এইভাবে কেবল মাত্র ৫০০০ টাকা লাগিয়ে আপনিও শুরু করতে পারেন ধুপকাঠির ব্যবসা, জানুন গোটা প্রক্রিয়া

কথায় আছে শিক্ষাই জাতির অঙ্গ। কিন্তু কখনো কখনো তার ব্যাতিক্রম ঘটতে দেখা যায়। প্রতিভা এমন একটা জিনিস যা কিভাবে কার মধ্যে লুকিয়ে আছে তা বোঝা যায় না। আজকের গল্প এমন দুই বন্ধুর কথা যাদের কোন বড় ডিগ্রি ছিল না কিন্তু তাদের আবিষ্কার এর কারণে অনেক বড় প্লাটফর্মে সম্মানিত হয়েছেন তারা। তাদের প্রতিভা তাদেরকে জীবনে প্রতিষ্ঠিত করেছে ও সম্মান বাড়িয়েছে।

দুই বন্ধু “এল রাল্টে” এবং “এল সিলো” মিজোরামের আইজলের বাসিন্দা “এল রাল্টে”-এর পড়াশোনায় খুব একটা আগ্রহ ছিল না। ছোটবেলা থেকেই তিনি যন্ত্র নিয়ে খেলতে পছন্দ করতেন। তিনি স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনা করেন এবং তারপর কাজে নিযুক্ত হন। প্রথমে তিনি সাইন বোর্ড, খোদাই, মোটরসাইকেলের প্লেট লাগানোর কাজেই যুক্ত ছিল। এরপর তিনি এন জি ও তে শিশুদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিতেন।

অন্যজন “এল সাইলো” মিজোরামের চাম্পাই শহরের বাসিন্দা। তিনি শিক্ষার বিশেষ কোনো মাধ্যম পাননি, তবে শৈশব থেকেই তাকে যন্ত্র তৈরির শিল্প শেখানো হয়েছিল। এল রাল্টে বলেছেন যে, এন জি ও থেকে তিনি জানতে পেরেছিলেন যে তার রাজ্যে প্রচুর বাঁশ উৎপাদন হয়। বাঁশের বিভিন্ন পণ্য তৈরি করতে অনেক শ্রমিক লাগে। শ্রমের সাথে খরচও বেশি হয়। তখন তার মাথায় বুদ্ধি এলো এমন মেশিন বানাবে যেটাতে কম সময়ে ও কম খরচে বেশি কাজ করবে।

এই যাত্রায় তারা দুজনেই একে ওপরের সাথে দেখা করেন, এবং একসাথে একটি মেশিন তৈরির যাত্রা শুরু করেন। রাল্টে এবং সিলো মিলে প্রাথমিকভাবে দুটি মেশিন তৈরি করে। একটি মেশিন বাঁশ কাটতে এবং অন্যটি ডোবা তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীতে এডভান্স লেভেলে গিয়ে দুজনেই এই মেশিনটিকে যন্ত্রে রূপান্তরিত করেন। এই একই মেশিন দিয়ে বাঁশও কাটা যায় এবং ডোবাও তৈরি করা যায়।

নর্থ ইস্টার্ন ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লিমিটেডের (এনইডিএফআই) চেয়ারম্যান রাল্টে এবং এল সাইলোর এই উদ্ভাবনের কথা শুনে তিনি উভয়কেই আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন। তিনি তাদের জন্য ওয়ার্কশপ খোলেন। তার আবিষ্কার আজ পৌঁছেছে ন্যাশনাল ইনোভেশন ফাউন্ডেশনে।এন আই এফ-এর সাহায্যে উভয়েই উন্নত স্টেজ মেশিন তৈরি করেন। বাজারে এই মেশিন পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫ হাজার টাকায়।

ধূপকাঠি তৈরির কোম্পানিতে এই মেশিনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই মেশিনের সাহায্যে ধূপকাঠি তৈরি করতে সময় এবং খরচ দুই কম লাগে। রাল্টে এবং সাইলো আরও অনেক উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে একটি সুপারি পরিষ্কারের মেশিনও আছে। এই মেশিনটি তৈরি করতে তাদের ৫ বছর লেগেছে এবং এই মেশিনটি অনেক ব্যর্থ প্রচেষ্টার ফল। বাজারে এটি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৭ হাজার টাকায়।