ঠেলায় চাপিয়ে মায়ের শবদেহ শ্মশানে নিয়ে গেল মুক-বধির ছেলে, কাঁদিয়ে দেবে মর্মান্তিক ছবি

কোনো প্রিয়জন আমাদের দেহত্যাগ করলে তা অত্যন্ত মর্মান্তিক হয়। আর সেই প্রিয়জন মা হলে, ভাষায় তা প্রকাশ করা যায় না। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ তার প্রতিবেশী ও বাকি আত্মীয় স্বজনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তবে সম্প্রতি গুজরাট থেকে এমন একটি ছবি বেরিয়ে এসেছে যা সকলের মনকে নাড়া দিয়েছে।

পরিস্থিতির সামনে একজন মানুষ কীভাবে মাথা নত করে, তা এই ছবিগুলো দেখলেই বোঝা যায়। আসলে, গুজরাটের ভারুচে ভিক্ষা করে জীবনযাপন করা এক কানে শুনতে না পাওয়া ও মুখে কথা বলতে না পারা এক ব্যক্তির এর মা মারা যান।পরিস্থিতির কাছে পরাজিত হয়ে তিনি তার মায়ের শেষকৃত্যও খুব ভালোভাবে করতে পারেননি।

যে ছবিটি বেরিয়েছে তা দেখে আপনি চোখের জল থামিয়ে রাখতে পারবেন না। অঙ্কলেশ্বরের শিল্প ইউনিটে অনেক নিঃস্ব মানুষ বাস করে, যারা ভিক্ষা করেই দিন কাটায়। এটি লক্ষণীয় যে অঙ্কলেশ্বর এশিয়ার বৃহত্তম শিল্প ইউনিট। হাজার হাজার মানুষকে কাজ দেওয়া এই ইউনিটে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ভিক্ষা করে জীবন যাপন করছেন।

কিন্তু হঠাৎ করেই তাদের মধ্যে একজনের রবিবার মা মারা যান। নিজে বধির হয়েও কাউকে বলতে পারেননি যে তার মা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। সারারাত মায়ের শবদেহের কাছে বসেছিলেন তিনি। সোমবার সকালে অসহায় এই যুবক তার মায়ের মৃতদেহ হাতগাড়িতে রেখে দেন। জানিয়ে দি ওই হাটগাড়িতে বসেই ভিক্ষা করতেন মুক-বধির যুবক।

ভিক্ষার গাড়িতে করে মায়ের মৃতদেহ নিয়ে শ্মশানে পৌঁছান তিনি। শ্মশানের অপারেটর শেষকৃত্য পরিচালনা করেছিলেন – এই ব্যক্তির যন্ত্রণা তিনি কাউকেই বুঝিয়ে উঠেতে পারছিলেন না। মায়ের শেষকৃত্যের কাজ তিনি নিজে একাই করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পৃথিবীতে মানবতা হয়তো এখনো বেঁচে আছে। অবশেষে একজন লোকটির দুর্দশা বুঝতে পারলেন।

তিনি ঘটনাটি সম্পর্কে কোভিড শ্মশানের অপারেটর ধর্মেশ সোলাঙ্কিকে জানান। ধর্মেশ সোলাঙ্কি অবিলম্বে এই বধির ও মূক যুবককে সাহায্য করার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন এবং মূক-বধির এই মানুষটির মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দৈনিক ভাস্কর তার টুইটার পেজে এই ঘটনার ছবি শেয়ার করেছেন।

কেউ গুজরাট সরকারের ওপর প্রশ্ন তুলেছেন আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন দেশের এনজিওগুলোর দায়িত্ব নিয়েও। এই ছবি প্রতিটি মানুষের মনেই প্রশ্ন জাগিয়ে তুলছে। এই ছবি আমাদের মানুষ্য সমাজ ও মানবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।