কর্মসংস্থানের সন্ধানে আমরা গ্রাম থেকে বহু লোককে শহরে যেতে দেখেছি, কিন্তু শহর থেকে গ্রামে আসার কথা যদি বলি, তবে খুব কম লোকই আছে যারা শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে আসতে পছন্দ করে। আজ আমরা এমন একজন ব্যক্তির কথা বলব, যিনি চাকরি এবং শহরের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ছেড়ে গ্রামে বসবাস বেছে নিয়েছেন। “শচীন কোঠারি” যিনি মূলত উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের বাসিন্দা।
দেরাদুনে প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ করার পর, তিনি চাকরির সন্ধানে দিল্লিতে যান, যেখানে তিনি কর্পোরেট সেক্টরে চাকরি পান। শচীন কোঠারি দেরাদুন থেকে পড়াশোনা শেষ করে দিল্লিতে ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কর্পোরেট সেক্টরে কাজ করেন। এই তিন(৩) বছরে চারটি(৪) কোম্পানি বদল করলেও কোথাও মানসিক শান্তি পাননি। কোম্পানি পরিবর্তন করার সময়, তিনি প্রতিবার ভাল সঙ্গ এবং ভাল বেতন পেতেন, কিন্তু তিনি কখনও শান্তি ও স্বস্তি পাননি কর্পোরেট সেক্টর জীবনে।
শচীন কোঠারি, যিনি বারবার চাকরি ছেড়ে অর্থের পিছনে দৌড়াচ্ছেন, এক পর্যায়ে বুঝতে পেরেছিলেন যে এই ব্যস্ত, চাপযুক্ত পেশাগত জীবন চাকরির সময় কখনই পরিবর্তন হওয়ার নয়। তার বেশিরভাগ সময় কাটতো ল্যাপটপে কাজ করে। দিনরাত পরিশ্রম করেও তার টার্গেট শেষ হয়নি। যার কারণে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি এই পেশাগত জীবন থেকে শান্তি পাবেন না।
শচীন কোঠারি তার চাকরি চলাকালীন সময়ে অনুভব করেছিলেন যে, তাকে কর্পোরেট জীবনের জন্য তৈরি করা হয়নি। এরপর তারা বিকল্প খুঁজতে থাকে। শহরের চাকরি ছাড়াও তিনি যখন ছুটির দিনে দেরাদুন যেতেন, তখন তাঁর এক আত্মীয়ের দ্বারা খুব প্রভাবিত হয়েছিলেন। দেরাদুনে তার আত্মীয়ের একটি উদ্ভিদ নার্সারি ছিল।
যখনই তিনি দেরাদুনে থাকতেন, তিনি তার অবসরের বেশির ভাগ সময় কাটাতেন গাছের নার্সারিতে। এরই ধারাবাহিকতায় এই কাজটিকে ব্যবসা হিসেবে পছন্দ করে এবং শহর ছেড়ে গ্রামে আসার মনস্থির করেন। একটি নার্সারি খোলার জন্য তার কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তিনি তার বাবার কাছ থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা এবং তার বন্ধুর কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন।
তারপর তিনি দেবভূমি প্ল্যান্ট নার্সারি শুরু করেছিলেন। চাকরি ছেড়ে নার্সারিতে পুরো সময় দিতে শুরু করেন। বর্তমান সময়ে শচীন কোঠারির দেবভূমি প্ল্যান্ট নার্সারিতে অনেক ধরনের গাছপালা পাওয়া যায়। ২০ টিরও বেশি জাতের ফুল ও সবজির চারা বিক্রি করেন। নার্সারি ব্যবসা থেকে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ টাকা আয় করেন।