অসুস্থ ঠাকুমার সাথে দেখা করতে টানা ১৫ ঘণ্টা ধরে ২১৬ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে পৌঁছে গেল নাতনি

আজকের ব্যস্ত জীবনে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে সময় কাটানোর মতো সময় কারোরই হয়তো নেই। কিন্তু যখন পরিবারে বড়দের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা থাকে, তখন ব্যস্ততার মধ্যেও সেই প্রিয় মানুষগুলির জন্য কিছুটা সময় বের করতে পারেন। ১৭ বছর বয়সী আরতি প্রজাপতও তাই করেছিলেন। যিনি ২১৬ কিমি সাইকেল চালিয়ে তার দিদার সাথে দেখা করেছিলেন। আসলে আরতির দিদার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছিল। সেই কারনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে তার দাদির কাছে পৌঁছাতে হয়েছিল।

যখন আরতি প্রজাপত জানতে পারলেন যে তার দিদার স্বাস্থ্য খুব খারাপ, তিনি সঙ্গে সঙ্গে তার সাইকেল নিয়ে জয়পুর থেকে ভরতপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। আরতি ১৩ অক্টোবর ভোর ৪:৩০ টায় তার যাত্রা শুরু করেন। তারপরে তিনি সন্ধ্যা ৭ টায় ভরতপুরে পৌঁছান। যদিও আরতি তার দিদার কাছে আরও তাড়াতাড়ি পৌঁছে যেতেন মাঝপথে সে তার পথ হারিয়ে ফেলেন। এমতাবস্থায়, ভরতপুরে না গিয়ে আরতি আগ্রার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন, এভাবে আরতি ২০ কিলোমিটার এগিয়ে যান।

আরতি যখন বুঝতে পারেন যে তিনি তার পথ হারিয়ে ফেলেছেন, তিনি সঠিক পথে ফিরে আসেন। কিন্তু এই কারণে, তাকে ৪০ কিলোমিটার বেশি সাইকেল চালাতে হয়েছিল। যার কারণে তিনি তার দদার বাড়িতে দেরিতে পৌঁছান। আরতি ছোটবেলা থেকেই তার দাদু দিদার খুব কাছের। তাই যখন তিনি জানতে পারলেন যে তার দিদা অসুস্থ, তখন তিনি তাদের সাথে দেখা না করে থাকতে পারেননি। আরতির মা তাকে সাইকেলে যেতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

কারণ তিনি চাননি আরতি একা এত দীর্ঘ যাত্রায় যাক। কিন্তু আরতি তার পরিবারের কথা শোনেননি এবং ভোর সাড়ে ৪টায় জয়পুর থেকে ভরতপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু আরতি তার সিদ্ধান্ত এবং সাইকেলের প্যাডেলের জোরে এত দীর্ঘ যাত্রা একা কাভার করতে পেরেছেন। আরতি প্রতিদিন ৫০ কিমি সাইকেল চালালেও আজ পর্যন্ত জয়পুরের বাইরে যাননি। এমতাবস্থায়, আরতির বাবা-মা তার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। ১১ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত আরতি সাইকেলে তার দাদু-দিদার কাছে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু এত দূর পাড়ি দিতে তাকে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। পথে আরতির সাইকেলের চেইন বেশ কয়েকবার পরে গিয়েছিল।

যদিও সে আবার চেন লাগিয়ে যাত্রা চালিয়ে যায়।
আরতি প্রজাপত চায় যে সে সাইকেলে করে তার আত্মীয়দের সাথে দেখা করতে আরও এগিয়ে যাক। কারণ এটি তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বপ্ন। আরতির শৈশব থেকেই সাইকেল চালানোর শখ ছিল, তাই একবার প্যাডেলে পা পড়লে আর থামতে শেখেননি। আরতির দাদু-দিদা থাকেন ভরতপুরের দেহরা গ্রামে। যেখানে পৌঁছতে আরতি সাইকেলে ২১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিলেন। এই ১৭ বছর বয়সী মেয়েটির সাহস দেখে সবাই হতবাক। তিনি জানান তিনি তার দিদার সাথে দেখা করে আনন্দিত।