ছিল না মেয়ের জুতা কেনার টাকা, আজ নিজের কোম্পানি গড়ে পেলেন পদ্মশ্রী পুরস্কার

৭৩ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে “পদ্ম” (padma) পুরস্কার ‘২০২২’ ঘোষণা করা হয়েছিল। ১২৪ জনকে পদ্ম পুরস্কারে সম্মানিত করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে ৪টি পদ্মবিভূষণ, ১৭ টি পদ্মভূষণ এবং ১০৭ টি পদ্মশ্রী পুরস্কার। “পদ্মশ্রী” ২০২২ পুরস্কার প্রাপকদের মধ্যে একজন হলেন মণিপুরের “মুক্তামনি দেবী”(Mukta Moni Devi)। কাকচিং, মণিপুরের মুক্তামনি দেবী তার কাজের জন্য আজ সারা বিশ্বে বিখ্যাত হয়েছেন।

পদ্মশ্রী পুরস্কার পাওয়ার পর, তিনি ভারতের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু মুক্তামণি দেবীর জীবন একসময় সহজ ছিল না।প্রায় ৩ দশক আগে, ১৯৮৯ সালে মুক্তামণি দেবীর অবস্থা এমন ছিল যে তার মেয়ের জন্য জুতো কেনার সামর্থও ছিল না। ঐ সময় মুক্তামণি দেবীর দ্বিতীয় কন্যার জুতার সোল্ ছিঁড়ে গিয়েছিলো।

দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে, পদ্মাশ্রী সন্মান!

মুক্তামণি পশম দিয়ে একজোড়া সোল তৈরি করেন এবং ঐ জুতোটা পরার উপযোগী করে তোলেন। তার মেয়ে স্কুলে যেতে ইতস্তত করছিল কারণ সে ভয় পেয়েছিল যে সে হয়তো শিক্ষকের দ্বারা তিরস্কার হবেন। পরের দিন তার মেয়ে স্কুলে গেল, শিক্ষক তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, কে তার জুতো তৈরি করেছে? তাদেরও এক জোড়া এই জুতো দরকার। এ ঘটনার পর থেকেই মুক্তামনির ভাগ্য বদলে যায়।

মুক্তামনির প্রথম জীবন কেটেছে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে। বুক অফ অ্যাচিভার্সে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, তিনি ১৯৫৮ সালের ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি তার বিধবা মায়ের কাছে লালিত-পালিত হয়েছিলেন এবং মুক্তামনি ১৬-১৭ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন। মুক্তামনির চার সন্তান ছিল। পরিবারের ভরণপোষণের জন্য সে দিনের বেলা ধানক্ষেতে কাজ করতেন এবং সন্ধ্যায় সবজি বিক্রি করতেন।

একটু বেশি টাকা রোজগারের জন্য সে রাতে ব্যাগ ও হেয়ারব্যান্ড তৈরী করতেন। এভাবেই আস্তে আস্তে তিনি ব্যবসায়িক জীবনে গমন করেন। পরিবার ও সন্তান সামলেও তার কোম্পানিকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছে মুক্তা দেবী। “মুক্তা ইন্ডাস্ট্রিজের” তৈরি জুতো শুধু পাক বা আবহাওয়ার প্রভাব থেকে রক্ষা করে না, সেগুলি সহজেই ধুয়ে শুকানোও যায়। সম্প্রীতি তার এই কর্মের জন্য তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়।