেষ এবং খালি বাড়ি ব্যবহার করে মাশরুম চাষ করে সফলতা না পাওয়ায় ভেঙে পড়েননি তিনি। আবারও চেষ্টা শুরু করেন এবং সেই চেষ্টার পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।

কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ফলে, মাশরুম চাষে পারদর্শী হয়ে ওঠেন তিনি। জিন্দ এবং হরিয়ানার বেশিরভাগ মানুষেরই এই মাশরুম সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান ছিল না। আর সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল অশোকের কাছে। অনেকেই মনে করতেন মাশরুম আমিষ খাবার, যে কারণে এই ব্যবসা তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে।

ব্যর্থতা এলেও হাল ছাড়েননি অশোক। ধীরে ধীরে মাশরুম সম্পর্কে জিন্দ সহ হরিয়ানার মানুষকে সচেতন করেন। যার ফলে তাঁর তৈরি করা মাশরুমের চাহিদা বাড়তে থাকে। সেইসঙ্গে অন্যান্য কৃষকদেরও প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন তিনি। যার ফলে তিনি প্রশংসিত হতে থাকেন।

তবে শুধু মাশরুমই নয়, ধীরে ধীরে আচার এবং সবজিও তৈরি করতে শুরু করেন তিনি। তাঁর তৈরি আচারের চাহিদাও বাড়তে থাকে গ্রামে। এরপর এই চাহিদা দেখে মাশরুম দিয়ে আচার, পাপড় তৈরি করে তা বিক্রি করতে শুরু করেন অশোক কুমার। তাঁর তৈরি করা ৮৬ টি পৃথক পৃথক রকমের মাশরুমে আইটেম জিন্দের বাজারে পাওয়া যায়। মিষ্টি, লাড্ডু, বরফি, এমনকি জলেবি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছন তিনি।

নিজের এই কাজের জন্য FSSAI থেকে শংসাপত্রও পেয়েছেন অশোক কুমার। এই চাষ এবং পণ্য বিক্রির মাধ্যমে বছরে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা উপার্জন করছেন অশোক কুমার। লকডাউনে কিছুটা সমস্যায় পড়লেও, আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন অশোক কুমার।