২০ বছর পর খাঁচার বন্ধন থেকে মুক্তি পেয়েই সঙ্গীর সন্ধানে ৩৭০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি স্ত্রী কাছিমের

বাড়ি হল সেই জায়গা যা শুধুমাত্র মানুষের জন্য নয়, পশুদের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাখিরাও সারাদিন শস্য ও জল খেয়ে বাড়ির দিকে যেতে থাকে। সারাদিন এখানে-সেখানে অবস্থান করলেও সন্ধ্যার পর বাড়ি ফেরে সকলেই। এমনই একটি ঘটনা আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে এসেছে, যেখানে এক স্ত্রী কচ্ছপ তার বাড়ির সন্ধানে প্রায় ৩৭০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে। ২০ বছর ধরে এই কচ্ছপটি একটি খাঁচায় বন্দী ছিল এবং ছাড়া পাওয়ার সাথে সাথেই কচ্ছপটি তার বাড়ির দিকে চলে যায়।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এই কচ্ছপের গল্প। এই মহিলা কচ্ছপের নাম ইয়োশি বলে জানা যাচ্ছে। ইয়োশি প্রায় ২০ বছর একটি খাঁচায় বন্দী ছিল। এর ওজন প্রায় ১৮০ কেজি। ইয়োশি খাঁচা থেকে বেরিয়ে আসার সাথে সাথে সে তার বাড়ি খুঁজতে লেগেছিল। অনুসন্ধান করার সময়, ইয়োশি প্রায় ৩৭০০০ কিলোমিটার দূরত্ব যায়। IFS অফিসার পারভীন কাসওয়ানের শেয়ার করা ইয়োশির গল্পটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মহিলা কচ্ছপের ছবি শেয়ার করে পারভীন কাসওয়ান বলেছেন, “এই কচ্ছপটি তার বাড়ির সন্ধানে আফ্রিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত ৩৭০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিল।” এই কচ্ছপের কথা জেনে অবাক হয়েছেন নেটিজেনরা। জানা যাচ্ছে প্রায় ২০ বছর আগে কচ্ছপটিকে বন্দি করা হয়েছিল। আসলে, এই সময়ে এই মহিলা কাচ্ছপটিকে আহত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, তারপরে তাকে সুস্থ করার জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।

চিকিৎসার সময় কচ্ছপের শরীরে কিছু স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগানো হয়েছিল যাতে জীববিজ্ঞানীরা এর প্রজাতি সম্পর্কে আরও তথ্য পেতে পারেন। ২০ বছর ধরে এই কচ্ছপটিকে ধরে রাখা হয়েছিল এবং অবশেষে এটিকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার সাথে সাথে ইয়োশি নামের এই কচ্ছপটি তার বাড়ি খুঁজতে থাকে। এরপর বাড়ি খুঁজতে খুঁজতে ৩৭ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় এই কচ্ছপটি।

স্ত্রী কাছিমটি গর্ভবতী ছিল বলে জানা যায় এবং সে তার বাচ্চাদের জন্ম দিতে এবং তাদের লালন-পালনের জন্য নিরাপদ জায়গা খুঁজতে এই পথে ভ্রমণ করে। কচ্ছপ এমন একটি জীব যা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি দিন বেঁচে থাকে।একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি কচ্ছপের গড় বয়স প্রায় ১৫০ থেকে ২৫০ বছর। সবচেয়ে বেশি বেঁচে থাকা কচ্ছপের নাম হল আলডাব্রা টর্টয়। এই কচ্ছপটি ২৫৬ বছর বেঁচে থাকার পর মারা যায়। শুধু তাই নয়, এই কচ্ছপের আকারও ছিল অনেক বড়। কচ্ছপের ডিএনএ গঠন এমন যে এটি তাদের শরীরে কোনো রোগ সৃষ্টি হতে দেয় না এবং সময়ে সময়ে তা নিরাময় করতে থাকে। এই কারণেই কচ্ছপ ১৫০ থেকে ২০০ বছর বেঁচে থাকে।