জানুন কীভাবে আনন্দী হয়ে উঠলেন ভারতের প্রথম মহিলা ডাক্তার! চিঠিতে লেখা রয়েছে জীবন সংগ্রাম গল্প

১৮০০ দশকে নারীদের শিক্ষার কোন অধিকার ছিল না। তখনকার দিনে নারীরা শিক্ষা গ্রহণ করাকে বলা হতো তারা পাপ করছে। তারা সমাজের বিরোধী কাজ করছে। আজ এমনই এক নারীর কথা বলব যিনি দেশের প্রথম মহিলা চিকিৎসক। যিনি শিক্ষার কারণে ভারত ছেড়েছিলেন। কারণ দেশে তখন নারীদের শিক্ষার অতো সুযোগ হয়নি। প্রতিমুহূর্তে তাঁকে হয়রানি শিকার হতে হয়েছিল। তিনি হলেন আনন্দীবাই জোশি। আসুন বিস্তারিত জেনে নিন।

আনন্দীবাই জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৬৫ সালের থানে জেলার কল্যাণী এক গোঁড়া মারাঠি হিন্দু জমিদার পরিবারে। তখন বাল্যবিবাহ প্রথা ছিল, সেই মাফিকই তাঁর ৯ বছর বয়সে তাঁকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল এক বিদুরের সাথে। তার স্বামীর নাম গোপাল যোশি। কিন্তু তার স্বামী তাঁর থেকে ২০ বছরের বড় ছিল। তবে তাঁর স্বামী গোপাল যোশির চিন্তাভাবনা যথেষ্ট উন্নত ছিল।

তাঁর জন্য আনন্দীবাই প্রথম পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। কিন্তু সমাজ কিছুতেই সেটা ভালো চোখে দেখছিল না। এরপর তাঁর ১৪ বছর বয়সে তিনি প্রথম মা হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রথম সন্তান মাত্র ১০ মাস বয়সে মারা গিয়েছিল। এরপর তিনি ঠিক করেন তিনি মহিলা চিকিৎসক হবেন। কিন্তু ব্যাপারটা তার জন্য এত সহজ ছিল না। প্রথমত সমাজ মেনে নিতে চাইনি। দ্বিতীয়তঃ তিনি যখন চেন্নাই ডক্টরেট কোর্স করতে গেছিলেন তখন সেখানে কর্মরত পুরুষ শিক্ষকরা নারীদের পড়াশোনার জন্য একদমই এগিয়ে আসেনি।

তিনি বিদেশে ডাক্তারি পড়তে যাওয়ার জন্য তিনি বিদেশে সুপারিনটেনডেন্টকে চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু তাকে শর্ত দেওয়া হয়েছিল তাকে বিদেশে পড়তে গেলে খ্রিস্টান ধর্ম নিতে হবে। কিন্তু তিনি সেই শর্ত মানেননি। প্রতি পদে পদে তিনি বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। সমাজ তাঁকে কলঙ্ক বলে আখ্যায়িত করেছিল।

কিন্তু তিনি হাজার বাধা সত্ত্বেও তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মেডিকেল কলেজের ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি যখন সবাইকে জানিয়ে ছিলেন তিনি আমেরিকা যেতে চান। তখন তাঁর এবং তাঁর স্বামীর ওপর হয়রানি সৃষ্টি করে সমাজ। তাঁদের বাড়ির উপর গোবর এবং পাথর ছোড়া হয়। আনন্দীবাই তার স্বামীর সহায়তা পেয়ে তিনি তাঁর স্বপ্ন পূরণ করেন। তিনি দেশের প্রথম মহিলা এমডি হয়েছিলেন। আজ তাঁর ১৫৩ তম জন্মদিন ছিল। তিনি মারা গিয়েছিলেন ১৮৮৭ সালে।