একসময় লোকের বাড়িতে ঝাড়ু লাগানো বাসন ধোয়ার কাজ করতে এই বলিউড অভিনেত্রী, জানুন অভিনেত্রী শশীকলার না শোনা গল্প

বলিউড ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে বলার শেষ নেই। অনেক তারকা বা সেলিব্রেটি আছেন গোটা বলিউড ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে। কিন্তু তাদের সবার জীবন সহজ ছিল না। অনেকই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে জীবনের সংগ্রাম করে আজ নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী “শশীকলা”। ৭০ এর দশকের একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী। শুধুমাত্র তার অভিনয়ের জন্যই নয়, তার সৌন্দর্যের জন্যও ইন্ডাস্ট্রিতে বিশেষ পরিচিত ছিলেন তিনি।

শৈশব থেকেই বলিউডে কাজ করলেও জীবনের সঙ্গে ‘শশিকলার’ লড়াই বেশ কঠিন ছিল। ধনী পরিবারে জন্ম নেওয়ার পরও শশীকলাকে দারিদ্রের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। সময়ের চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে বলিউডে নিজের অবস্থান অর্জন করেছিলেন এই অভিনেত্রী। কাজও করেছেন শতাধিক এর বেশি ছবিতে। ১০০ টিরও বেশি ছবিতে কাজ করে বিশ্বকে দেখিয়েছিলেন, যে কোনও ব্যক্তি চাইলে যে কোনও বয়সে নিজের নাম উপার্জন করতে পারেন।

তার যুগ থেকে আজ অবধি শশিকলা চলচ্চিত্রে কাজ করে চলেছেন। শশিকলাকে তার পরিবারের সাথে দারিদ্র্যের একটি সময় দেখতে হয়েছিল। যখন তাকে একবার খাবারের জন্যও কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছিল। শশিকলা বহুবার তার শৈশবের সংগ্রামকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন। তার জন্ম ‘সোলাপুরে’ একজন কাপড় ব্যবসায়ী ‘অনন্তরাও জাওয়ালকার’ এর ঘরে।

ছোটবেলায়, শশীকলা তার বাবার বাড়িতে সব ধরণের বিলাসিতা দেখেছিলেন, কিন্তু তারপরে তার বাবা ব্যবসায় প্রতারিত হওয়ার পরে তার পরিবার রাস্তায় নেমে আসে। শশীকলা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যে তার বাবার দরিদ্রতার কারণ তার বাবার নিজের ভাই ছিল। শশিকলার বাবা তার ভাইদের বিশ্বাসঘাতকতা কারণে দেউলিয়া হয়েছিলেন।

সে সময় তাকে ও তার পরিবারকে ৮ থেকে ১০ দিন না খেয়ে কাটাতে হয়েছিল। তার পরিবারের স্বার্থে, শশীকলাকে ঝাড়ু দিতে এবং ঘর মুছতে লোকের বাড়িতে যেতে হয়েছিল। এই সময়ে শশীকলা একটি ‘মেলা নাটকের’ দলে যোগ দেন এবং জায়গায় জায়গায় শিল্পী হিসেবে নাটক উপস্থাপনা শুরু করেছিলেন। শশীকলা বলেছিলেন যে, তার সৌন্দর্যের কারণে লোকেরা তাকে চলচ্চিত্রে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

যখন তার বয়স মাত্র ১১ বছর তখন “নূরজাহান” তাকে প্রথমবার দেখেছিলেন। সে সময় নূরজাহান তার স্বামী “শওকত হোসেনকে” নিয়ে “জিনাত” চলচ্চিত্র নির্মাণ করছিলেন। এই চলচ্চিত্রে নিজের মেয়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শশীকলাকে বেছে নিয়েছিলেন। যদিও এটি একটি উর্দু ছবি এবং হিন্দিতে সোলাপুরী ভাষা বলার কারণে তিনি (শশী) এই ছবিতে সেই ভূমিকা পেতে পারেননি।

শ্যামা এবং শালিনীর মতো অন্যদের সাথে একটি কাওয়ালি দৃশ্যে তাকে অভিনয় করতে হয়েছিল। শশিকলা এই ছবির জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন ২৫ টাকা। এরপর থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে আয় শুরু করেন শশিকলা। তিনি প্রতি মাসে প্রায় ৪০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতেন। অভিনেত্রী ‘আরতি’, ‘খুবসুরাত’, ‘অনুপমা’ এবং ‘আয়ি মিলন কে বেলা’ এর মতো অনেক হিট ছবিতে তার অভিনয় দক্ষতা দেখিয়েছেন।

এছাড়াও শশীকলা ‘সালমান’, ‘শাহরুখের’ সাথেও চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। শাহরুখের ছবি ‘বাদশা’ এবং সালমান খানের ছবি ‘মুজসে শাদি করোগি’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। বাদশা ছবিতে শাহরুখের ‘মায়ের’ এবং মুজসে শাদি করোগি ছবিতে সালমানের ‘দাদির’ ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি শশিকলা টিভি শোতেও তার বিস্ময় দেখিয়েছেন। এমনকি পদ্মশ্রী পুরস্কার সহ অনেক বিশেষ পুরস্কারও পেয়েছিলেন অভিনেত্রী।