TCS এর চাকরি ছেড়ে করছেন কৃষিকাজ, নতুন উপায়ে বদলে দিয়েছেন গ্রামের কৃষকদের জীবন

কমবেশি এমন মানুষ তো দেখেই থাকবেন, যিনি গ্রাম থেকে শহরে এসে ভালো চাকরি করছেন। সেই ব্যক্তি আর গ্রামে না গিয়ে শহরেই স্থায়ী বসবাস শুরু করেছেন। কিন্তু এমন মানুষও আছেন, তিনি TCSএর মত চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামে গিয়ে কৃষি কাজ শুরু করেছেন। শুধু নিজেই কৃষি কাজ করছেন না, তার সাথে গ্রামের মানুষদের যারা কৃষি কাজের সাথে যুক্ত তাঁদেরও জীবন পাল্টে দিয়েছেন।

এই ব্যক্তির নাম রাকেশ কুমার মহান্তি। তিনি ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূমের জামশেদপুর জেলার থেকেও ২৫ কিলোমিটার দূরের পাটমাদা গ্রামে বড় হয়েছেন। তিনি ব্যাঙ্গালোরে B.TECH ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি কমপ্লিট করে টাটা কনসালটেন্সিতে সার্ভিসও পেয়েছিলেন। চাকুরীর বেতনও যথেষ্ট ভালো পরিমাণে ছিল। কিন্তু রাকেশ কুমারের চাকরি করতে ভালো লাগছিল না। তিনি গ্রামে ফিরে আসেন এবং কৃষি কাজ শুরু করেন।

প্রথমদিকে তাঁর কৃষি কাজের ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞানের অভাব থাকলেও, তিনি জামশেদপুরের এক্সএলআরআই স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে উদ্যোক্তা বিকাশের কোর্সটি সম্পন্ন করেন। তিনি কৃষক এবং কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করেন। তিনি ঐতিহ্য বাহী কৃষিকে একটি শিল্পে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিলেন। তবে এই কাজটা এতটাও সহজ ছিল না। তিনি গোটা দেশ ভ্রমণ করে সফল কৃষকদের সাথে দেখা করেন। তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর গ্রামের কৃষকদের কোন কোন জায়গায় সমস্যা রয়েছে।

তিনি ছোট জমিতে প্রথম মডেল ফার্মিং শুরু করেন।তিনি ভুট্টা-বাজরা ইত্যাদি চাষ শুরু করেন। তাঁর সাথে আরও ৮৫ জন কৃষক যোগ দিয়েছিলেন। গ্রামের কৃষকরা তাকে অনুসরণ করতে শুরু করে। তিনি চাষীদের জৈব চাষের কৌশলও বোঝান। এছাড়া বীজ,সার দিয়ে কিভাবে ফসল আরো বাড়ানো যায় তাও তিনি কৃষকদের বোঝাতে শুরু করেন। এরপর তিনি আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষ শুরু করেন। কৃষকরা আগে যা ফসল ফলাতো, এখন তার থেকে অনেক বেশি ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। লাভের পরিমাণও বেড়ে গিয়েছে। তাছাড়াও কৃষক-শ্রমিকরাও মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আয় করে থাকেন।