পুলিশের চাকরি ছেড়ে শুরু করেছিলেন আলু চাষ, আজ বার্ষিক উপার্জন 3.5 কোটি টাকা

আজকাল আমরা দেখি যে তরুণদের সরকারি চাকরির প্রতি ঝোঁক প্রবল। কিন্তু সেখানে কিছু মানুষ এমনও আছে যারা তাদের সুনির্দিষ্ট চাকরি ছেড়ে কৃষি কাজের প্রতি মনোনিবেশ করেছেন। এ রকমই একজন হচ্ছেন গুজরাটের পার্থিভাই জেঠাভাই চৌধুরী। যিনি গুজরাটের বানাসকাঁথার দান্তিওয়াড়ার বাসিন্দা।

তিনি 1981 সালে গুজরাট পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু কৃষির প্রতি অনুরাগ ও সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছার জন্য তিনি আট বছর আগে তার চাকরি ছেড়ে দেন। পুলিশে চাকরি করার সময় তিনি বিদেশি কোম্পানি থেকে প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। প্রশিক্ষণটি ছিল মূলত ছিল উন্নত মানের আলু তৈরি করার প্রশিক্ষন।

এই প্রশিক্ষণে তিনি কৃষির সমস্ত কৌশল শেখেন। কিন্তু তার পক্ষে এই কাজ এতটাও সহজ ছিল না। কারণ— সঠিক সেচ ব্যবস্থার অভাব। এই সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি ড্রিপিং পদ্ধতিতে সেচ চাষ অবলম্বন করেন। যাতে ফসলের গড়ার বিন্দুতে সরাসরি জল প্রবেশ করে এবং ন্যূনতম জলেই সেচ হয়ে যায়। বর্তমানে পার্থিভাই তার 87 একর জমিতে আলু চাষ করেছেন।

হেক্টর প্রতি আলু উৎপাদনের পরিমাণ হলো 1200 কেজি। তিনি প্রথমে ম্যাককান নামে একটি কোম্পানিতে তার উতপাদিত আলু সরবরাহ করতে যেটি বিশেষত চিপস তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এর পর তিনি বালাজি ওয়েফার্স নামক একটা স্থানীয় কোম্পানিতে আলু সরবরাহ করতে থাকেন। এত বড় পরিসরে আলো উৎপন্ন করার পরও তিনি তার পরিবারের সাথে যথেষ্ট সময় কাটান।

সাধারণত অক্টোবরের শুরুতে আলু বপন করা হয় এবং ডিসেম্বরের শেষে ফসল পাওয়া যায়। এরপর তিনি আলু হিমঘরে রাখেন এবং বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করেন। তার অধিনস্ত 15 জন লোক কাজ করে এবং তার বার্ষিক আয় হচ্ছে 3.5 কোটি টাকা। এছাড়াও তিনি চিনেবাদাম, তরমুজ, বাজরা প্রভৃতি ফসল উৎপাদন করে থাকেন। হেক্টরপ্রতি আলু উৎপাদনে তিনি বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। 2011-12 সালে তিনি 87 মেট্রিক টন আলু উৎপন্ন করেছেন। আজ সারা দেশে উৎপাদিত আলুর 6 শতাংশ থেকে বানাসকাঁথায় উৎপন্ন হয় এবং প্রায় 1 লক্ষের বেশি কৃষক এই আলু চাষের সঙ্গে যুক্ত।