নেই বিন্দুমাত্র অহংকার, এয়ারপোর্টে কাজ করছেন রাষ্ট্রপতির মেয়ে

প্রায়ই শোনা যায় যে রাজনৈতিক ক্ষমতাবান ব্যক্তিত্বের ছেলেমেয়েরা তাদের বাবা-মায়ের ক্ষমতার অপব্যবহার করে। তারা নানারকম সুযোগ সুবিধা নেয়, সাফল্য লাভের জন্য তাদের মা বাবার ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে। এছাড়াও ভিআইপি চিকিৎসাও নেয়। সামান্য কাউন্সিলরের ছেলে-মেয়ে হলেও সে এই রাজনৈতিক ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে নিজের বড়াই করতে মত্ত থাকে।

কিন্তু সেখানেই এক নতুন নজির গড়লেন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়ে স্বাতী কোবিন্দ। শৈশব থেকেই তিনি ঠিক করেছিলেন যে তিনি স্বাবলম্বী হবেন। সাফল্য পাওয়ার জন্য তিনি কখনোই তার বাবার নাম ব্যবহার করেন নি। তিনি এয়ার ইন্ডিয়া তে কাজ করতেন। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়ার কেউই জানতেনই না যে তিনি রাষ্ট্রপতির মেয়ে।

আসলে তিনি চাননি যে তার পরিচয় প্রকাশ হোক। সেই জন্য তিনি সবসময়ই তার পদবী লুকিয়ে রাখতেন। এমনকি পিতার নামের জায়গায় তিনি আর এন কোবিন্দ লিখতেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার মতো দূরপাল্লার দেশগুলির ফ্লাইটে বোয়িং 777 ও 787 এয়ার হোস্টেস হিসেবে কাজ করেছেন।

কিন্তু তা সত্বেও এয়ার ইন্ডিয়ার একজন কর্মচারীও তার পিতৃপরিচয় জানতেন না। বিনম্র স্বভাবের এই মেয়েটি তার পরিচয় সবার কাছ থেকে গোপন রেখেছিলেন। রামনাথ কোবিন্দ ছোটবেলা থেকেই তার মেয়েকে স্বাবলম্বী হতে ও জীবনের মূল্যবোধ শিখিয়েছিলেন। সাফল্যে পাওয়ার জন্য তিনি তার বাবার নাম ব্যবহার করতে চাননি।

এমনকি যে সময় তার বাবা অর্থাৎ ভারতীয় রাষ্ট্রপতি 25 শে জুলাই 2017 সালে শপথ গ্রহণ করেন তখন তিনি ছুটিতে ছিলেন। কিন্তু কেউই জানতেন না যে তিনি তার বাবার শপথ গ্রহণের জন্য ছুটিতে ছিলেন। তার পরিচয় সামনে আসার পরও তিনি তার চাকরিটা করার ইচ্ছার প্রকাশ করেছেন। তিনি এয়ার ইন্ডিয়াতে এক জন ক্রু মেম্বার হিসেবে কাজ করছিলেন।

কিন্তু নিরাপত্তা নিরিখে এয়ার ইন্ডিয়া তাকে হেডকোয়ার্টারে কাজ করতে পাঠায়। স্বাতিকে যখন তার নিরাপত্তা সার্থে তিনি চাকরি ছেড়ে দেবেন কিনা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তখন তিনি বলেছেন যে এবার দেখা যাক আগে কি হয়। এখন তিনি তার মা সবিতা ও তার বাবার সাথে রাষ্ট্রপতি ভবনে থাকেন। তিনি বলেছেন যে তার পুরো পরিবার খুবই সাধারণ প্রকৃতির এবং খুবই মাটি ঘেঁষা। তার পরিবারের সব সদস্য এরকম ভাবে নিজের পরিশ্রমে সফল হতে চান। এমনকি তার বাবাও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আজ দেশের এত বড় একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন।