পরিবারের আর্থিক সমস্যা মেটাতে দুই বোন শুরু করেছিল কৃষিকাজ, আজ উপার্জন করছেন লক্ষ লক্ষ টাকা

সমাজে প্রত্যেকেই নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। অনেকে নিজের পড়াশোনা শেষ করে কোনো কাজে নিযুক্ত দেয়। ঠিক সেইরকমই কেরালায় উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত দুই বোন। পরিবারের আর্থিক সংকটে তাদের পুরো পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষিকাজ শুরু করে। বর্তমানে এই দুই বোনই কৃষি কাজ করেই তাদের সংসার চালাচ্ছেন।

এই গল্পটি কেরালার রাজধানী তিরুবনন্তপুরমের আত্তিংগালের। যেখানে দুই বোন শিবপ্রিয়া জেএস এবং হরিপ্রিয়া জেএস তাদের পরিবারকে আর্থিক সংকটের সাথে লড়াই করে জমিতে চাষ শুরু করেন। এই দুই বোন আজ থেকে ৫ বছর আগে কৃষিকাজ শুরু করেছিলেন। আজ সফলভাবে চাষ থেকে নিজের এবং তাদের পরিবারের জন্য আয় করছেন।

এই দুই বোন যখন কৃষিকাজ শুরু করে, তখন তাদের জমি ছিল না এমনটাই জানা যায়। তার বাড়ির আশেপাশে ছোট ছোট জায়গায় লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, টমেটো এবং পুদিনার মতো জিনিস চাষ করতেন। এই দুই বোন এই সবজি চাষ করতে পাটের বস্তা ব্যবহার করতেন। যা তাদের খুব ভালো ফল দেয়।একটি সাক্ষাৎকারের সময়, উভয় বোনই বলেছিলেন যে তাদের বাবা তাদের জন্য ব্যাগ আনতে দিনমজুর হিসাবে কাজ করেছিলেন। দুই বোনই জানান, কৃষিকাজে তাদের পরিশ্রম ও নিষ্ঠা দেখে আশেপাশের লোকজন খুব প্রশংসা করে।

এই দুই বোন তাদের প্রতিবেশীদের এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে তারা তাদের আড়াই বিঘা জমি চাষের জন্য দিয়েছিল যাতে তারা প্রচুর পরিমাণে চাষ করতে পারে। এই দুই বোন যখন কৃষিকাজ শুরু করেন। তাদের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এই দুই বোনকে উন্নতির জন্য এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল, আসলে তাদের বাবা একজন দিনমজুর শ্রমিক ছিলেন।

গত ৫ বছরে এই বোনেরা কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার মাধ্যমে কৃষিকাজ করে তাদের পরিবারের আয়ের একটি ভালো উৎস গড়ে তুলেছেন। আজ এই দুই বোনের সবজি কিনতে নিয়মিত ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। একই সঙ্গে তাদের সবজিও যায় স্থানীয় সবজির বাজারে।একটি সাক্ষাৎকারের সময়, উভয় বোনই বলেছিলেন যে তারা উভয়ই তাদের কৃষিকাজে রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন না।

কারণ এটি তাদের জন্য আরও ব্যয়বহুল এবং একই সাথে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। দুই বোনই জানান, তারা জৈব সার ব্যবহার করে ভালো ফসল ফলান।এই জৈব সার হিসেবে ব্যাবহার করেন হাঁস-মুরগির সার, গোবর থেকে তৈরি সার ও পচা সবজি, যা পাটের বস্তা ব্যবহার করে সবজি চাষ করা হয়। দুই বোনই তাদের কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠা দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন আপনার পরিশ্রম থাকলে যে কোনও পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন।