হারিয়েছেন কোটি টাকার সম্পত্তি! দারিদ্র্যতা মেটাতে ঠেলা চালিয়ে আজ এক রেস্টুরেন্টের মালকিন মহিলা

কথায় বলে সময় বদলাতে বেশি সময় লাগে না। সময়ই মানুষকে রাজা থেকে ফকির এবং ফকির থেকে রাজায় পরিণত করে। যদি মানুষ সময়ের সাথে তালমিলিয়ে বাঁচতে শেখে তবে জীবন শুধু সহজ হয় নয় মজারও হয়। জীবনে বেঁচে থাকাটাও দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর খারাপ কিছু ঘটলে সেটা ভুলে গিয়ে এগিয়ে যাওয়াই হল জীবনের রীতি।

চলুন জেনে নেওয়া যাক গুরুগ্রামের বাসিন্দা উর্বশী যাদবের কথা, যে চরম খারাপ পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করে পরিবারকে দ্বার করিয়েছে। জীবনকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। দুর্ঘটনাকম বেশি সবার জীবনে ঘটলেও এমন কিছু দুর্ঘটনা ঘটে যা ভালোভাবে চলাফেরা করা স্বাধীন জীবনকে এলোমেলো করে দেয়। এবং পুরো পরিস্থিতিকে পাল্টে দেয়। উর্বশীর সাথেও এমন একটা ঘটনা ঘটে। উর্বশী বেশ সুখেই দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছিলেন, হটাৎ তাঁদের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। ৩১ মে ২০১৬ তারিখে উর্বশীর স্বামী অমিতের একটি বিপজ্জনক দুর্ঘটনা ঘটে। যাতে তিনি প্রচুর আঘাত পেয়েছিলেন, এবং তাকে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল।

অমিতের স্বাস্থ্যের মোটামুটি উন্নতি হলেও অবস্থা খুব ভালো ছিলো না। যার কারণে ডাক্তার তাকে বেডরেস্টের পরামর্শ দিয়েছিলেন। ফলে তিনি চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। জীবনের এই পর্বে উর্বশী ও তার পরিবারের অবস্থা পুরোপুরি পাল্টে যায়। পরে অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, জমানো সমস্ত টাকা ফুরিয়ে গিয়ে একে বাড়ে অসহায় হয়ে পরে উর্বশীর পরিবার। খাওয়া-দাওয়ার সমস্যা শুরু হয়, উর্বশী বাচ্চাদের নিয়ে এতটাই চিন্তিত ছিলেন যে সমাজ এবং পরিবারের কটূক্তি শুনেও, তিনি সমস্ত শৃঙ্খল ভেঙে গুরুগ্রামের ১৪ নম্বর সেক্টরে একটি হাতগাড়ি বসানোর কথা ভেবেছিলেন।

অবশেষে উর্বশী ছোলা ও কুলচার দোকান শুরু করেন। এখন তা খুব ভালোভাবে চলতে শুরু করেছে, সবাই উর্বশীর হাতের তৈরি কুলচা খেতে পছন্দ করতে শুরু করে। একসময় তাঁদের আর্থিক অবস্থা খুবই ভালো ছিলো। সে বলে যে তার বিয়ে হয়েছিল ধনী পরিবারে এবং চাকররাও কাজ করতো তাঁর বাড়িতে। অমিত নিজেও একটা ভালো কোম্পানিতে কাজ করতো, কিন্তু হঠাৎ তার দুর্ঘটনায় সবকিছু বদলে গেল।

পরিবর্তি পরিস্থিতির বাধ্যতায় ক্লান্ত হয়ে উর্বশীকে ছোলা কুলচার গাড়ি বসাতে হয়েছিলন । কিন্তু এই সব করা তার পক্ষে সহজ ছিল না, কারণ পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনরা এর অনেক বিরোধিতা করেছিলন। এবং তাকে অনেক কটূক্তি শুনতে হয়েছিল। যদি সে সময় হাল ছেড়ে দিত, তাহলে তাঁর সন্তানেদের ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট পেতে হত। এই সাহসী উদ্যোগে উর্বশী তাঁর পরিবারকে একটা স্বচ্ছল জায়গায় আনতে পড়েছিলেন।