বেকার পড়ে থাকা জমিতে অর্গানিক চাষ শুরু করলেন এই মহিলা, সাফল্য দেখে হতবাক সকলেই

কোন মানুষ যদি চরম নিষ্ঠার সাথে কোন কাজ করে তাহলে সফলতা একদিন তাকে নিশ্চয়ই ধরা দেবে। এরকমই একটি গল্প হচ্ছে মাদুরাইয়ের বাসিন্দা পি ভুবনেশ্বরী। তামিলনাড়ুর থাঞ্জাভুর জেলার এর কল্যানাওদাই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকে কৃষক পরিবারের অন্তর্গত হওয়ায় শৈশব থেকেই তার কৃষির প্রতি ছিল একটা গভীর টান। তিনি প্রকৃতির মাঝে বড় হয়েছেন।

এছাড়া তার বাড়ির পাশ দিয়ে কাবেরী নদী বয়ে গেছে। ছোটবেলা থেকেই তিনি তাদের সবজি বা খামারে উৎপন্ন শাকসবজি, ফল খেতেন। এমনকি রাত্রে যদি মশায় কামড়ালে, তিনি ‘নোচি’ নামে এক ধরনের বিশেষ পাতা ছিঁড়ে চারিদিকে ছড়িয়ে দিতেন। তার পরিবারের লোকজন যখন ক্ষেতে কাজ করতে যেতেন। তখন তিনি ও তাদের সাথে যেতেন এবং গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজ করা দেখতেন।

বিয়ের পর তিনি তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ের পুদুকোট্টাই কারুপাইওরানি নামক স্থানে চলে আসেন। সেখানে তিনি প্রথমে ফুল গাছ লাগাতে থাকেন। এরপর শ্বশুরবাড়ির 10 একর জমির মধ্যে 1.5 একর জমিতে তিনি চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। শুরুতেই তার সামনে দুটো লক্ষ্য ছিল। প্রথমত, কোন কীটনাশক ব্যবহার না করা। দ্বিতীয়ত, দেশীয় ধান চাষ করা যা বর্তমানে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে।

বিনা কীটনাশক ব্যাবহার করে কৃষি কাজ করতে চাওয়াতে তার বাড়ির কেউ রাজি হননি। এমনকি কোনো শ্রমিক রাজি হননি। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ তার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে 2013 সাল থেকে জৈব চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং তাতে সফল হন। তিনি চাষ সম্পর্কে আরও অনেক বেশি জানানোর জন্য বনগম নাম্মালভার ইকোলজিক্যাল ফাউন্ডেশন এর সাথে যোগাযোগ করেন।

সেখানে তিনি জৈবিক পদ্ধতিতে কৃষি সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন। তিনি একটুও কীটনাশক না ব্যবহার করে প্রায় 10 একর জমিতে চাষাবাদ করেছেন। তিনি বলেছেন যে জৈব চাষের জন্য সব থেকে বেশি দরকার মানুষের মনের পরিবর্তন। চাষাবাদের জন্য যদি রাসায়নিক কীটনাশক এর পরিবর্তে গোবর ও আখের ঘাস অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া পোকামাকড় নিরোধক হিসেবে নিম তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তিনি এরকম জৈব পদ্ধতিতে কাজ করে তার এক নতুন পরিচয় গড়ে।